বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ০২:৪৭ পূর্বাহ্ন
মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের মাধবপুরে এক শিক্ষককে সমাজচ্যুত ও একঘরে করে রেখেছে স্থানীয় মাতবররা (সর্দার)। পরে তাকে হত্যার হুমকিও দেয়া হয়েছে।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জগদীশপুর জেসি উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক ফারুক আহাম্মেদের বাড়িতে কেউ প্রবেশ করলে তাকেও শাসন করা হয়। সর্দারদের ভয়ে কেউ ওই শিক্ষকের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে পারছে না। শুধু তাই নয়; ওই শিক্ষকের গৃহনির্মাণ, বিদ্যুৎসংযোগ ও পানি চলাচলে বাধা দিয়ে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে।
নিজেদের গড়া সার্চ কমিটি নীতিমালার মাধ্যমে চলছে মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুর গ্রামের সামাজিক বিচার আচার। ওই এলাকায় বাইরের কোনো মানুষ বাড়িঘর করলে তাদের সার্চ কমিটির নীতিমালা মেনে চলতে হয়।
সার্চ কমিটির রোষানলে পড়েছেন মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুর জেসি উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক কাজী ফারুক আহাম্মেদ।
শিক্ষক ফারুক আহাম্মেদের ওপর এমন অমানবিক আচরণের কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্রদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
ক্ষুব্ধ শিক্ষকরা জানান, জগদীশপুর গ্রামে বাহির থেকে এসে জমি কিনে কোনো লোক বাড়িঘর করতে গেলে তথাকথিত সার্চ কমিটির লোকজন নানাভাবে নির্যাতন করতে থাকে।
ক্ষুদ্ধ শিক্ষকরা আরও জানান, জগদীশপুর জেসি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ১০ শতক জমি কিনে বসতঘর নির্মাণ করতে গেলে একই গ্রামের বাবুল মিয়া ও রানা মিয়া বাধা দিয়ে সীমানা প্রাচীর ভেঙে ফেলে। বিদ্যুৎ ও পানি চলাচলে বাধা দেন। রানা ও বাবুলের পক্ষ নিয়ে জগদীশপুর গ্রামের সমাজপতিরা শিক্ষক ফারুক আহাম্মদকে সমাজচ্যুত করে একঘরে করে রেখেছে।
এ ঘটনায় শিক্ষক ফারুক আহাম্মেদ আইনের প্রতিকার চেয়ে মাধবপুর থানায় জগদীশপুর গ্রামের বাবুল মিয়া, রানা মিয়ার নামে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এ ব্যাপারে জগদীশপুর ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি সালিশে নিষ্পত্তির জন্য উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কিন্তু শিক্ষক সালিশে উপস্থিত না হয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন।
সার্চ কমিটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গ্রামে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য এ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মাধবপুর থানার এসআই লিটন ঘোষ এমন অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, উভয়পক্ষকে ডেকে নিয়ে আলোচনার ভিত্তিতে বিরোধ নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।