শেখ মোঃ হারুনুর রশিদ,চুনারুঘাট(হবিগঞ্জ): ফিলিস্তিনের গাজা ও রাফায় অসহায় শিশু,নারী-পুরুষসহ সকল নিরীহ মানুষের উপর দখলদার ইসরাইলের বর্বর হামলা ও গণহত্যার প্রতিবাদে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
চুনারুঘাট চুনারুঘাট উপজেলা জামায়াত ইসলামীর উদ্যোগে বুধবার (৯এপ্রিল) বাদ আছর বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
চুনারুঘাট বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ থেকে বাদ আছর উপজেলা জামায়াত ইসলামীর কর্মী,সমর্থক ও নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের জনগনের একাংশের উপস্থিতিতে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে মধ্য বাজারে জনসভায় মিলিত হয়।
জনসভায় সভাপতির বক্তব্য রাখেন,চুনারুঘাট জামায়াত ইসলামীর আমীর মাওলানা মোঃ ইদ্রিস আলী।উপজেলা জামায়াত ইসলামীর সহ-সেক্রেটারী হাফেজ ফুয়াদ হাসানের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন হবিগঞ্জ জেলা জামায়াত ইসলামীর সহ-সেক্রেটারী ও চুনারুঘাট উপজেলার শানখলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট নজরুল ইসলাম,বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা জামায়াত ইসলামীর সেক্রেটারী মীর সাহেব আলী,কর্ম পরিষদ সদস্য এমদাদুল হক চৌধুরী,রাণীগাঁও ইউনিয়ন জামায়াত ইসলামীর সভাপতি মোঃ আবু তাহের প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তরা ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরাইলের বর্বর হামলা,গনহত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের তীব্র নিন্দা জানান।আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে বক্তারা বলেন,ফিলিস্তিনের নিরীহ মানুষদের উপর ইসরাইলের আক্রমণ নিঃসন্দেহে মানবাধিকারের লঙ্ঘন এবং এটি বিশ্বব্যাপী সমালোচনার সৃষ্টি করেছে।
চুনারুঘাট তথা দেশের সকল মানুষের উদ্দেশ্যে বক্তারা বলেন, ইসরাইলের সকল পণ্য বর্জন করে আমাদের ঈমানী পরীক্ষা দিতে হবে এবং এর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে বর্তমান সরকারের প্রতি জোরদাবী জানান তারা।বিশ্ববাসী যদি ইসরাইলের অব্যাহত বর্বরতা থামাতে না পারে, তবে আমাদের প্রতিবাদ আরও তীব্র হবে” বলে হুশিয়ারি দেন এবং মানবাধিকার রক্ষায় সকলের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান বক্তারা।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তা’আলা বনী ইসরাইলের ইতিহাস ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন। সূরা বনী ইসরাইলে উল্লেখ করা হয়েছে, এই জাতি পৃথিবীতে দু’বার ফিতনা-ফাসাদ সৃষ্টি করবে এবং আল্লাহ তাদের শাস্তি দেবেন। প্রথমবার, খ্রিস্টপূর্ব ৭২২ অব্দে অ্যাসিরিয়ানরা বনী ইসরাইলকে পরাজিত করে জেরুজালেম ধ্বংস করে। দ্বিতীয়বারের শাস্তি এখনো আসন্ন বলে অনেক মুফাসসির বিশ্বাস করেন।
ইতিহাস অনুযায়ী, অ্যাসিরিয়ান রাজা তৃতীয় তিগলাত পিলেসার এবং পঞ্চম সালমানেসার বনী ইসরাইলের উত্তরাংশ দখল করে তাদের নির্বাসিত করেন। এটিই ছিল দাউদ (আ.) ও সুলাইমান (আ.)-এর প্রতিষ্ঠিত সাম্রাজ্যের পতন। কোরআনে আল্লাহ বলেন, “আমি তাদের বিরুদ্ধে আমার শক্তিশালী বান্দাদেরকে পাঠালাম, যারা সব কিছু ধ্বংস করে দিয়েছিল।” (সূরা বনী ইসরাইল, ১৭:৫)। পরে আল্লাহ তাদের আবার ক্ষমতা দেন, সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দিয়ে সহায়তা করেন।
ইসলামী স্কলারদের মতে, কোরআনে বর্ণিত দ্বিতীয় শাস্তি এখনো ঘটেনি। বর্তমানে ইসরাইল শক্তিশালী সামরিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অবস্থানে রয়েছে, যা অনেকের মতে কোরআনের ভবিষ্যদ্বাণীরই অংশ। ইসলামের বিশ্বাস অনুযায়ী, কিয়ামতের আগে ইমাম মাহদীর নেতৃত্বে মুসলিমরা জেরুজালেম পুনর্দখল করবে, যা বনী ইসরাইলের জন্য দ্বিতীয় ধ্বংসযজ্ঞ হিসেবে গণ্য হবে।
কোরআনের বর্ণনা ও ঐতিহাসিক ঘটনাবলির মধ্যে স্পষ্ট মিল রয়েছে। বনী ইসরাইলের অতীত শাস্তি ইতিহাসে প্রমাণিত, আর ভবিষ্যতের বিষয়টি আল্লাহর হুকুমের ওপর নির্ভরশীল।