শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ০৬:১৪ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি, নাটোর: নাটোরের বড়াইগ্রামে বিয়ের মাত্র তিন মাসের মাথায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা মামলায় স্বামী রুবেল হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নাটোরের বিচারক মোহা. ইমদাদুল হক এই আদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত রুবেল বড়াইগ্রাম উপজেলার শিবপুর গ্রামের খোকন মুন্সির ছেলে।
মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি আসামীকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়। দণ্ডিত অর্থ জেলা কালেক্টরেটকে আগামী ছয় মাসের মধ্যে আদায় করে তা নিহতের বাবা-মাকে দেয়ার উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনালে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নাটোরের এপিপি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৭ জুন সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার তেঁতুলিয়া গ্রামের আকবর আলী শেখের মেয়ে ফাতেমা খাতুনের সঙ্গে রুবেল হোসেনের বিয়ে হয়। বিয়ের এক মাসের মাথায় রুবেল হোসেন তার স্ত্রী ফাতেমা খাতুনকে বাবার বাড়ি থেকে দুই লাখ টাকা যৌতুক এনে দেয়ার জন্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে।
কিন্তু টাকা এনে না দেয়ায় ২০১৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে রুবেল তার স্ত্রী ফাতেমা খাতুনকে মারপিটের এক পর্যায়ে গলা টিপে শ্বাসরোধে হত্যা করে। একই সঙ্গে তারা কৌশলে এটি আত্মহত্যা বলে অপপ্রচার চালায়।
এ ঘটনায় পরদিন নিহতের বড় বোন আকলিমা বেগম বাদী হয়ে রুবেল হোসেন (২৪), তার বাবা খোকন মুন্সী (৫৫), ভাই জুয়েল হোসেন (২৫) ও ভাইয়ের স্ত্রী বেবি বেগম (২২) কে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আমিরুল ইসলাম চারজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রদান করেন। পরে চার্জ গঠনকালে আদালত অপর তিন আসামিকে অব্যাহতি দিয়ে এক নম্বর আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
এরপর দীর্ঘ শুনানিকালে আদালত ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। সাক্ষ্য প্রমাণে আসামির বিরুদ্ধে তার নববিবাহিতা স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যার বিষয়টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হওয়ায় বিচারক আসামি রুবেল হোসেনের মৃত্যুদণ্ড এবং একলাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেন। পরে রুবেল হোসেনকে জেল হাজতে পাঠানো হয়।সূত্র: যযুগান্তর।