• Youtube
  • English Version
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৪:১৫ অপরাহ্ন

করাঙ্গী নিউজ
স্বাগতম করাঙ্গী নিউজ নিউজপোর্টালে। ১৫ বছর ধরে সফলতার সাথে নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশন করে আসছে করাঙ্গী নিউজ। দেশ বিদেশের সব খবর পেতে সাথে থাকুন আমাদের। বিজ্ঞাপন দেয়ার জন‌্য যোগাযোগ করুন ০১৮৫৫৫০৭২৩৪ নাম্বারে।

বড়লেখা ট্রাজেডি: মৃত্যুর মিছিলে যোগ হলেন আরও একজন

  • সংবাদ প্রকাশের সময়: সোমবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০২০

বড়লেখা (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের বড়লেখার পাল্লাথল চা বাগানে স্ত্রী শাশুড়িসহ ৪ জনকে কুপিয়ে হত্যার পর ঘাতকের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত কানন বালাও চলে গেলেন না ফেরার দেশে।

চা বাগানে মৃত্যুর মিছিলে ঘাতকসহ ৫ জনের সঙ্গে যোগ হল আরও একজন।

৮ দিন ওসমানী হাসপাতালের ফ্লোরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন।

তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উত্তর শাহবাজপুর তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এবং পাল্লাথল চা-বাগানের ফ্যাক্টরি ক্লার্ক অঞ্জন দাস।

গত ১৯ জানুয়ারি ভোরে ননদের স্বামী জামাই নির্মল কর্মকারের দায়ের কোপে কানন বালা গুরুতর আহত হন। একই ঘটনায় নিহত হন কানন বালার স্বামী, শাশুড়ি, ননদ ও মেয়ে।

অভিযোগ উঠেছে, ৭ দিনেও সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালের একটি বেডও ভাগ্যে জুটেনি চাঞ্চল্যকর হামলায় আহত কানন বালার। অবশেষে হাসপাতালের ফ্লোরেই অনেকটা বিনা চিকিৎসায় সোমবার সকালে তার মৃত্যু হয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলার পাল্লাথল চা বাগানে পারিবারিক কলহের জের ধরে নির্মল কর্মকার তার স্ত্রী জলি বুনার্জিকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। এ সময় জলিকে বাঁচাতে গিয়ে নির্মলের দায়ের কোপে নিহত হন জলির মা লক্ষ্মী বুনার্জি।

স্ত্রী ও শাশুড়িকে হত্যা করেও ক্ষান্ত হয়নি নির্মল। তার দায়ের কোপে নিহত হন তার স্ত্রীর বড়ভাই বসন্ত বক্তা এবং বসন্তের মেয়ে শিউলী বক্তা। এ সময় গুরুতর আহত হন বসন্তের স্ত্রী কানন বালা।

ঘটনার সময় পালিয়ে বেঁচে যায় জলির ৯ বছরের শিশুকন্যা চন্দনা বুনার্জি।

একে একে ৪ জনকে হত্যার পর নিজেকেও শেষ করে দেয় নির্মল। প্রথমে নিজের মাথায় দা দিয়ে কোপ দেয়। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে সে আত্মহত্যা করেছে।

পুলিশ আহতাবস্থায় কানন বালাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে এবং নিহত ৫ জনের লাশ মর্গে পাঠায়।

ঘটনার রাতেই পাল্লাথল বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন থানায় পৃথক দুটি মামলা করেন।

পাল্লাথল চা-বাগানের ফ্যাক্টরি ক্লার্ক অঞ্জন দাস সোমবার বিকালে জানান, এ ঘটনায় পুরো বাগানবাসী স্তব্ধ। একসঙ্গে এতজনের মৃত্যু, ভাবতেই কষ্ট লাগছে। সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগছে, নির্মলের হাত থেকে তার স্ত্রী জলিকে বাঁচাতে গিয়ে একই পরিবারের ৫ জনের মৃত্যুর বিষয়টি।

বড়লেখার উত্তর শাহবাজপুর তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন জানান, কানন বালা চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিলেট ওসমানী হাসপাতালে সোমবার সকালে মারা গেছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পাল্লাথল চা-বাগান কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

ইউএনও মো. শামীম আল ইমরান জানান, পাঁচজনের মৃত্যুর পর আহত নারীও সোমবার সকালে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে মারা গেছেন। ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। রোববার পাল্লাথল চা বাগানের শোকাহত শ্রমিকদের সমবেদনা জানাতে যান। তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহযোহিতায় চা-শ্রমিকদের মেডিকেল চেকআপ এবং ফ্রি মেডিসিন দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে প্রাপ্ত কম্বল ১০০ জন শ্রমিকের মধ্যে এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত শীতবস্ত্র নিহত জলি বুনার্জির মেয়ে চন্দনাসহ বাগানের ৬২ জন শিশুর মধ্যে বিতরণ করেছেন।

এ ছাড়া সমাজসেবা অধিদফতর থেকে প্রাপ্ত ১০৫ জন চা-শ্রমিকের মধ্যে অনুদানের চেক দেয়া হয়েছে।

নিহত জলি বুনার্জির মেয়ে চন্দনা বুনার্জি ভবিষ্যতে শিক্ষিত ও ভালো মানুষ হিসেবে সমাজে বেড়ে উঠার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের চেষ্টা করবেন বলে ইউএনও জানান।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ