শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ১১:০০ পূর্বাহ্ন
সিদ্দিকুর রহমান মাসুম:
ঘড়ির কাটা বরাবর ৩টা ৩৫ মিনিটে নিজ বাড়িতে পা রেখেছেন দেওয়ান হামজা চৌধুরী। সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরাসরি হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার স্নানঘাটে নিজ বাড়িতে পৌঁছান ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা এই ফুটবলার। বিকেল ৩টায় তার গাড়িবহরটি বাহুবল উপজেলার পুটিজুরি বাজারে পৌঁছে।
বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে খেলতে আসা এই ফুটবলারকে অভিবাদন জানাতে কয়েক হাজার মানুষ অপেক্ষায় ছিলেন। পুটিজুরি বাজারে পৌঁছেই গাড়ির উপরের অংশের ঢাকনা খুলে বের হয়ে পড়েন হামজা। এসময় হাত নেড়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তিনি।
হামজাকে দেখে স্লোগান তুলতে থাকেন উৎসুক জনতা। কয়েক হাজার মানুষের অংশগ্রহণে জনসমুদ্রে পরিণত হয় এলাকা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জনসমুদ্র সামাল দিতে হিমশিম খায়।
আজ (সোমবার) বিকেল ৩টা ৩৫ মিনিটে নিজ বাড়িতে পৌঁছান হামজা। বাড়িতে কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হলেও মানুষের ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয়েছে। অনেকেই বাড়ির বেড়া ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন।
বিকেল পৌনে ৪টায় স্ত্রীসহ ঘরে নেওয়া হয় হামজাকে। বধূকে বরণ করতেও নানা আয়োজন করা হয়। ফুলের মালা, ফিতা কাটা, ফুল ছিটানোর আয়োজন ছিল। পরিবারের সদস্যরা ঘরোয়া পরিবেশে হামজাকে ঘরে তোলেন, বরণ করেন বধূকে।
বিকেল ৪টা ৩৫ মিনিটে অপেক্ষমান হাজারও মানুষের সাথে কুশল বিনিময় করতে বাড়ির পাশে তৈরি মঞ্চে উঠেন হামজা। এ সময় তার নাম ধরে স্লোগান দিতে থাকে উপস্থিত জনতা।
হামজা মঞ্চে উঠে হাত নাড়েন। পরে সালাম দিয়ে কুশল বিনিময় করেন। তারপরই ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ-বাংলাদেশ’ স্লোগান দেন হামজা। তখন উৎসুক জনতাও তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে ‘বাংলাদেশ-বাংলাদেশ’ স্লোগানে মুখরিত করে তোলে চারপাশ।
সিলেট থেকেই ঢাকায় ফেরার কারণ সম্পর্কে প্রতিনিধি দলের সদস্য গোলাম গাউস বলেন, ‘তার বাবাই আমাদের অনুরোধ করেছেন পুনরায় হবিগঞ্জে না যাওয়ার। হামজার চাচা, চাচাতো ভাইরা রয়েছে বাড়ির সার্বিক ব্যবস্থাপনায়। আমরা গতকাল হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করেছি। সিলেট বিমানবন্দর থেকে বাড়ি পর্যন্ত পুলিশ প্রটোকলে হামজা বাড়ি পৌঁছাবে আবার সেখানেও সার্বক্ষণিক পুলিশ থাকবে।’
ফেডারশেন সূত্রের খবর, এই প্রতিনিধি দলের সদস্যদের হামজাকে নিয়েই আগামীকাল মঙ্গলবার ঢাকায় ফেরার পরিকল্পনা ছিল। বাফুফে কর্তারা গতকাল সিলেট বিমানবন্দরে সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা করেছিলেন। সেই পরিকল্পনা অবশ্য বাস্তবায়ন হয়নি। হ-য-ব-র-ল পরিস্থিতিই সৃষ্টি হয়েছে। হামজাকে ভিআইপি জোনে রাখা হলেও সার্বক্ষণিক লোকজন তাকে ও তার পরিবারকে ঘিরেই ছিল। সেই ভিড় এড়াতে হামজার দুই হাত ধরে বাফুফের দুই সদস্যের হাটার দৃশ্যও দেখা গেছে।
হামজার জন্য দেশের সকল গণমাধ্যম মুখিয়ে ছিল। সেই গণমাধ্যমের জন্যও সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনা করতে পারেনি ফেডারেশন। বাংলাদেশে হামজার মিডিয়ার সঙ্গে অভিষেক হয়েছে ধস্তাধস্তির মধ্যেই। ফুটবলের এত গুরুত্বপূর্ণ দিনে ছিলেন না বাফুফের মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম বাবু। যিনি মাস খানেক আগে কয়েকটি গণমাধ্যমে হামজাকে রাজসিক সংবর্ধনার বক্তব্য দিয়ে একেবারে অদৃশ্য হয়ে পড়ছেন। আজ বিমানবন্দরে মিডিয়া সেশনের সময় হামজার সামনেই বাফুফে কর্তারা নিজেদের মধ্যে ঠেলা-ঠেলি করেছেন।