মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ১১:২৪ পূর্বাহ্ন
আব্দুর রাজ্জাক রাজু: স্ত্রী প্রবাসে থাকার সুযোগে শালিকা জুনেরার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে দুলাভাই সোহাগের। শুধু তাই নয় স্ত্রীর বড় বোনের মেয়ের দিকে কু-দৃষ্টি দেয় লম্পট সোহাগ। লম্পট দুলাভাইর কো-মতলব বুঝতে পেরে শালিকা জুনেরা দুলাভাইকে শাসিয়ে দেয়।
এর জের ধরে গত মঙ্গলবার রাতে শালিকার সাথে বাকবিতন্ডা নিয়ে শালিকা জুনেরা খাতুন(১৯) কে ওরনা পেঁছিয়ে হত্যার পর আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয় দুলাইভাই সোহাগ।
ঘটনাটি ঘটেছে চুনারুঘাট সদর ইউনিয়ের শেখেরগাও গ্রামে। হত্যার পর দুলাভাই নিজেই শালিকার লাশ তড়িঘড়ি করে দাফন করার ব্যবস্থা করলে জুনেরার আত্নীয় স্বজনদের সন্দেহ হলে তারা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে মর্গে প্রেরণ করে। নিহত জুনেরা শেখেরগাও গ্রামের আব্দুর ছিতারের মেয়ে।
বুধবার রাতে মেয়ের( জামাই) সোহাগকে আসামী করে চুনারুঘাট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন আব্দুর ছিতার মিয়া । মামলা দায়ের পর চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আলী আশরাফের নির্দেশনায় ইন্সপেক্টর তদন্ত চম্পক দাম এর নেতৃত্বে এসআই অলক বড়ুয়া, এসআই ভূপেন্দ্র চন্দ্র বর্মন, এসআই মোতালিবসহ একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে শশুর বাড়ি এলাকা থেকে ঘাতক দুলাইভাই সোহাগ (৩০) কে গ্রেফতার করেন।
গ্রেফতারকৃত সোহাগ হবিগঞ্জ পৌর এলাকার ২নং ওয়ার্ডের যশেরাব্দা গ্রামের সবুজ মিয়ার পুত্র।
বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সুলতান উদ্দিন প্রধানের আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে ঘটনার বর্ননা দেয় ঘাতক সোহাগ।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, বিগত ১০ বছর পুর্বে চুনারুঘাট উপজেলার শেখেরগাও গ্রামের আব্দুর ছাতিরের মেয়ে ছিতারাকে বিয়ে করে সোহাগ। বিয়ে পর সোহাগ তার শশুর বাড়িতেই বসবাস করে আসছিল। সোহাগের তিন বছরের শাওন নামের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। কিছুদিন পর সোহাগ তার স্ত্রী ছিতারাকে সৌদি আরব পাঠিয়ে দেয়। সোহাগের অবুঝ সন্তানের দেখাশোনা করতেন শালিকা জুনেরা। এ সুবাধে শালিকার সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে বলে জানায়।
জীবিকার তাগিদের জন্য জুনেরাও প্রবাসে চলে যায়। প্রবাসে ৪ মাস অবস্থানের পর করোনার কারণে বিগত প্রায় দেড়মাস পুর্বে জুনেরা দেশে চলে আসে। জুনেরার পরিবার জুনেরাকে বারবার বিয়ে দিতে চাইলে লম্পট দুলভাই পাত্রদেরকে ভূলবুঝিয়ে ফিরিয়ে দিত। লম্পট সোহাগের জন্য বিয়ে দিতে পারেনি পরিবার। নিহত জুনেরার পরিবারে পিতা মাতা ও বড় বোনের মেয়েকে নিয়ে থাকতেন সুহাগ।বোনের সুখের জন্য এবং অবুঝ বাচ্চার কথা চিন্তা করে পিত্রালয়ে আশ্রয় দেন জুনেরার পরিবার । কিন্তু লম্পট দুলাইভাই জোনেরার বড় বোনের মেয়ে (ভাগিনির) দিকে কু-দৃষ্টি দেওয়া নিয়ে প্রতিবাদ কারায় তাকে হত্যা করে দুলাভাই সোহাগ।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে থানার ওসি মো: আলী আশরাফ জানান, নিহত জুনেরার পিতা মামলা দায়ের পর আমরা আসামী গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছি এবং হত্যার ব্যবহ্নত ওরনা ও বটি উদ্ধার করা হয়েছে। আসামী সুহাগ আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দী প্রদানের পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।