বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ০২:৪৫ অপরাহ্ন
করাঙ্গীনিউজ: টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে হবিগঞ্জ শহরে তীব্র জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। শহরের প্রধান প্রধান সড়কসহ পাড়া মহল্লার সড়ক গুলো ডুবে কোথাও হাটু পানি আবার কোথাও কোমড় পানি পর্যন্ত হয়েছে। এছাড়াও শহরের নিচু এলাকার অধিকাংশ বাসা বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি উঠে গেছে। ফলে নষ্ট হয়ে গেছে বাসা বাড়িতে থাকা আসবাবপত্রসহ দোকান পাঠের মালামাল। বাসা বাড়ি দোকান পাঠ ছাড়াও শহরের গুরুত্বপূর্ণ অফিস ও সরকারি স্থাপনাগুলোতে উঠেছে বৃষ্টির পানি। ফলে চলাচলে চরম দূর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।
শুক্রবার (৬ অক্টোবর) সাপ্তাহিক বন্ধের দিন হওয়ায় তেমন দূর্ভোগ পোহাতে হয়নি সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারী ও স্কুল কলেজ গামী শিক্ষার্থীদের। তবে দূর্ভোগের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে বিদ্যুৎ।
এর আগে বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাত থেকেই শহরে উধাও হয়ে যায় বিদ্যুৎ। ফলে শুক্রবার দিনভর বিদ্যুৎ না থাকায় ভোগান্তির মাত্রা চরম আকার ধারণ করে। একই সাথে মোবাইল ফোনে নেটওয়ার্ক না থাকায় শহরের লোকজনের সাথে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা। যার কারণে একদিকে, জলাবদ্ধতা অন্যদিকে বিদ্যুৎ ও নেটওয়ার্ক না থাকায় ত্রিমুখী সংকটে পড়ে শহরবাসি।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকে থেকেই হবিগঞ্জ শহরসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে টানা বৃষ্টিপাত শুরু হয়। শুক্রবার ভোর থেকে বাড়তে থাকে বৃষ্টির তীব্রতা। শুক্রবার রাত ৮টা পর্যন্ত চলা টানা বৃষ্টিপাতের কারণে বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায় শহরের অধিকাংশ রাস্তা-ঘাট ও বাসা বাড়ি। এর মধ্যে শহরের সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গন, সদর থানা মোড়, জেলা প্রশাসকের বাস বভন প্রাঙ্গন, বেবিস্ট্যান্ড মোড়, মোহনপুর সিএনজি স্ট্যান্ড, অনন্তপুর, শায়েস্তানগর পানি ভবন এলাকা, গণপূর্ত কোয়ার্টার, টাউন মডেল স্কুল, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন, সিনেমা হল রোড, নিউ মুসলিম কোয়ার্টার, বিদ্যুত অফিস, শ্যামলী, পুরান মুন্সেফী, আহসানিয়া মিশন, চিড়া কান্দি, শংকর মুখ ও চৌধুরীবাজার ও যশেরআব্দা এলাকায় তীব্র জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পুরো দিন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় দিনেরও বেলায়ও অনেক যানবাহনকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে দেখা গেছে।
ভূক্তভোগীরা জানান, টানা বৃষ্টির কারণে দোকান পাঠ খোলার সুযোগই পাইনি। দোকন পাঠ খোলা তো দূরের কথা রাস্তা ঘাট ডুবে এখন বাসা বাড়িতেও পানি উঠতে শুরু করেছে। ফলে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আমাদের।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, শহরের প্রধান সড়কের পাশ দিয়ে বড় ড্রেন নির্মাণ করা হলেও পাড়া মহল্লার ভেতরের ড্রেন গুলোর অবস্থা একেবারেই নাজুক। অনেক স্থানেই আবার কোন ড্রেন নির্মানই হয়নি। ফলে প্রধান সড়কে তেমন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি না হলেও অলিগলিতে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে চরম দূর্ভোগে পড়ছেন সাধারণ বাসিন্দারা। যদিও সচেতন মহল মনে করছেন, শুধু ড্রেন নির্মাণ নয়, পরিকল্পনা অনুযায়ী টেকসই পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা গড়ে না তুলা ও পুকুর নদী বা জলাশয় অবৈধ ভাবে দখল ও ভরাট করার কারণেই এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তাই এর থেকে উত্তরণে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে টেকসই ড্রেনেজ ব্যবস্থা খুবই জরুরি।
হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আতাউর রহমান সেলিম বলেন, পরিকল্পিত ভাবে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করে এ সমস্যার সমাধান করা হবে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি ড্রেনের কাজ চলমান রয়েছে। তবে, যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে নালা ও জলাশয় ভরাট হয়ে জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে।