• Youtube
  • English Version
  • বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ০৯:৪৬ অপরাহ্ন

করাঙ্গী নিউজ
স্বাগতম করাঙ্গী নিউজ নিউজপোর্টালে। ১৫ বছর ধরে সফলতার সাথে নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশন করে আসছে করাঙ্গী নিউজ। দেশ বিদেশের সব খবর পেতে সাথে থাকুন আমাদের। বিজ্ঞাপন দেয়ার জন‌্য যোগাযোগ করুন ০১৮৫৫৫০৭২৩৪ নাম্বারে।

আজ ঐতিহাসিক চা শ্রমিক দিবস

  • সংবাদ প্রকাশের সময়: বৃহস্পতিবার, ২০ মে, ২০২১

করাঙ্গীনিউজ: আজ ২০মে ঐতিহাসিক ‘চা শ্রমিক দিবস’। ১৯২১ সালের আজকের এইদিনে নিজ জন্মভুমিতে ফিরতে চাওয়ার অপরাধে শত শত নিরিহ চা শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করে বৃটিশ সৈন্যরা। অথচ সেই নির্মম ঘটনার শতবছর পুর্ণ হলেও দিবসটিকে সরকারিভাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। চা শ্রমিকদের দাবি, ২০মে কে ‘চা শ্রমিক দিবস’ হিসেবে সরকারিভাবে স্বীকৃতি দেয়ার।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৮৫৪ সালে সিলেটের মালিনীছড়া চা বাগানে পরীক্ষামূলক চা চাষ শুরু করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। সে সময় চা বাগান তৈরি, পরিচর্যার জন্য ভারতের আসাম, উড়িষ্যা, বিহার, উত্তর প্রদেশসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে দরিদ্র শ্রমিকদের প্রলোভন দিয়ে এ অঞ্চলে নিয়ে আসা হয়। বিশাল পাহাড় ও বন-জঙ্গল পরিষ্কার করে চা বাগান করতে গিয়ে হিংস্র পশুর আক্রমণে অনেক শ্রমিকের মৃত্যু হয়। তবুও সুখের আশায় জঙ্গল পরিস্কার থেকে পিছিয়ে যায়নি শ্রমিকরা।

এত পরিশ্রম করার পরও শোষন, শাসন আর নির্যাতনের স্বীকার হতে হতো তাদের। বছরের পর বছর মাটি আখড়ে পরে থাকলেও ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। অব্যাহত নির্যাতনের এক পর্যায়ে প্রতিবাদ করে বসেন চা শ্রমিকরা। তৎকালীন চা শ্রমিক নেতা পন্ডিত গঙ্গাচরণ দীক্ষিত ও প-িত দেওসরন ‘মুল্লুকে চল’ (নিজ দেশে চল) আন্দোলনের ডাক দেন। তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে একত্রিত হন সিলেট অঞ্চলের প্রায় ৩০ হাজার চা শ্রমিক।

১৯২১ সালের ২০মে বাগান ফেলে সিলেট থেকে পায়ে হেঁটে নিজ দেশ ভারতে রওনা দেন চা শ্রমিকরা। এ সময় দীর্ঘপথ পায়ে হেঁটে যাওয়ার কারণ ও খাবারের অভাবে পথেই অনেক চা শ্রমিক শিশু ও বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। এক পর্যায়ে তারা জাহাজে চড়ে ভারত ফেরার জন্য চাঁদপুর মেঘনা ঘাটে পৌঁছান। এ সময় তাদের ফেরাতে মেঘনা ঘাটে চা শ্রমিকদের উপর নির্বিচারে গুলি চালায় ব্রিটিশ সৈনরা। গুলিতে মারা যান শত শত চা শ্রমিক নারী-পুরুষ। তাদের মরদেহ ভাসিয়ে দেয়া হয় মেঘনা নদীতে। অনেক শ্রমিক প্রাণে বাঁচতে আবারও বাগানে ফিরে আসেন।

এই ঘটনার পর থেকে ২০মে কে ‘চা শ্রমিক দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছেন চা শ্রমিকরা। তারা দাবি জানিয়েছে ছিলেন ২০ মে কে যেন ‘চা শ্রমিক দিবস’ হিসেবে সরকারি স্বীকৃতি দেয়া হয়। কিন্তু আশায় আশায় শত বছর ফেরিয়ে গেলেও তাদের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘চা শ্রমিকদের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে এদেশে এনে স্বল্প মজুরীতে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করানো হয়। তাই শ্রমিকরা নিজ মুল্লুকে ফিরে যেতে চেয়েছিল। নিজ দেশে ফিরতে চাওয়ার অপরাধে শতশত চা শ্রমিককে পাখি মতো গুলি করে হত্যা করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে চা শ্রমিকরা তীর-ধনুক নিয়ে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে। এ সময় দেশের জন্য অনেক চা শ্রমিক জীবনও দিয়েছে। কিন্তু চা শ্রমিকরা এখনও এ দেশে পরবাসীর মতো আছে। তাদের নেই ভূমির অধিকারও। আমাদের দাবি, ২০ মে কে ‘চা শ্রমিক দিবস’ হিসেবে সরকারি স্বীকৃতি দেয়া হোক।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ