বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ০২:৩৬ পূর্বাহ্ন
বাহুবল (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের বাহুবলে উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ খলিলুর রহমান তার অফিস সহায়ক হার্টের রোগী জামাল মিয়াকে চা আনতে দেরি করায় অশ্লিল ভাষায় গালিগালাজ ও এক পর্যায়ে তার চাকুরি খাওয়ার হুমকি দিয়ে তাকে স্বজোরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন চেয়ারম্যান সৈয়দ খলিল।
এর সাথে সাথেই জামাল অজ্ঞান হয়ে মাঠিতে লুটিয়ে পড়েন ঘটনাটি ঘটে গত ৫ ডিসেম্বর বিকাল ৩টার দিকে চেয়ারম্যানের অফিসেই।
এসময় পাশের মৎস্য অফিসের স্টাফদের সহযোগিতায় গুরুতর অবস্থায় জামালকে বাহুবল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে দুদিন চিকিৎসার পর তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে জামাল সেখানেই চিকিৎসাধীন।
উল্লেখ্য, অফিস সহায়ক জামাল কয়েক চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি স্ট্রোক করে দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ হলে পূনরায় কর্মস্থলে যোগদেন। এর পর থেকেই তার হার্ট দুর্বল অবস্থায় থাকে বলে তার চিকিৎসক জানিয়েছেন। এ ঘটনায় অফিস সহায়ক জামাল মিয়ার পুত্র জয়নাল মিয়া গতকাল ১০ ডিসেম্বর তার বাবার উপর অত্যাচারের প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
জামাল জানান, আমি চিকিৎসাধীন থেকেই অফিসে ডিউটি করে আসছি এবং এর পর থেকে আমি চেয়ারম্যানের মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছি। যে কোন অন্যায় আদেশ তথা ঠিকাদারদের কাছ থেকে ঘুষের টাকা লওয়ার জন্য বললে আমি অনিহা প্রকাশ করলেই আমাকে চেয়ারম্যান চাকুরি খাওয়ার ভয় দেখান, অশ্লিল ভাষায় গালিগালাজ করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ খলিলুর রহমান বলেন-অফিসে আসেন, চা খেয়ে যান কথা বলবো।
অফিস সহায়ককে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়া ও অশ্লিল আচরণের ঘটনায় স্থানীয় বিশিষ্ট নাগরিকদের মন্তব্য জানতে চাইলে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ আব্দুল হাই বলেন-অফিস সহায়কের সাথে যে ঘটনাটি ঘটেছে তা দুঃখজনক। আমি এর নিন্দা জানাই।
সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল কাদির চৌধুরী বলেন- ছোট কর্মচারীর সাথে দুর্ব্যবহার করা লজ্জাজনক এবং হীন মানসিকতা ছাড়া এমনটা করার কথা নয়।
জানতে চাইলে জেলা জাপা নেতা ও বাহুবল বাজার ব্যবসায়ী কমিটির নেতা এমএ জলিল তালুকদার বলেন- ঘটনাটি আমার পুরোপরি জানা নেই, তবে এরকম ঘটনা ঘটে থাকলে তা নিতান্তই অমানবিক এবং অপ্রত্যাশিত।
বাহুবলের সিনিয়র সাংবাদিক সাঈদ আহমেদ বলেন- এরকম ঘটনা ঘটে থাকলে তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
আজ রবিবার বিচার চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবের আবেদন করেন হাসপাতালে ভর্তি জামাল মিয়ার ছেলে জয়নাল মিয়া।