শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ০২:৩১ পূর্বাহ্ন
এম,এ,আহমদ আজাদ, নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) থেকে: এখন দুভোর্গের অপর নাম নবীগঞ্জ উপজেলার রুদ্রগ্রাম-নবীগঞ্জ সড়ক। সড়কটি সংস্কারে ৮কোটি টাকা ব্যয় হলেও এখন গর্ত ও খানাখন্দে ভরপুর হয়ে পড়েছে । ১০ কিলোমিটার অংশজুড়ে এই সড়কের বেহাল দশা। সড়কের অধিকাংশই খানাখন্দ আর বড় গর্তে ভরা। সামান্য বৃষ্টি হলেই গর্তে পানি জমে যায়। এতে করে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে পথচারী, যাত্রীসাধারণসহ পরিবহন চালকদের। এলজিইডি বিভাগের সঠিক তদারকির অভাবে এমন দশা বলে সচেতন মহলের দাবি। ঠিকাদার ও প্রকৌশল বিভাগের ভাগ বন্টনের কাজে এক বছর না যেতেই চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এই সড়কে চলাচল কারী লক্ষাধিক মানুষ।
উল্লেখ্য- ২০২০ সালে নবীগঞ্জ-রুদ্রগ্রাম সড়ক ৮ কোটি ৫১ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সংস্কার কাজ করে হবিগঞ্জের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মের্সাস হাসান বিল্ডার্স। নিম্নমানের মালামাল দিয়ে এ সড়কে কাজ করায় সড়ক নির্মাণের ১ মাসের মাথায় ভেঙে যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়- ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আইনগাও থেকে নবীগঞ্জ শহরের একমাত্র বাইপাস সড়ক হওয়ায় পানিউমদা, গজনাইপুর, দেবপাড়া ও বাউসা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষের চলাচলের অবলম্বন এ সড়ক। এই সড়ক দিয়ে শাহ তাজ উদ্দিন কুরেশী (রহঃ) উচ্চ বিদ্যালয়, ধুলচাতল তাজিয়া মোবাশ্বীরিয়া আলিম মাদ্রাসা, দিনারপুর কলেজ, দিনারপুর উচ্চ বিদ্যালয়,দিনারপুর দাখিল মাদ্রাসা, পানিউমদা রাগীব-রাবেয়া স্কুল এন্ড কলেজসহ অসংখ্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সরকারি চাকুরীজীবি, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার লোকজনকে চলাচল করতে হয়। একমাত্র বাইপাস সড়ক হওয়ায় ট্রাক, ট্রাক্টর, অটোভ্যান, ব্যাটারী চালিত অটোরিকশা, সিএনজি অটোরিকশা, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস প্রতিনিয়ত চলা-চল করলেও অনেক যানবাহন ইতোমধ্যেই কমে গেছে। ফলে যানবাহনের উপর নির্ভরশীল কলেজ, স্কুল ও মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থী শিক্ষক, ব্যবসায়ীসহ যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। রাস্তাটি সংস্কার কাজে নানা অনিয়ম হওয়ায় বর্তমানে কোথাও কোথাও পাকার চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায়না। নবীগঞ্জ-রুদ্রগ্রাম ১০ কিলোমিটার সড়কের আইনগাঁও, ভরপুর, চৌধুরী বাজার, বাউসা বাজার, বাউসা পয়েন্ট, বাউসা মাদ্রাসা পয়েন্ট, নাদামপুর মাদ্রাসা পয়েন্ট, রিফাতপুর, শিবপাশাসহ প্রায় ৮ কিলোমিটার সড়কজুড়ে কার্পেটিং উঠে ভেঙে গিয়ে বড়-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। একেকটা গর্ত মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। এতে জনমনে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তা খানা-খন্দে পানিতে ভরে যায়। কাঁদামাটি-পানি অতিক্রম করে যানবাহন চলাচল করতে হয়। লাখো মানুষ নানান প্রতিকুলতা আর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করতে হচ্ছে এ সড়কে।
বাশডর গ্রামের মুসা তালুকদার বলেন- নবীগঞ্জ-রুদ্রগ্রাম সড়কের বেহাল অবস্থা, একদিন নবীগঞ্জ গেলে বাড়িতে এতে শরীর ব্যথার ঔষধ খেতে হয়। দ্রুত সংস্কার করা হলে জনসাধারণ অনেক উপকৃত হবে।
কলেজ শিক্ষক মোশারফ আলী মিঠু বলেন- বিভিন্ন কাজে উপজেলা সদরে যেতে হলে নবীগঞ্জ-রুদ্রগ্রাম সড়ক হয়ে যেতে হয়, বৃষ্টি হলে বড় বড় গর্তে পানি জমে সড়ক সাগরে পরিণত হয়। মানুষের খুবই দুর্ভোগ হয়। নি¤œমানের কাজ হওয়ায় সড়ক সংস্কারের ১ মাস পর থেকে ভাঙন শুরু হয়। এখন একেকটা ভাঙন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।
সিএনজি অটোরিকশা চালক হাবিব মিয়া জানান- সড়কটি পুরোপুরি ভেঙে গেছে, কেউই সংস্কার করার উদ্যোগ নিচ্ছেনা, ভাঙা সড়ক দিয়ে গাড়ি চালানোর কারণে কয়েকদিন পর পর সিএনজি অটোরিকশা নষ্ট হয়ে যায়, গাড়িতে কাজ করাতে হয়। দ্রুত সংস্কার হলে আমরাও উপকৃত হবো।
এ প্রসঙ্গে নবীগঞ্জ উপজেলা এলজিইডি কার্যালয়ের প্রকৌশলী জোনাইদ আলম বলেন- ৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নবীগঞ্জ-রুদ্রগ্রাম সড়ক সংস্কারের জন্য ইতিমধ্যে হবিগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে ঢাকায় প্রাক্কলন অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। অনুমোদনের পর টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দ্রুত কাজ শুরু হবে।