মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ১১:৫৯ পূর্বাহ্ন
পিন্টু দেবনাথ, কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার): মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে জেএসসি শিক্ষার্থীদের অনলাইন রেজিষ্ট্রেশনে বোর্ড নির্ধারিত ফি এর দ্বিগুণ, আড়াইগুণ টাকা আদায় করা হচ্ছে। করোনার দুর্যোগকালীন সময়েও বাণিজ্যের সাথে শিক্ষকরা বকেয়া বেতনের জন্য শিক্ষার্থীদের চাপ প্রয়োগ করছেন। ফলে আয় রোজগার কমে যাওয়ায় দরিদ্র অভিভাবকদের উপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ৭ জুন থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত সিলেট শিক্ষা বোর্ডের অধীনস্থ জেএসসি শিক্ষার্থীদের অনলাইন রেজিষ্ট্রেশনের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।
রেজিষ্ট্রেশনের জন্য শিক্ষার্থী প্রতি রেজিষ্ট্রেশন ফি ৫০ টাকা, ক্রীড়া ফি ৩০ টাকা, রেড ক্রিসেন্ট ফি ১৫ টাকা, অন্ধকল্যাণ ফি ৫ টাকা এবং উন্নয়ন ফি ২৫ টাকা হিসাবে মোট ১২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠান সমুহে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে১২৫ টাকা আদায় করার কথা। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সভাপতির দায়িত্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কালীপ্রসাদ, পতনউষার, হাজী উস্তওয়ার উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে দুইশ’ আড়াইশ, দুশ’ষাট টাকা হারে আদায় করছে।
পতনউষার উচ্চ বিদ্যালয়সহ কোন কোন প্রতিষ্ঠান বকেয়া ৬ মাস, ৩ মাসের বেতনের জন্যও শিক্ষার্থীদের উপর চাপ প্রয়োগ করছে। ফলে করোনাকালীন সময়ে দরিদ্র অভিভাবকরা শিক্ষার্থীদের জন্য এই টাকা পরিশোধ করাও বাড়তি চাপ বলে মনে করছেন।
পতনউষার উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক আব্দুল খালিক, জাহানারা বেগম, সুতিন কুমার দে বলেন, আমাদের বাচ্চাদের কাছ থেকে রেজিষ্ট্রেশনের ২৫০ ও বকেয়া ৬ মাসের বেতনের চাপ প্রয়োগ করছেন। আমরা বাধ্য হয়ে রেজিষ্ট্রেশনের সাথে দু’মাসের বেতন দিয়েছি।
আব্দুল মোস্তাকিম, নূরুল মোত্তাকিন বলেন, হাজী উস্তওয়ার উচ্চ বিদ্যালয়ে আমাদের কাছ থেকে রেজিষ্ট্রেশনের জন্য ২৬০ টাকা হারে আদায় করেছে। করোনা ভাইরাস নিয়ে পুরো দেশ যেখানে অচল সেখানে দ্বিগুণ টাকা আদায় করা শিক্ষকদের বাণিজ্য হয়ে পড়ছে।
অন্যদিকে কমলগঞ্জ মডেল ও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কালী প্রসাদ, অভয়চরণ ও মাধবপুর উচ্চ বিদ্যালয় ২শ’ টাকা, কামুদপুর ২শ’ থেকে ৩শ’ টাকা, তেঁতইগাও ও ভান্ডারিগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় ১৮০ এবং এএটিএম বহুমুখী শমশেরনগর, আবুল ফজল চৌধুরী ও পদ্মা মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৫০ টাকা হারে আদায় করছে।
পতনউষার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফয়েজ আহমদ জানান, ২৫০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও যে যতো পারে দিচ্ছেন। বেতনের জন্য কাউকে চাপ দেয়া হচ্ছে না, যারা পারছেন কিছু কিছু বেতনও দিচ্ছেন।
শমশেরনগর হাজী মো. উস্তওয়ার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূরে আলম সিদ্দিক জানান তিনি ২৬০ টাকা, এএটিএম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিহির ধর জানান ১৫০ টাকা, কালী প্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সত্যেন্দ্র কুমার পাল জানান, ২শ’ টাকা হারে আদায় করছেন।
অভিযোগ বিষয়ে প্রধান শিক্ষকরা বলেন, অনলাইনের চার্জ, ছবি তোলা, বোর্ডে আসা যাওয়া, চা নাস্তা এসবে বাড়তি টাকা খরচ হয়।
কমলগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামসুন্নাহার পারভীন বলেন, আমি স্কুল প্রধানদের বলে দিয়েছি বোর্ড নির্ধারিত ফি এর বেশি না নেয়ার জন্যে।
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) নাসরিন চৌধুরী বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।