বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ০২:৫৬ পূর্বাহ্ন
শাহ্ মোস্তফা কামাল, শায়েস্তাগঞ্জ (হবিগঞ্জ) থেকে: ভয়াবহ উদ্বেগ উৎকণ্ঠার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে কিশোর ও যুবকদের মোবাইলফোনে বিভিন্ন গেইম খেলার আসক্তি। অনলাইন ও অফলাইনে খেলার উপযোগী বহু ধরনের গেইম পাওয়া যায় ইন্টারনেটে। কিছু কিছু গেইম খেলা হচ্ছে জুয়া খেলার আদলে। হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে দেদারসে চলছে মোবাইলফোনে জুয়া খেলার আসর। চায়ের দোকানে, গাছের ছায়ায় ও আড়ালে আবডালে আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে এই ইলেকট্রনিক জুয়ার আসর। বখে যাওয়া উঠতি বয়সের কিশোর যুবক ছাড়াও স্কুল কলেজ ফাঁকি দিয়ে জুয়া আসক্তির শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। এর ফলে যেমনি শিক্ষাদীক্ষায় পিছিয়ে পড়বে শিক্ষার্থীরা তেমনি বখে যাওয়া উঠতি বয়সের কিশোর যুবকেরা জড়িয়ে পড়তে পারে বিভিন্ন অপরাধে।
জানা যায়, এন্ড্রয়েড মোবাইলফোনে খেলার উপযোগী অগুনিত খেলা পাওয়া যায় ইন্টারনেটে। এরমধ্যে অন্যতম আসক্তিজনক খেলা হচ্ছে মোবাইলে লুডু খেলা। টাকা দিয়ে মোবাইলে লুডু খেলা সবচেয়ে আশংকাজনক ও আসক্তি সৃষ্টিকারী একটি খেলা। গ্রামের আনাচে কানাচের চায়ের দোকানে সকাল—সন্ধ্যা আড্ডার ছলে জমে উঠে মোবাইলে লুডু খেলা। শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশনের আশেপাশের পরিত্যক্ত রেল কোয়ার্টারে, রেলওয়ে ওভারব্রিজের উপরে এসব আসরের উপস্থিতি লক্ষনীয়। এলাকার সচেতন নাগরিকগন মোবাইলে লুডু খেলাটি খেলতে নিরুৎসাহিত করলেও এতে তেমন কিছু কাজ হয়না। মাঝে মাঝে পুলিশের উপস্থিতি টের পেলে তারা তড়িৎ গতিতে পালিয়ে যায়। কিছুক্ষণ বিরতি দিয়ে আবারো ফিরে আসে তাদের মোবাইলে লুডু খেলায়।
মোবাইলফোন আসক্তির কারণে সড়ক ও রেল দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা নেহায়েত কম নয়। পাবজী ও ফ্রি-ফায়ার নামের ইন্টারনেটভিত্তিক গেইম এর মধ্যে অন্যতম। এ গেইম খেলতে গিয়ে কত তাজা ফুল ঝরেছে অবেলায় এর হিসেব করতে গেলে বাকরুদ্ধ হতে হবে। মোবাইলফোনে বিভিন্ন গেইম খেলাকে যারা অর্থ আয়ের উৎস বানিয়েছে, যারা নগদ টাকা আয়ের জন্য এ খেলায় মত্ত হয়, তারাই সমাজের জঞ্জাল সৃষ্টিকারী একটি দল। এদের কারণেই সামাজিক অপরাধ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করছেন এলাকার সচেতন নাগরিক। এলাকার সচেতন নাগরিক জুনাইদ চৌধুরী বলেন, মোবাইলফোনের মাধ্যমে ছেলেপেলেরা খেলাধুলা করে এটা জানি। তবে এর মাধ্যমে জুয়া খেলা খুবই উদ্বেগের কারণ। মোবাইলফোনের মাধ্যমে জুয়া খেলা এখনই নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। তা না হলে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে মহামারীর মত ছড়িয়ে পড়বে সামাজিক অপরাধ। এলাকার কিশোর ও যুবসমাজকে উচ্ছন্নে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে প্রশাসনের সহযোগিতা আবশ্যক।