করাঙ্গী নিউজ
স্বাগতম করাঙ্গী নিউজ নিউজপোর্টালে। ১৫ বছর ধরে সফলতার সাথে নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশন করে আসছে করাঙ্গী নিউজ। দেশ বিদেশের সব খবর পেতে সাথে থাকুন আমাদের। বিজ্ঞাপন দেয়ার জন‌্য যোগাযোগ করুন ০১৮৫৫৫০৭২৩৪ নাম্বারে।

মৌলভীবাজারে হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সভা

  • সংবাদ প্রকাশের সময়: রবিবার, ১২ জানুয়ারী, ২০২০

প্রেস বিজ্ঞপ্তি: নিন্মতম মূল মজুরি ২০ হাজার টাকা, ৮ ঘন্টা কর্ম দিবস ও গণতান্ত্রিক শ্রমআইনের দাবি
মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজিঃ নং চট্টঃ২৩০৫) এর সভা থেকে বর্তমান বাজারদরের সাথে সংগতি রেখে হোটেল সেক্টরের শ্রমিকদের জন্য নিন্মতম মূল মজুরি ২০ হাজার টাকা, ৮ ঘন্টা কর্ম কর্ম দিবস, নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র, সাপ্তাহিক ছুটি কার্যকরসহ শ্রমআইন বাস্তবায়ন এবং শ্রমআইনের শ্রমিক স্বার্থবিরোধী ধারা ও বিধি বাতিল করে গণতান্ত্রিক শ্রমআইন বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়।

শনিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় কোর্টরোডস্থ(মনুসেতু সংলগ্ন) কার্যালয়ে জেলা শহরের চৌমুহনা এলাকার শ্রমিকদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ মোস্তফা কামাল।

সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাস।

এছাড়াও সভায় বক্তব্য রাখেন হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহিন মিয়া ও কোষাধ্যক্ষ তারেশ বিশ্বাস সুমন, সদর উপজেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল আহমেদ সুবেল, চৌমুহনা এলাকার শ্রমিকনেতা মোঃ জামাল মিয়া, মোঃ কামাল মিয়া, বিজয় দেবনাথ, জমির আলী, দরবেশ আলী শামীম, মোঃ আলাউদ্দিন মিয়া প্রমূখ।

সভায় বক্তারা এদেশের শ্রমিকশ্রেণির বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে বলেন, শ্রমিকদের ওপর যে শোষণ-নির্যাতন তার থেকে মুক্তি পেতে প্রয়োজন শ্রমিকশ্রেণির নেতৃত্বে শ্রমিক-কৃষকের মৈত্রীর ভিত্তিতে একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক তথা শ্রমিক-কৃষকের গণতান্ত্রিক সমাজ। আর সে ধরণের সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে গেলে প্রয়োজন এদেশ থেকে বিদেশী শক্তি তথা সাম্রাজ্যবাদ ও তাদের দালালদের সকল রূপের শোষণ-শাসনের বিরুদ্ধে শ্রমিক-কৃষকের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন।

বক্তারা বর্তমান অগ্নিমূল্যের বাজারদরের কথা উল্লেখ করে বলেন সকল জিনিসপত্রের দাম অব্যাহত বাড়লেও শ্রমিকের মজুরি বাড়ছে না। বর্তমান বাজারদরে ৫/৬ জনের একটি পরিবার চালাতে কমপক্ষে যেখানে ৩০/৩৫ হাজার টাকা লাগে, সেখানে একজন হোটেল শ্রমিককে ৩ হাজার টাকায়ও কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে।

২০০৯ সালের পর সরকার নতুন করে গত ১ মার্চ ২০১৭ তারিখে হোটেল-রেস্টুরেন্ট, মিস্টি-বেকারী সেক্টরের শ্রমিকদের জন্য নিন্মতম মজুরির গেজেট(এসআরও নং ৩৮-আইন/২০১৭) প্রকাশ করে আইন জারী করেন, বর্তমান ঊর্দ্ধগতির বাজারদরে সরকার ঘোষিত মজুরিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে একজন শ্রমিক ১০ দিনও চলতে পারবে না। তারপরও সরকার ঘোষিত নিন্মতম মজুরি কার্যকর করা হচ্ছে না ।

তাছাড়া বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ৫ ধারায় নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র, ৬ ধারায় সার্ভিস বই, ২(১০) ধারায় প্রতিবছর চাকুরীর জন্য ৪৫ দিনের গ্রাচুইটি, ২৬(ক) ধারায় চাকুরীচ্যূতি জনিত ৪ মাসের নোটিশ পে, ১০৩ ধারায় সপ্তাহে দেড়দিন সাপ্তাহিক ছুটি, ১০৮ ধারায় দৈনিক ৮ ঘন্টা সপ্তাহে ৪৮ ঘন্টা কাজ, অতিরিক্ত কাজের জন্য দ্বিগুণ মজুরি প্রদান, ১১৫ ধারায় বছরে ১০ দিন নৈমিত্তিক ছুটি, ১১৬ ধারায় ১৪ দিন অসুস্থ্যতার ছুটি, ১১৭ ধারায় প্রতি ১৮ দিন কাজের জন্য ১ দিন অর্জিত ছুটি, ১১৮ ধারায় ১১ দিন উৎসব ছুটি প্রদানের আইন থাকলেও হোটেল শ্রমিকদেরকে এই সকল আইনগত অধিকার হতে বঞ্চিত করা হচ্ছে। সভায় যখন তখন শ্রমআইন লঙ্ঘন করে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের বিরুদ্ধে আন্দোল গড়ে তোলার জন্য শ্রমিকদের প্রতি আহবান জানানো হয়।

সভায় মোঃ দরবেশ আলী শামীমকে আহবায়ক এবং বিজয় দেবনাথকে যুগ্ম-আহবায়ক করে মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ২৩০৫-এর চৌমুহনা আঞ্চলিক কমিটি গঠন করা হয়।

সভা থেকে আসন্ন রমাজন মাসে বিনাবেতনে ছাঁটাই বন্ধ, মাসিক বেতনের সমপরিমান উৎসব বোনাস প্রদান, বাজারদরের সাথে সংগতিপূর্ণ নিন্মতম মূল মজুরি ২০ হাজার টাকা ঘোষণা, ৮ ঘন্টা কর্ম দিবস, নিয়োগ পত্র, পরিচয় পত্রসহ শ্রম আইন বাস্তবায়ন, শ্রমিকদের জন্য রেশনিং চালু, শ্রীমঙ্গলে স্থায়ী শ্রম আদালত স্থাপন করার দাবি জানানো হয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ