বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ০৬:৫০ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি, সিলেট: সিলেটের আলোচিত রায়হান আহমদ হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত এস.আই আকবর হোসেন ভূঁইয়া ধরা খাওয়ার পর হাতজোড় করে কাঁদছিলেন, নিজেকে দাবি করছিলেন নির্দোষ হিসেবে।
এসময় তিনি বলেন, ‘আমি মারিনি, আমি ইচ্ছে করে মারিনি, ৪-৫ জন মিলে মেরেছে, ছেলেটা (রায়হান) মরে গেছে ভাই।’
সোমবার (৯ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয় জনতার সহায়তায় কানাইঘাটের ডনা সীমান্ত এলাকা থেকে আকবরকে গ্রেফতার করে জেলা পুলিশের একটি দল।
এদিকে, আটক করার কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা যায়- একটি পাহাড়ি ছড়ায় পাথরের উপর আকবর হোসেনকে বসিয়ে রেখে হাত-পা বাঁধেন কয়েকজন যুবক। এসময় আকবর হোসেন হাতজোড় করে কাঁদছিলেন এবং তার হাত-পা না বাঁধার অনুনয় করছিলেন।
বাঁধার আগে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন স্থানীয়রা। এসময় কেঁদে কেঁদে আকবর বলছিলেন- আমি মারিনি ভাই, আমি তাকে (রায়হানকে) প্রাণের মারার জন্য মারিনি। ৪-৫ জন মিলে মেরেছি, ওইসময় ছেলেটা মরে গেছে। অসুস্থ হওয়ার পর আমি তাকে হাসপাতালে পাঠিয়েছি।
এসময় আকবর আরও বলেন, আমি অন্য কোনো কারণে ভাগিনাই। আমি ভাগছি, আমার সাসপেনশন হয়েছে, এরেস্ট হতে পারি, এই জন্য আমাকে বলা হয়েছে যে- দুইমাসের জন্য কোথাও চলে যাও, দুই মাস পর পরিস্থিতি ঠান্ডা হলে বিষয়টা হ্যান্ডেল করা যাবে।
আকবরকে আটককারী যুবকরা এ সময় বাংলা ভাষার পাশাপাশি আদিবাসী ভাষায়ও কথা বলেন। এরপর রায়হানের হাত-পা বেঁধে পাহাড়ি ছড়া দিয়ে তাকে হাঁটিয়ে নিয়ে আসেন ওই যুবকরা।
এদিকে, ভিডিওর যুবকদের কথাবার্তা ও এলাকা দেখে অনেকেই সে স্থানকে ভারত এবং যুবকদের খাসিয়া আদিবাসী বলে মন্তব্য করছেন।
গত ১১ অক্টোবর রাতে রায়হান আহমদকে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। পরদিন সকালেই রায়হান মারা যান। এ ঘটনায় তার স্ত্রী বাদি হয়ে মামলা করলে এসএমপির একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে সত্যতা পায়। ১২ অক্টোবর ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এসআই আকবর হোসেনসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। ১৩ অক্টোবর আকবর পুলিশি হেফাজত থেকে পালিয়ে যায়।
গা-ঢাকা দেয়ার ২৬ দিন পর আজ সোমবার পাকড়াও হলেন আকবর।