মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ০৯:৫২ পূর্বাহ্ন
শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে পাঁচ বছরের শিশু রিমন গড়কে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার রাতে খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে উপজেলার কালীঘাট ইউনিয়নের বিলাসছড়া চা বাগানের আবদুল হানিফের ছেলে ইউনুস মিয়াকে (২২) আটক করে পুলিশ।
তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রাথমিকভাবে তিনি খুনের কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেন। পরে বুধবার (১ জুলাই) বিকালে মৌলভীবাজার আদালতে তাকে প্রেরণ করলে খুনের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি।
মঙ্গলবার বিকালে তিনি ওই চা বাগানের ঝোঁপের মধ্যে শিশু রিমন গড়কে তার বাবার ওপর প্রতিশোধ নিতে হত্যা করে লাশ ফেলে রাখেন।
জানা যায়, ইউনুস মিয়া ও উপজেলার সিন্দুর খান ইউনিয়নের আল আমিনকে তিন মাস আগে নিহত রিমনের বাবা শিবু গড়ের অটোরিকশার ব্যাটারি চুরির অপরাধে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন স্থানীয় ইউপি মেম্বার।
কিন্তু আল আমিন জরিমানার পুরো টাকা পরিশোধ করলেও ইউনুস মিয়া তার অংশের টাকা দিতে পারেননি।
এদিকে বিলাসছড়া চা বাগানের নিহত রিমন গড়ের বাবা শিবু গড় নাকি প্রায়ই এলাকায় ইউনুসের সঙ্গে দেখা হলে চোর বলে সম্বোধন করতেন।
মঙ্গলবার বেলা ১টায় শিশু রিমন ঘর থেকে বের হয় এবং বিকাল ৪টার দিকে চা বাগানের ৪ নম্বর সেকশনে যায়। এ সময় ইউনুস চা বাগানের ওই এলাকায় পাহারাদারের দায়িত্বে ছিলেন।
তিনি এ সময় শিশুকে ময়না পাখি দেখানোর প্রলোভন দিয়ে তার সঙ্গে গল্প করতে থাকেন। শিবু গড়ের অপমানের প্রতিশোধ নিতে তার হাতে থাকা দা দিয়ে নিষ্পাপ শিশুটিকে মাথার পেছনে ঘাড়ে কোপ মেরে হত্যা করে লাশ চা বাগানের ভেতরে ঝোঁপের লুকিয়ে রাখে।
পরে মঙ্গলবার বিকালে এলাকাবাসী ও রিমনের পরিবারের সদস্যরা অনেক খোঁজাখুঁজির পর তার লাশ চা বাগান থেকে উদ্ধার করে। মঙ্গলবার রাতেই পুলিশ বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে ইউনুসকে আটক করলে খুনের প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটিত হয়।
এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আব্দুস সালেক জানান, শিশু রিমন গড়কে খুনের ১২ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ইউনুস মিয়াকে আটক করলে তিনি পুলিশের কাছে হত্যার কথা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেন।
পরে তিনি আদালতে খুনের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারক্তিমুলক জবানবন্দি দেন। শিগগিরই এ বিষয়ে আরও তদন্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হবে বলে জানান ওসি।
এদিকে এ ঘটনায় বুধবার বিলাসছড়া চা বাগানের উত্তেজিত শ্রমিকরা বস্তির ১০টি বাড়িতে ভাঙচুর করেন। একই সঙ্গে ইউনুসের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেন উত্তেজিত শ্রমিকরা।
পরে শ্রমিকরা শিশু হত্যাকারীর বিচারের দাবিতে বিলাসছড়া পরীক্ষণ খামার কার্যালয় ঘেরাও করে বলে জানান বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি হিরণ বুনার্জি।