বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ০৬:২৫ অপরাহ্ন
করাঙ্গীনিউজ: সিলেট: পাঁচ দফা দাবিতে সিলেটে চলছে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট।সড়কে নেই কোন যানবাহন। তবে সিএনজি অটোরিক্সা চলছে।
সোমবার (২২ নভেম্বর) সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়েছে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন সিলেট বিভাগীয় কমিটি এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।
রোববার (২১ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত এক জরুরি বৈঠক থেকে এ ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত আসে।
সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর রাজন ধর্মঘটের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে স্মারকলিপি দেয় সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের বিভাগীয় কমিটির নেতারা। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে পাঁচ দফা দাবি আদায় হয়নি।
এ কারণে সোমবার সকাল ৬টা থেকে সিলেটে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রাখা হবে। তবে এই ধর্মঘটে পরীক্ষার্থীদের গাড়ি চলতে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তারা।
পরিবহন শ্রমিকদের দাবিগুলো হচ্ছে- সিলেট জেলা অটোটেম্পু, অটোরিকশা চালক শ্রমিক জোট (রেজি নং: ২০৯৭) এর ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা ও বিনা প্রতিদ্ধন্ধিতায় ঘোষিত কমিটি বাতিল করা এবং মনোনয়ন ফি বাবত আদায় করা টাকা ফেরত দেওয়া; সিলেটের আঞ্চলিক শ্রম দফতরের উপপরিচালককে প্রত্যাহার, সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের (রেজি নং: বি-১৪১৮) নেতাদের ওপর দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার, ট্রাফিক পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের সব হয়রানি বন্ধ, মেয়াদোত্তীর্ণ শেরপুর, শেওলা, লামাকাজী, শাহপরাণ ও ফেঞ্চুগঞ্জ সেতু থেকে টোল আদায় বন্ধ এবং চৌহাট্টাসহ নগরীর বিভিন্ন স্থানে সব ধরনের গাড়ি পার্কের ব্যবস্থা করা।
চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি নগরের চৌহাট্টায় অবৈধ মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড উচ্ছেদ নিয়ে সিসিকের কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই সংঘর্ষে সিসিক ও পুলিশের পক্ষ থেকে পৃথক মামলা দায়ের করা হয়। পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘট ও কঠোর কর্মসূচির আল্টিমেটামের প্রেক্ষিতে পরিবহন শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে সিসিক মেয়রের একটি সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে পরিবহন শ্রমিক নেতাদের সিসিকের পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া ও মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়।
সেই অনুযায়ী সিসিকের পক্ষ থেকে পরিবহন শ্রমিক নেতাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। কিন্তু সময়মতো আপসনামা প্রস্তুত না হওয়ায় আটজনের বিরুদ্ধে সিসিকের মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। ফলে ভেস্তে যায় আপোসের উদ্যোগ। এ সময়ের মধ্যে পরোয়ানাভুক্ত আসামিরা আদালতে হাজির না হওয়ায় সম্প্রতি পরোয়ানাভুক্ত আসামিদের সম্পদ ক্রোকের নির্দেশ দেন আদালত।
এরমধ্যে গত শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর ওমরাহ পালনে সৌদি আরব চলে যাওয়ায় সংকট আরো ঘনীভূত হয়।
শেষ পর্যন্ত আইনি ব্যবস্থার পরিবর্তে আন্দোলনের দিকে ঝুঁকছেন পরিবহন শ্রমিক নেতারা।