• Youtube
  • English Version
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৪:৪৬ অপরাহ্ন

করাঙ্গী নিউজ
স্বাগতম করাঙ্গী নিউজ নিউজপোর্টালে। ১৫ বছর ধরে সফলতার সাথে নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশন করে আসছে করাঙ্গী নিউজ। দেশ বিদেশের সব খবর পেতে সাথে থাকুন আমাদের। বিজ্ঞাপন দেয়ার জন‌্য যোগাযোগ করুন ০১৮৫৫৫০৭২৩৪ নাম্বারে।

সাংবাদিক মামুনকে শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান

  • সংবাদ প্রকাশের সময়: সোমবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৬

নিজস্ব প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়নের দেউন্দি চা-বাগানে অবস্থিত প্রতীক থিয়েটার পথে ও মঞ্চে তিন দশক উপলক্ষ্যে তিন দিনব্যাপী বৈশাখী অনুষ্ঠানমালা সমাপ্ত হয়েছে।

অনুষ্ঠানের ১ম দিন পয়লা বৈশাখ সকালে সমবেত প্রার্থনা, বিকেলে আনন্দ র‌্যালী, সন্ধ্যায় এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন দেউন্দি চা-বাগানের ব্যবস্থাপক মোঃ রিয়াজ উদ্দিন। এরপর প্রদীপ প্রজ্বলন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বৈশাখী গান, লাঠি নাচ, ঝুমুর নৃত্য, রবীন্দ্র নৃত্য শেষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এতে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের, নাট্যভাস্কর ড. মুকিদ চৌধুরী নাট্য ব্যক্তিত্ব, বিশিষ্ট নাট্যজন লিটন আব্বাস, বিশিষ্ট চিত্র নির্মাতা মুক্তাদির ইবনে ছালাম, ইউপি চেয়ারম্যান ওয়াহেদ আলী, বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি বজেন্দ্র সাঁওতাল।

‘রাতে নাটক “পূজার সাঁজ” (ভিডিও প্রদর্শনী) মূলগল্প-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নাট্যরুপ নির্দেশক সুনীল বিশ্বাস, পরিবেশনায় প্রতীক লিটল থিয়েটার’ “নাট্য হৈমন্তী” মূলগল্প-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নাট্যরুপ সুনীল বিশ্বাস, শৈলী নির্দেশনায় ড. মুকিদ চৌধুরী, পরিবেশনায় প্রতীক থিয়েটার।

২য় দিন ২ বৈশাখ সন্ধ্যায় শিশু নাটক “কেন এমন হয়” রচনা ও নির্দেশনায় সুনীল বিশ্বাস, পরিচালনায় শিমূল, বিজিত, প্রান্তিক, শাকিল, পরিবেশনায় নিউ প্রতীক লিটল থিয়েটার, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চা শ্রমিকের গানে শিল্পী সুমন, মিন্টু, রূপম, বৃষ্টি, বর্ষা ও রনি, তবলায় কানন বিশ্বাস, রাতে নাটক “আশোকানন্দ” রচনা ও শিল্প নির্দেশনা ড. মুকিদ চৌধুরী, পরিচালনায় সুশীল আচার্য্য, পরিবেশনায় ডাকাতিয়া থিয়েটার লাকসাম, নাটক “রাজাবলী” রচনা ও শৈলী নির্দেশনা ড. মুকিদ চৌধুরী, পরিচালনায় শাহজাহান শোভন, পরিবেশনায় নাট্যভূমি ঢাকা।

৩য় দিন সন্ধ্যায় আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের সেক্রেটারী জেলারেল মোঃ আক্তারুজ্জামান, ময়মনসিংহ ত্রিশাল কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার এন্ড পারফর্মমেন্স স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আল জাবির। সন্ধ্যায় নাটক “তারকাঁটার ভাজে” রচনায় ও শৈলী নির্দেশনায় ড. মুকিদ চৌধুরী, পরিচালনায় সুনীল বিশ্বাস,  পরিবেশনায় প্রতীক থিয়েটার, রাতে নাটক “বীরাঙ্গণার বয়ান” রচনা রওশন জান্নাত   রোশনী, নির্দেশনায় দেবাশীষ ঘোষ, পরিবেশনায় শব্দনাট্য চর্চাকেন্দ্র ঢাকা, নাটক “সাত কন্যার কাহান” মূলগল্প সৈয়দ শাহানুর, নাট্যরুপ রুমা মোদক, নির্দেশনায় সুশান্ত কুমার সরকার, পরিবেশণায় নবশিখা নাট্যদল সিলেট, সবশেষে র‌্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হয়।

এছাড়া চা-শ্রমিকদের জীবন জীবিকা ও পরিবেশ নিয়ে লেখালেখি করায় প্রতীক থিয়েটারের পক্ষ থেকে সাংবাদিক মোঃ মামুন চৌধুরীকে শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করা হয়েছে। বৃষ্টির কারণে অনুষ্ঠানে মামুন চৌধুরী যোগদান করতে পারেনি। তাই পরে (১৭ এপ্রিল) প্রতীক থিয়েটারের পক্ষ থেকে সভাপতি সুনীল বিশ্বাস আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিক মোঃ মামুন চৌধুরীকে তারবাড়িতে এসে শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করেন।

প্রতীক থিয়েটার সভাপতি উৎসব কমিটি’র আহবায়ক সুনীল বিশ্বাস বলেন- ‘সাংবাদিক মামুন চৌধুরী চা-শ্রমিকদের জীবনকথা ও পরিবেশ রক্ষায় পত্রিকায় লিখে যাচ্ছেন। তার অব্যাহত এ চেষ্টাকে আমাদের পক্ষ থেকে সম্মান জানিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘কর্মস্থল থেকে বাসায় ফিরে নাটক লেখা চা-শ্রমিকদের জন্য। চা-শ্রমিকরাও মানুষ। তাদের জীবন রয়েছে। তারাও এদেশের বাসিন্দা। তাদের শ্রমে অর্জিত হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা। তারা কেন অবহেলায় পড়ে থাকবে। তাই প্রতীক থিয়েটারের নাঠ্যকর্মের মাধ্যমে শ্রমিকদের সুখ দুঃখ ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছি।’

তিনি বলেন, প্রতীক থিয়েটার আজ বাগানেই সীমাবদ্ধ নয়। এ পথ পেরিয়ে পা রাখছে ৩০তম বছরে। এরমধ্যে এ থিয়েটারের অর্ধশতাধিক সদস্য বয়ে নিয়ে এসেছেন নানাভাবে সফলতা। থিয়েটারের সহ-সভাপতি আমোদ মালের চাওয়া পাওয়া সংগীত চর্চায়। তার কাজ হলো শ্রমিক সন্তানদের নৃত্য, গানে ও নাটকে পারদর্শী করে গড়ে তোলা।

থিয়েটারের কোষাধ্যক্ষ বিদ্যা বাকতী ব্যস্ত ছিলেন কিভাবে অনুষ্ঠানকে আরো আকর্ষণীয় করা যায়। এ জন্য কমিটির সবার সাথে নিজেকে উজাড় করে দেন। এ বরণে যোগদানে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যাল, কলেজ, স্কুল   পড়–য়া বাগান শ্রমিকদের সন্তানরা ছুটি নিয়ে এসেছিল। এতে করে বাগানে প্রাণের মেলায় মেতে উঠে উৎসব।

থিয়েটারের শিশু শিল্পী প্রিয়াংকা বাউড়ি, বর্ষা ঘোষ, পপি বাউড়িরা বলেন, আমরা বাগানের হলেও এদেশের মানুষ। সংগীত, নাটক, নৃত্যের মাধ্যমে চা-শিল্পের ঐতিহ্যকে ধরে রেখে আমরা আরো এগিয়ে যেতে চাই।’

নারী শ্রমিকরা বসে ছিলেন না। তারা নববর্ষের রংয়ে রাঙিয়ে দিতে নতুন শাড়ি কাপড় ক্রয়ে ব্যস্ত সময় পার করেছেন। এক কথায় এ বাগানে উৎসবের পূর্বেই শুরু হয়েছিল নতুন উৎসব। বাগান কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের প্রাণের এ উৎসব সফলে নানাভাবে সহযোগীতা করেছেন। তার সাথে নিকটবর্তীরাও এতে সহায়তায় উদার ছিলেন।

উল্লেখ্য, জেলার নবীগঞ্জ, বাহুবল, চুনারুঘাট, মাধপুরের পাহাড়ি এলাকায় দেউন্দিসহ প্রায় ৩৫টি চা-বাগান রয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ