বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ০২:২৫ অপরাহ্ন
করাঙ্গীনিউজ:
পাহাড়ি ঢলে নদী ফুলেফেঁপে উঠতে থাকায় সিলেটে বন্যা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া তিস্তার পানিও বাড়ছে। একইভাবে পানি বাড়ার খবর পাওয়া গেছে সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার এবং সুনামগঞ্জের নদীগুলোতেও।
সিলেট থেকে আমাদের প্রতিনিধি জানান: ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটে ফুলেফেঁপে উঠছে নদ-নদী।
গতকাল সবকটি নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল। এর মধ্যে সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বাকি নদীগুলোর পানিও বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছিল। পানি বৃদ্ধির কারণে সিলেটের কিছু কিছু এলাকার নিম্নাঞ্চল জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
বৃষ্টিপাত ও ঢল অব্যাহত থাকলে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ ছাড়া গেল ২৪ ঘণ্টায় একই নদীর সিলেট পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। কুশিয়ারা নদীর পানি গেল ২৪ ঘণ্টায় আমলসীদ পয়েন্টে ২৩ সেন্টিমিটার, শেওলা পয়েন্টে ৪৬ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৫৩ সেন্টিমিটার ও শেরপুর পয়েন্টে ৫৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।
সিলেটের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গতকাল সকাল ৬টা থেকে পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ৯২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। লালমনিরহাট : উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও কয়েকদিন থেকে থেমে আসা বৃষ্টিতে বাড়তে শুরু করেছে তিস্তা নদীর পানি। গতকাল সকাল ৬টা ও ৯টায় ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এর ফলে ভাটি এলাকায় বাড়ছে পানির চাপ। প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল।
মৌলভীবাজার : গত দুই দিনের টানা বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ধলাই নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। বৃদ্ধি পাওয়া পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও কমলগঞ্জে কয়েকটি ইউনিয়নে ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের ১০ স্থান ঝুঁকিপূর্ণ। উজানে ভারতীয় পাহাড়ি এলাকায় ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ধলাই নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করে বন্যার আশঙ্কা করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড ও এলাকাবাসী।
হবিগঞ্জ : কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে হবিগঞ্জে বেড়ে চলেছে নদ-নদীর পানি। গতকাল বিকাল ৩টা পর্যন্ত খোয়াই, কালনি, কুশিয়ারা ও ধলেশ্বরীসহ সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা ছুঁইছুঁই করছিল। যদিও নদীগুলোর কোনো স্থানেই বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি পানি। তবে বৃষ্টি হলেই ফুঁসে উঠছে পানি, বাড়ছে পানির গতিবেগ। হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, বৃষ্টিপাত এভাবে অব্যাহত থাকলে পানি দ্রুত বিপৎসীমা অতিক্রম করবে।
হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী শামিম হাসনাইন মাহমুদ জানিয়েছেন, খোয়াই নদীর বাল্লা পয়েন্টে বিপৎসীমার ২১.০৯, শায়েস্তাগঞ্জ পয়েন্টে ৯.০২, মাছুলিয়া পয়েন্টে ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া কুশিয়ারা নদীর শেরপুর পয়েন্টে ৯.৯২, মার্কুলি পয়েন্টে ৫.৫২ ও আজমিরীগঞ্জ পয়েন্টে ৪.৫৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুনামগঞ্জ : কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে জেলার নদ-নদী ও হাওরের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সুরমা, যাদুকাটা, রক্তি, বৌলাই, চেলাসহ জেলার প্রধান প্রধান নদীর পানি বেড়েছে। সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার নিচে থাকলেও ছাতক পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার ওপরে রয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকলে জেলার নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। যদিও এখন পর্যন্ত লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেনি।