মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ০৩:৩৪ পূর্বাহ্ন
হবিগঞ্জ (চুনারুঘাট) প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার রানীগাও ইউনিয়নের প্রবাসী কদ্দুছ হত্যা মামলায় ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদকসহ দুই ইউপি মেম্বারকে আসামী করে ৭ জনের নামে আদালতে চার্জশীট প্রদান করা হয়েছে।
প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে আওয়ামীলীগ নেতা ও ইউপি সদস্যের অবৈধ সম্পর্কের কারণেই
পরিকল্পিত ভাবে এ হত্যাকান্ড ঘটেছে বলে চার্জশীটে বলা হয়। সিআইডির দীর্ঘ
তদন্ত শেষে আওয়ামীলীগ নেতা ও দুই ইউপি সদস্যকে এ মামলায় চার্জশীপভুক্ত করা হয়। সম্প্রতি সিআইডি আদালতে চার্জশীট দাখিল করে।
উপজেলার রানীগাও ইউনিয়নের আতিকপুর গ্রামের প্রবাসী আব্দুল কদ্দুছ ২০১৮ সালে বিদেশ থেকে দেশে ফিরে তার স্ত্রী মাফিয়া খাতুনের নামে পাঠানো ১০/১৫ লাখ টাকার হিসেব চাইলে স্বামীর স্ত্রীর মধ্যে দ্বদ্ধ দেখা দেয়। এনিয়ে কদ্দুছ মিয়ার
স্ত্রী মাফিয়া খাতুন ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর হবিগঞ্জ নারী শিশু আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
এ মামলা আপোষ করে দেওয়ার কথা বলে ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক, আঃ সালাম ও ছোবহান মিয়াসহ কয়েকজন ২০১৮ সালের ৩ নভেম্বর রাতে আঃ কদ্দুছকে সোবহান মিয়ার বাড়ি পারকুল
বস্তিতে ডেকে নেয়। সেখানে তাকে পুর্বপরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে তার লাশ একটি পেয়ারা গাছে ঝুলিয়ে রাখে। পরদিন খবর পেয়ে চুনারুঘাট থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য হবিগঞ্জ প্রেরণ করে।
এনিয়ে নিহতের ভাই হুছন আলী বাদী হয়ে আদালতে সোবহানসহ ৫ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেন।
চুনারুঘাট থানা পুলিশ এ মামলা তদন্ত করে নিহত কদ্দুছ স্ত্রীর সাথে টাকা নিয়ে দ্বন্ধের কারণে আত্বহত্যা করেছে এবং স্ত্রী মাফিয়ার বিরোদ্ধে ৩০৬ ধারায় অপরাধ প্রমানিত হয়েছে বলে আদালতে রিপোর্ট প্রদান করে। এতে বাকী ৪ আসামীকে খালাস দেন।
এনিয়ে বাদী হুছন আলী আদালতে নারাজী প্রদান করলে বিজ্ঞ আদালত মামলাটি পুন:তদন্তের নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে এ মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় হবিগঞ্জের সিআইডি পুলিশ। সিআইডির তদন্তে বেরিয়ে আসে আসল রহস্য।
প্রবাসী কুদ্দুছের স্ত্রীর সাথে ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল
মালেক এর অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে বলে জেনে যান কদ্দুছ। এ কারণে ইউপি সদস্য অঃ মালেকের পরামর্শে মাফিয়া খাতুন তার স্বামী কদ্দুছ মিয়ার বিরোদ্ধে আদালতে মামলা করেনও বলে তদন্তে বেরিয়ে আসে।
এ মামলা আপোষে মীমাংসা করে দিবেন
বলে ইউপি সদস্য আঃ মালেক ও আব্দুল হান্নানের পরামর্শে আঃ সোবহান ও আঃ সালাম নিহত কদ্দুছ মিয়াকে ঘটনার দিন পারকুলবস্তি নিয়ে যান।
তদন্তে ইউপি সদস্য আঃ মালেকের সাথে কদ্দুছের স্ত্রী মাফিয়া খাতুনের অবৈধ সম্পর্কের কারণে আঃ মালেকের পরামর্শক্রমে সোবহান, সালামসহ অন্যান্য আসামীরা আঃ কদ্দুছকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ গাছে ঝুলিয়ে রাখে বলে বলা হয়। এছাড়া কদ্দুছকে হত্যার পর যেভাবে গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল তাতেও প্রমানিত হয় তাকে হত্যাকরে গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
চার্জশীটে বলা হয়, মামলার সার্বিক তদন্তে ও স্বাক্ষপ্রমানে ও পারিপার্শিকতার আলোকে সুরতহাল রিপোর্ট ও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ও ভিকটিমের ছবি পর্যালোচনায় তাকে পরিতল্পিত ভাবে হত্যার কারণে ইউপি সদস্য ও আওয়ামীলীগ নেতা আঃ মালেক, ইউপি সদস্য আব্দুল হান্নান ও নিহত কদ্দুছ মিয়ার স্ত্রীর মাফিয়া খাতুনসহ ৭ জনকে আসামীভুক্ত করা হয়।