বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ০৪:৩৫ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ: সঠিক মাপ আর রঙে জেলার সবকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রদান করা হয় লাল সবুজের বাংলার জাতীয় পতাকা। কেবল পতাকা প্রদান করাই নয়, বাঙালির জাতীয় জীবনে সবুজ আয়তক্ষেত্রের মাঝে লাল বৃত্তের এ পতাকার গুরুত্ব শিক্ষার্থীদের মাঝে তুলে ধরতে পতাকা নিয়ে উপস্থাপন করা হয় প্রবন্ধ। আয়োজন করা হয় পতাকার গুরুত্ব ও উত্তোলন নিয়ে আলোচনা সভা। সংযোগ ঘটানো হয় জেলার সকল শিক্ষার্থীদের। যে অনুষ্ঠানের নাম দেয়া হয় ‘ জাতীয় পতাকা উৎসব’। দেশের এ ব্যতিক্রমী উৎসবটি পালিত হয়েছে সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলায়।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে হবিগঞ্জ জেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ উৎসবে জেলার নয়টি উপজেলার ১ হাজার ৫শত ৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রধান করা হল জাতীয় পতাকা। সঠিক মাপ ও রংয়ে জাতীয় পতাকা জেলার সবকটি সরকারী বেসরকারি কলেজ, স্কুল, মাদরাসা, কিন্ডারগার্ডেন ও ইবতেদায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ উপজেলা মিলনায়তন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত করা হয়। ব্যতিক্রমী আয়োজন করেন হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ।
এসময় প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের হাতে একটি করে পতাকা তুলে দেয়ার পাশাপাশি অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল ও শিক্ষার্থীদের হাতেও দেয়া হয় ছোট আকারের পতাকা। ফলে সে মুহূর্তটি পরিণত হয় লাল সবুজের পতাকার মায়াময় মুহূর্ত।
পতাকা উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ। অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকার ইতিহাস ও তাৎপর্যেও উপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিলেট শাহ জালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জহিরুল হক শাকিল।
গৌরী রায় এর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়া, বিশেষ অতিথি ছিলেন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা, হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মিজানুর রহমান মিজান, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মো. মোহাম্মদ আলী পাঠান, অধ্যক্ষ জাহানারা খাতুন, প্রেসক্লাব সভাপতি হারুনুর রশীদ চৌধুরী, তাহমিনা বেগম গিনি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বিকেজিসি সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সমবেতে কন্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করে।
প্রধান অতিথি মাহমুদুল কবীর মুরাদ বলেন, আমি আমার দায়িত্ববোধ থেকে এ আয়োজন করেছি। আমার অর্থনৈতিক ভাবে স্বাভলম্বি হচ্ছি। মুক্তিযুদ্ধেও চেতনায় দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা অনেকে ইচ্ছা ও অনিচ্ছাকৃত ভাবে জাতীয় পতাকা অবমাননা করছি। বিগত জেলা প্রশাসক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও এ ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেছেন। আমি চাই আমাদের নতুন প্রজন্ম জাতীয় পতাকার সঠিক ইতিহাস জানুক। জাতীয় পতাকাকে সম্মান দিতে শিখুক। অচিরেই হবিগঞ্জ জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকার উপর কুইজ ও বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হবে বলেও জানান তিনি।
মুল প্রবন্ধে প্রফেসর ড. জহিরুল হক শাকিল বলেন, আমাদের জাতীয় ঐক্য ও আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন জাতীয় পতাকা। আমাদের জাতীয় পতাকার বাংলাদেশের ইতিহাসে ধারক ও বাহক। দীর্ঘ সংগ্রাম ও ত্যাগ তিথিক্ষার যেমন আমাদের পতাকায় ফুটে উঠেছে তেমনি আমাদের পরিবেশ, প্রকৃতি শুভ্রতার পরিচয় পাওয়া যায়।
অনুষ্ঠান শেষে প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ হবিগঞ্জ পৌর এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের হাতে জাতীয় পতাকা তুলে দেন।