বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ০৯:১৩ পূর্বাহ্ন
করাঙ্গীনিউজ: ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় ডাক্তার এসকে ঘোষসহ চারজনকে কারাগারে পাঠিয়েছে উচ্চ আদালত। ভুল চিকিৎসায় নিহত রহিমা খাতুন নামের ওই মহিলার ভাতিজা রহমত আলী নামের ব্যক্তির দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ১৪ নভেম্বর উচ্চ আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করেন ডাক্তারসহ ওই চার ব্যক্তি।
উচ্চ আদালতের বিচারক মোঃ আবু তাহের, মোঃ সাইফুর রহমান ও মোঃ বাশির উল্লাহ ৩ জনের যৌথ বেঞ্চ জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে চারজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ প্রদান করেন।
আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী আব্দুল হাই।
ডাক্তার এস কে ঘোষ ছাড়াও মামলায় অন্য অভিযুক্তরা হলেন দি জাপন বাংলাদেশ হাসপাতাল এন্ড ডায়গনিক সেন্টারের মালিক এ কে আরিফুল ইসলাম, ওই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার জনি আহমেদ এবং একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সাবেক মেম্বার কাঞ্চন মিয়ার ছেলে হাবির হোসাইন।
উল্লেখ্য, গত ৯ সেপ্টেম্বর হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে রহিমা খাতুন (৫৫) নামের এক মহিলাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে দালাল তাবির হোসেন নামের এক ব্যক্তি তাদেরকে বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে নতুন বাস টার্মিনালের দি জাপান হসপিটালে নিয়ে যান। সেখানে যাবার পর কর্তৃপক্ষ বলে রহিমার অবস্থা খুবই খারাপ। জরুরি ভিত্তিতে অপারেশন করতে হবে। ওইদিনই ডাক্তার এস কে ঘোষ তার অপারেশন করেন।
এরপর তার অবস্থা আরও অবনতি হয়। কয়েকদিন থাকার পর কিছুটা সুস্থ হলে গত ১৩ সেপ্টেম্বর রিলিজ দেয়া হয়। বাড়িতে নিয়ে যাবার পর তার অবস্থার আরও অবনতি হয়। অপারেশনের স্থান দিয়ে রক্তক্ষরণ হতে থাকে।
একপর্যায়ে তাকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়। ধরা পড়ে জরায়ু কেটে ফেলা হয়েছে রোগিনীর। তাছাড়া তার পেটের মধ্যে থাকা দুটি টিউমারের বদলে একটি টিউমার অপারেশন করা হয়েছে। আরেকটি রয়ে গেছে। এমনকি তার একটি কিডনিও পাওয়া যায়নি। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের পর রহিমা গত ১৫ অক্টোবর বিকালের দিকে মারা যান। নিহত নারী হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বহুলা গ্রামের বাসিন্দা মৃত নুর আলীর স্ত্রী।
এরপর ডাক্তার এসকে ঘোষসহ দি জাপান বাংলাদেশ হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে কিডনি চুরি সহ নানান অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৩ অক্টোবর সদর উপজেলার বহুলা গ্রামের বাসিন্দা মোঃ ইউনুছ মিয়ার ছেলে রহমত আলী মৃত মহিলার ভাতিজা আদালতে মামলা দায়ের করেন।
এর এই প্রেক্ষিতে আমলি আদালত ১ এর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জাকির হোসেন হবিগঞ্জ সদর থানার অফিসার্স ইনচার্জ ওসিকে ডাঃ এস.কে ঘোষসহ ৪জনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলার রুজু করার নির্দেশ প্রদান করেন।