মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ১২:২৯ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ ॥ হবিগঞ্জে বানিয়াচঙ্গ উপজেলার দৌলতপুর গ্রাম সংলগ্ন হাওরের বেরীবাধ কেটে ড্রেন নির্মাণকে কেন্দ্র করে এলাকার কৃষকদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এতে যে কোন সময় সংঘর্ষের আশংকা করছেন এলাকাবাসী।
সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই দৌলতপুর গ্রামের হাওরের বেরীবাধ কেটে অপরিকল্পিত ভাবে সেচ প্রকল্পের ড্রেন নির্মাণ পরিকল্পনা করে আসছিল দৌলতপুর গ্রামের শেখ আমির হোসেন, মুমিনুল ইসলাম, রফিক মিয়া, কবির আহমেদসহ তাদের আরো কয়েকজন ব্যবসায়ী পার্টনার।
এ বিষয়টি অবগত হয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে মোহাম্মদ তাওহিদুল ইসলামের কাছে মৌখিক ভাবে অভিযোগ করেন। এদিকে গতকাল সকালে শেখ আমির হোসেন গংরা বেরীবাধ কেটে ড্রেন নির্মাণ করতে গেলে এলাকার শত শত কৃষকরা গিয়ে বাধা দেন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে মার্কুলী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জসহ একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং বেরীবাধ কাটা বন্ধ করেন।
স্থানীয় কৃষকদের দাবি হলো নদীর পানি চলাচলে মূল খাল দিয়ে আসলে কৃষকরা কোন প্রকার খরচ ছাড়াই জমি চাষ করতে পারেন। কিন্ত শেখ আমির হোসেন গং নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য ও জমিগুলোতে সেচ মেশিনের মাধ্যমে পানি নিয়ে টাকা উত্তোলনের চেষ্ঠা করছেন। বেরীবাধ কেটে ড্রেন নির্মাণ করলে যেমন বাধের ক্ষতি হবে, তেমনি কৃষকরা জমি চাষ করতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এ অবস্থায় কৃষকরা বেরীবাধ কেটে ড্রেন নির্মাণ না করার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান।
এ ব্যাপারে দৌলতপুর গ্রামের কৃষক লুৎফুর মিয়া জানান, সরকার এলাকার কৃষকদের জমিন রক্ষার জন্য বেরীবাধ নির্মাণ করেছেন। কিন্তু ওই বেরীবাধ কেটে আমির হোসেন গং সেচ প্রকল্পের ড্রেন নির্মাণ করতে চান। যাহা সম্পূর্ণ অবৈধ। তিনি আরো বলেন-আমাদের এলাকার জমি চাষের জন্য সেচ প্রকল্পের কোন প্রয়োজন নেই। তারা নিজেদের ব্যবসায়িক স্বার্থেই সেচের মেশিন বসাতে চাচ্ছেন। তাই আমরা কৃষকরা বেরাবাধ কেটে ড্রেন নির্মাণে বাধা দিয়েছি।
এ বিষয়টি আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে অবনতি না হয়, পুলিশকে অবগত করেছি। এ ব্যাপারে এসআই মনি সাদ্ধ জানান, বেরীবাধ কেটে ড্রেন নির্মাণকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যেই উত্তেজনা ছিল। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি এবং ড্রেন নির্মাণ বন্ধ রেখেছি। কাগজপত্রে সেচ প্রকল্প এখানে আছে কি না এ বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তাওহিদুল ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে এলাকার কৃষকরা আমার কাছে মৌখিক ভাবে অভিযোগ করেছেন। আমরা বিষয়টি সরে জমিনে দেখে সিদ্ধান্ত নেবো।
শনিবার (৩ নভেম্বর) উপ-সহকারী প্রকৌশলী ঘটনারস্থল পরিদর্শন করবেন বলে তিনি জানান। এরপরই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ দিকে বেরীবাধ কেটে ড্রেন নির্মাণের ঘটনায় দৌলতপুর গ্রামে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এতে যে কোন সময় সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে।