করাঙ্গী নিউজ
স্বাগতম করাঙ্গী নিউজ নিউজপোর্টালে। ১৫ বছর ধরে সফলতার সাথে নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশন করে আসছে করাঙ্গী নিউজ। দেশ বিদেশের সব খবর পেতে সাথে থাকুন আমাদের। বিজ্ঞাপন দেয়ার জন‌্য যোগাযোগ করুন ০১৮৫৫৫০৭২৩৪ নাম্বারে।

সিলেট বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ আজ

  • সংবাদ প্রকাশের সময়: মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

নিজস্ব প্রতিনিধি, সিলেট: গত ১০ দিন থেকে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা সমাবেশ সফল করার জন্য প্রচার-প্রচারণা করেছেন। নেতাকর্মীরা প্রতিদিন সমাবেশ সফলের জন্য করেছেন বৈঠক। পোষ্টার, লিফলেট বিলি করেছেন সাধারণ মানুষের মধ্যে। সিলেটের বিভিন্ন জায়গায় লাগানো হয়েছে ব্যানার ফ্যাষ্টুন।

সমাবেশে যখন লক্ষাধিক লোকের সমাগম করতে প্রস্তুতি নেয় সিলেট বিএনপি ঠিক তখনই শুরু হয় ধরপাকড়াও। এতে নেতাকর্মীদের মধ্যে চলে আসে গ্রেফতার আতঙ্ক। তবুও দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতারা গ্রেফতার আতঙ্ক উপেক্ষা করে চালিয়ে যান সমাবেশ সফলের প্রচারণা। গত রোববার থেকে হঠাৎ করে শুরু হয় গ্রেফতার আতঙ্ক। সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় গ্রেফতার হন ২৩ জন নেতাকর্মী।

নেতাকর্মীরা বিনা কারণে দলের কর্মীদের গ্রেফতার করে আতঙ্ক সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে বলে মন্তব্য করেন। তারা সকল ষড়যন্ত্র ছেদ করে সমাবেশ সফলের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

গত রোববার জকিগঞ্জে সমাবেশ সফলের লিফলেট বিতরণকালে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাসুক আহমদ, ছাত্রদল কর্মী জাকির আহমদ, রাশেদ আহমদ ও তারেককে গ্রেফতার করে জকিগঞ্জ থানা পুলিশ। একই দিন গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ বাজার থেকে আটক করা হয় উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নোমান উদ্দিন মোরাদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান উজ্জলকে আটক করে গোলাপগঞ্জ থানা পুলিশ। এছাড়াও ওই দিন রাতে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ৪ নেতাকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছেন-চঞ্চল হোসেন, মেহেদী হাসান রাফী, শামীম আহমদ ও বাহাউদ্দিনকে। ওসমানীনগর উপজেলায় আটক করা হয় বিএনপির অঙ্গসংগঠনের ৫ নেতাকর্মীকে।

আজ মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর)  দুপুর ২ টায় সিলেট রেজিষ্টারী মাঠে সিলেট বিভাগীয় মহাসমাবেশ। সমাবেশকে ঘিরে গত ১০ দিন থেকে জোর প্রচারণা শেষ হয়। সিলেট বিএনপির লক্ষ্য রেজিষ্টারী মাঠের সমাবেশে ব্যাপক লোক সমাগম ঘটাতে।

মামলা, গ্রেফতার আতঙ্ক ও গ্রুপ-উপগ্রুপে বিভক্ত সিলেট বিএনপিতে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসে সমাবেশকে ঘিরে। কারাবন্দী বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপর থেকে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও বর্তমান সংসদ ভেঙ্গে নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবীতে সিলেটে হচ্ছে বিএনপির এ সমাবেশ। সমাবেশে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখবেন। জানা গেছে আজ মঙ্গলবার সকালে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সিলেটে এসে পৌঁছবেন।

সমাবেশস্থল রেজিষ্টারী মাঠ সোমবার দুপুরে পরিদর্শন করেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ। সোমবার দুপুর ১ টায় দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ডা: জাহিদ হোসেন ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন জীবনের নেতৃত্বে মাঠ পরিদর্শন করেন সিলেট বিএনপি নেতারা। গত রোববার রাতে রেজিষ্টারী মাঠের মঞ্চের সরঞ্জামাদি রাখা হয়। গতকাল সোমবার সকাল থেকে মঞ্চ তৈরির জন্য শ্রমিকরা কাজ ধরলে পুলিশ এসে এখন কাজ করা যাবে না বলে থামিয়ে দেয়। পরে দুপুর থেকে কাজ শুরু হয়। এ সময় মঞ্চের জন্য স্থান নির্ধারণ করা হলে পুলিশ মঞ্চ ছোট করে তৈরি করতে বলেন। এরপর শ্রমিকরা ছোট করে মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু করেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় সিলেট রেজিষ্টারী মাঠে গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিকরা মঞ্চ তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। মাঠের চতুরদিকে সাটানো হয়েছে ব্যানার-ফ্যাষ্টুন। মাঠে কাজ তদারকি করছেন বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের শতাধিক নেতাকর্মী। নেতাকর্মীদের মাঝে বিরাজ করছে প্রাণচাঞ্চল্য।

এদিকে রেজিষ্টারী মাঠের বিভাগীয় সমাবেশের লোকসমাগম ঠেকাতে সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের উপর ধরপাকড়ের তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানিয়েছেন সিলেট জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ। গত রোববার রাতে জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী শামীম ও সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ এক বিবৃতিতে বলেন, গণগ্রেফতার চালিয়ে সমাবেশ বানচাল করা যাবে না। বিভিন্ন উপজেরায় লিফলেট বিতরণকালে ২৩ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

গণগ্রেফতারের নামে গ্রেফতার বন্ধ করে আটক নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবী জানান তারা। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, বিভাগীয় সমাবেশ বানচাল করতে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। এই গ্রেফতারের মাধ্যমে নেতাকর্মীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে, যাতে সমাবেশে লোক সমাগম বন্ধ করা যায়। কিন্তু কোন ষড়যন্ত্রই সফল হবে না। সকর জুলুম-নিপীড়ন ও গণগ্রেফতারকে উপেক্ষা করে আজ রেজিষ্টারী মাঠ নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করবে।
আলাপকালে সিলেট জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক নিজাম উদ্দিন জায়গীরদার বলেন, প্রচার-প্রচারণায় কোন ঘাটতি ছিল না। ব্যাপক লোক সমাগমের প্রস্তুতি শেষ। প্রশাসন যদি কোন প্রতিবন্ধকতা না করে তাহলে রেজিষ্টারী মাঠ লোকারণ্যে পরিণত হবে।

কয়েকদিন থেকে সিলেট নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও জেলার বিভিন্ন উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বিভাগীয় সমাবেশ সফলের লক্ষ্যে প্রস্তুতি সভা ও প্রচারণা চলে। এতে তৃণমূলে এক উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়। কিন্তু গত রোববার রাতে সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের কারণে তৃণমূলে আছে গ্রেফতার আতঙ্ক। তাছাড়া প্রশাসন সমাবেশ করতে দিবে কি দিবে না এ নিয়ে তৃণমূলরা দু’টানায় আছেন। তবে যে কোন মূল্যে সিলেটের এই সমাবেশকে সফল করে স্মরণীয় করে রাখতে চায় সিলেট বিএনপি। আলাপকালে সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে সিলেটে হচ্ছে সমাবেশ। কেন্দ্রীয় এ সমাবেশের জন্য প্রশাসনের অনুমতির প্রয়োজন নেই।

সমাবেশ সফল করতে সোমবার সিলেট-৩ আসনের বিভিন্ন স্থানে লিফলেট বিতরণ করেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী। লিফলেট বিতরণকালে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সারাদেশের মধ্যে সিলেটে হচ্ছে বিএনপির চতুর্থ বিভাগীয় সমাবেশ। এর আগে বরিশাল, রাজশাহী ও চট্টগ্রামে বিএনপি সমাবেশ করেছে। তিনটি সমাবেশেই বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ