শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১১:১৫ পূর্বাহ্ন
ক্রীড়া ডেস্ক: তৃতীয়স্থান নির্ধারণী ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানের সান্ত্বনার জয় নিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপ মিশন শেষ করলো বেলজিয়াম। দলের হয়ে গোল দুটো করেন থমাস মুনিয়ের ও ইডেন হ্যাজার্ড।
অথচ দ্য গ্রেটেস্ট শো অন দ্য আর্থের এবারের আসরের ফেভারিট হয়েই রাশিয়া বিশ্বকাপে যাত্রা শুরু করেছিলো বেলজিয়াম। গ্রুপ পর্ব থেকে শুরু করে নকআউট পর্ব এমনকি কোয়ার্টার ফাইনালেও দলটির সোনালি প্রজন্মের চোখ ধাঁধানো পারফরম্যান্সে বুঁদ হয়ে থেকেছে গোটা বিশ্ব।
কিন্তু সেমিফাইনালের লড়াইয়ে ফরাসিদের সাথে পা হড়কালে একরাশ হতাশা নিয়েই রেড ডেভিলদের বিদায় নিশ্চিত হয়ে যায়।
শনিবার (১৪ জুলাই) সেইন্ট পিটার্সবুর্গে আনুষ্ঠানিকতার তৃতীয়স্থান নির্ধারণী ম্যাচে নেমেই সাফল্যের দেখা পায় বেলজিয়াম। ম্যাচের বয়স তখন মাত্র ৪ মিনিট। বেশ গোছালো এক আক্রমণ রচনা করে ইংলিশ গোলপোস্টের বাঁ দিক দিয়ে বল নিয়ে ডি বক্সের ভেতরে ঢুকেই নিচু ক্রসে থমাস মুনিয়েরকে এগিয়ে দেন নাসের শাদলি।
বল পায়ে কালবিলম্ব করেননি মুনিয়েরও। বেশ কেতাবি কায়দায় জড়িয়ে দেন জালে। ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় বেলজিয়াম। তৃতীয়স্থান নির্ধারণী ম্যাচের এই গোলের সুবাদেই রেকর্ডের পাতায় উঠে যায় বেলজিয়াম ও ইংল্যান্ডের নাম। কেননা নিজেদের বিশ্বকাপ ইতিহাসে এটি বেলজিয়ানদের সবচেয়ে দ্রুত গোলের রেকর্ড। আর ইংলিশরা গড়ে সবচেয়ে দ্রুত গোল হজমের।
শুরুতেই পিছিয়ে পড়ে প্রথমার্ধেই সমতায় ফিরতে চেয়েছে ইংল্যান্ড। অবশ্য তেমন লক্ষ্যভেদী কোনো শট কারও পা থেকেই দেখা যায়নি। তবে ২৩ মিনিটে বেশ ভালো একটি সুযোগ এসেছিলো। রাহিম স্টারলিংয়ের লং পাস থেকে পেনাল্টি সীমানায় বল পেয়েছিলেন ইংলিশ অধিনায়ক হ্যারি কেইন। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি। অন টার্গেটে নেওয়া শটটি চলে যায় গোলপোস্টের অনেক বাইরে দিয়ে।
চেষ্টার কমতি ছিলে না বেলজিয়াম শিবিরেও। কিন্তু ইংলিশদের গড়া রক্ষণে তাদের সব প্রচেষ্টাই মুখ থুবড়েপড়লে ১-০ তে এগিয়ে থেকেই যেতে হয় প্রথমার্ধের বিরতিতে।
দ্বিতীয়ার্ধের ১০ মিনিট যেতে না যেতেই ব্যবধান বাড়ানোর আরেকটি সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিলেন বিশ্বকাপের চলতি আসরে ৪ গোলধারী রোমলো লুকাকু। কেভিন দে ব্রুইনির ক্রস পেয়ে পাওয়া বলটি নিয়ে একাই ঢুকে পড়েছিলেন ইংলিশ পেনাল্টি সীমানায়। কিন্তু গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ড তা প্রতিহত করে দেন।
সুবর্ণ সুযোগ এসেছিলো ইংল্যান্ড শিবিরেও। ৬৬ মিনিটে বক্সের কিছুটা বাইরে থেকে পাওয়া বল নিয়ে দারুণ এক মুভে গোলরক্ষককে পরাস্ত করে আলতো ছোঁয়ায় জালে ঠেলেও দিয়েছিলেন এরিক ডায়ার। বল চলে যাচ্ছিলো পোস্টের ভেতর। কিন্তু গোল লাইন অতিক্রম করার আগেই পা দিয়ে প্রতিহত করেন ডিফেন্ডার টোবি আল্ডারভাইরেল্ড।
তবে ৮২ মিনিটে লক্ষ্যভেদে ভুল করেনি বেলজিয়াম। দে ব্রুনেইর এগিয়ে দেওয়া বল থেকে ইংলিশ রক্ষণ ভেঙে বাঁ দিক দিয়ে চূড়ান্ত ফিনিশিং টানলে ২-০ তে এগিয়ে যায় রবার্তো মার্তিনেজের শিষ্যরা। আর ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় গ্যারেথ সাউথগেটের ইংল্যান্ড।
বাকি সময়টুকু দু’দলেরই কেটেছে আনুষ্ঠানিকতায়। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ইংল্যান্ড জালে জড়ানোর মতো আর কোনো আক্রমণ শানায়নি।
বেলজিয়ানরাও হয়তো ব্যবধান বাড়ানোর প্রয়োজন মনে করেনি। এরপর রেফারির শেষ বাঁশি বাজলে তৃতীয়স্থান নিয়ে মাঠ ছাড়ে বেলজিয়াম।