• Youtube
  • English Version
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৩৭ পূর্বাহ্ন

করাঙ্গী নিউজ
স্বাগতম করাঙ্গী নিউজ নিউজপোর্টালে। ১৫ বছর ধরে সফলতার সাথে নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশন করে আসছে করাঙ্গী নিউজ। দেশ বিদেশের সব খবর পেতে সাথে থাকুন আমাদের। বিজ্ঞাপন দেয়ার জন‌্য যোগাযোগ করুন ০১৮৫৫৫০৭২৩৪ নাম্বারে।

বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস আজ

  • সংবাদ প্রকাশের সময়: সোমবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৬

করাঙ্গীনিউজ:  আজ ২৫ এপ্রিল। বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস। মশাবাহিত সংক্রামক রোগগুলোর মধ্যে, ম্যালেরিয়া অন্যতম। যার জন্য দায়ী প্লাজমোডিয়াম গোত্রের প্রোটিস্ট নামের একটি অণুজীব। অ্যানোফিলিস নামক স্ত্রী মশার কামড়ে এই রোগ হয়। ম্যালেরিয়া রোগ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার লক্ষ্য নিয়ে প্রতিবছরের মত এবারো বাংলাদেশে পালিত হতে যাচ্ছে ‘বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস-২০১৬। এবারের প্রতিপাদ্য এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য “সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য ম্যালেরিয়া শেষ করুন” (End malaria for good)।

বিশ্বের প্রায় অর্ধেক মানুষ (৩২০ কোটি) ম্যালেরিয়ার ঝুঁকিতে আছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের ১৩ জেলার এক কোটি ৩২ লাখ ৫০ হাজার মানুষ ম্যালেরিয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

১৩টি জেলার ৭২টি উপজেলায় ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব সর্বাধিক। প্রতিবছর ম্যালেরিয়া রোগজনিত অসুস্থ্যতা ও মৃত্যু প্রায় শতকরা ৯৮ ভাগ সংঘটিত হয়ে থাকে ভারত ও মিয়ানমার সীমান্তসংলগ্ন এই ১৩টি জেলায়। এর মধ্যে রয়েছে সিলেটের চার জেলা। ম্যালেরিয়া আক্রান্ত জেলাগুলো হলো- রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, ময়মনসিংহ, শেরপুর, নেত্রকোণা ও কুড়িগ্রাম। প্রাদুর্ভাবের মাত্রা অনুযায়ী জেলাগুলোকে আবার ৩টি স্তরে ভাগ করা হয়েছে। যেমন- পার্বত্য চট্টগ্রামের ৩টি জেলা উচ্চ ম্যালেরিয়াপ্রবণ; কক্সবাজার মধ্য ম্যালেরিয়াপ্রবণ এবং বাকি ৯টি জেলা কম ম্যালেরিয়াপ্রবণ।

তাই ম্যালেরিয়া ঝুঁকির মধ্যে বাস করছে সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের মানুষ। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের তথ্যমতে ম্যালেরিয়া থেকে বাঁচতে এ অঞ্চলের ৭৫ শতাংশ মানুষ কীটনাশকযুক্ত মশারি দিয়ে রাতে ঘুমায়। তবে দিনে ঝোঁপ-ঝাড় থেকে বেরিয়ে আসা মশার আক্রমণ থেকে কিভাবে তারা রক্ষা পাবে এ প্রশ্নের উত্তর মিলছে না।

এ অবস্থায় আজ পালন হচ্ছে বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস। দিবসটি নিয়ে সিলেটে বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে সরকারিভাবে বড় কোনো কর্মসূচি নেই। জেলা পর্যায়ে শুধু আলোচনা সভা আর র‌্যালির। তবে আক্রান্ত উপজেলাসমূহে রয়েছে সচেতনতা বিষয়ক কর্মসূচি। সিলেট বিভাগে ম্যালেরিয়া নিয়ে যেসব এনজিও সংস্থা কাজ করছে তাদের তথ্যমতে- মৌলভীবাজার জেলার সবক’টি উপজেলা, কম ঝুঁকিপূর্ণ ৯টি জেলার মধ্যে মৌলভীবাজার একমাত্র জেলা, যা সবক’টি উপজেলাই ম্যালেরিয়াপ্রবণ।

সর্বশেষ জুড়ি উপজেলা এর অন্তর্গত হয়েছে। সিলেট জেলার ৪টি উপজেলা (কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইঘাট, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর), হবিগঞ্জ জেলার ২টি উপজেলা (মাধবপুর, চুনারুঘাট) এবং সুনামগঞ্জ জেলার ৭টি উপজেলা (সদর, সদর দক্ষিণ, তাহিরপুর, ছাতক, দোয়ারাবাজার, ধর্মপাশা, বিশ্বম্ভরপুর) ম্যালেরিয়া প্রবণ।

তবে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী ২০১৪ সালে অন্তত আরো ৫টি উপজেলা থেকে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত রোগীরা এ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ উপজেলাগুলো হলো- জগন্নাথপুর, জামালগঞ্জ, হবিগঞ্জ সদর, নবীগঞ্জ ও সিলেট সদর। আশার কথা- সিলেটে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের হার দ্রুত কমছে, ২০১৩ সালে সিলেট বিভাগে মোট ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা ১,০৮০ হলেও ২০১৪ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪৫৯ জনে। ২০১৫ সালে আক্রান্তের সংখ্যা আরো কমে হয়েছিল ১৭৫।

২০১৬ সালে প্রথম ৩ মাস মাসভিত্তিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে জানুয়ারি ১০, ফেব্রুয়ারি ১১ ও মার্চ ২, যা ক্রমবর্ধমান নিম্নমুখি ধারাকে নির্দেশ করে। এ সাফল্য বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি এবং এর সহযোগী হিসেবে কর্মরত এনজিওসমূহের।

বিশ্লেষকদের মতে স্বাধীনতার আগে এ অঞ্চলে ব্যাপক ভিত্তিতে ডিডিটি প্রয়োগ করা হলে অন্যান্য মশার সাথে ম্যালেরিয়ার জীবাণুবাহী মশার উপদ্রবও কমে যায়। তবে সীমান্ত ও পার্বত্য অঞ্চলের ঘন ঝোঁপ-ঝাড় ও বনাঞ্চলে জীবাণুবাহী কিছু মশা থেকেই যায়। এখান থেকেই পরে দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়ে ম্যালেরিয়া।

তারা বলেন- এখনো ম্যালেরিয়া পৃথিবীজুড়ে একটি ঘাতকরোগ হিসেবে পরিচিত। প্রতি বছর প্রায় ১০ লাখ লোক এ রোগে প্রাণ হারায়। আর ৮৫ ভাগ মৃত ব্যক্তিই হলো পাঁচ বছরের নিচের শিশু। এ রোগ যদিও আফ্রিকা মহাদেশের প্রধান রোগ, তবু এখনো এশিয়া ও ল্যাতিন আমেরিকার বড় অংশজুড়ে রয়েছে ম্যালেরিয়া। সেই প্রাচীনকাল থেকে মানবজাতির জন্য আতঙ্ক হয়ে ছিল আর এখনো এই গ্রহের ১০৯টি দেশের ৩২০ কোটি মানুষ রয়েছে ম্যালেরিয়ার ঝুঁকিতে।

তথ্যমতে- প্রতি বছর ৩৫০ থেকে ৫০০ মিলিয়ন লোক পৃথিবীতে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয় এর মধ্যে রয়েছে আমাদের দেশও। বাংলাদেশের ১৩টি জেলার ৭১টি উপজেলায় ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব সর্বাধিক। প্রতি বছর ম্যালেরিয়া রোগজনিত অসুস্থ্যতা ও মৃত্যুর প্রায় শতকরা ৯৮ ভাগ সংঘটিত হওয়া সীমান্ত ও পাহাড় সংলগ্ন দেশের ১৩টি জেলার মধ্যে রয়েছে সিলেট বিভাগের চার জেলা সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ। প্রাদুর্ভাবের মাত্রা অনুযায়ী জেলাগুলোকে আবার ৩টি স্তরে ভাগ করা হয়েছে। যেমন- পার্বত্য চট্টগ্রামের ৩টি জেলা উচ্চ ম্যালেরিয়াপ্রবণ; কক্সবাজার মধ্য ম্যালেরিয়াপ্রবণ এবং বাকি ৯টি জেলা কম ম্যালেরিয়াপ্রবণ। সিলেট বিভাগের ৪টি জেলাতেই ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব আছে।

বিশ্লেষকরা জানান- এ সময়ে থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ আগের চেয়ে বেড়েছে। তারা মনে করেন- ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মকান্ডের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা। কোনো কারণে অর্থায়নের অভাব ঘটলে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা যেমন বাড়তে পারে তেমনি এসব অঞ্চলে মৃত্যুর ঝুঁকিও বেড়ে যাবে। তাই ম্যালেরিয়ার সাফল্য ধরে রাখতে শতকরা ৯৮ ভাগ সংগঠিত হওয়া সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় ম্যালেরিয়া নিধন ও সচেতনতা কর্মসূচি অব্যাহত রাখা উচিত।

সিলেট বিভাগে ব্র্যাকের নেতৃত্বে ৮টি এনজিও কাজ করছে। এছাড়াও সারা দেশে ব্র্যাকসহ ২১টি এনজিও’র সমন্বয়ে গঠিত কনসোর্টিয়াম ২০০৭ সাল থেকে এ কাজ করে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে শক্তিশালী ও সম্প্রসারিত করার জন্য গ্লোবাল ফান্ড টু ফাইট এইডস, টিউবারকিউলোসিস এন্ড ম্যালেরিয়া (GFATM) থেকে আর্থিক সহায়তা লাভ করেছে। এছাড়া এইচপিএনএসডিপি’র আওতায় যুক্তরাজ্য সরকারের ডিএফআইডি’র নেতৃত্বে যুক্তরাজ্যসহ মোট ৪টি দেশের দাতা সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত কনসোর্টিয়াম-জয়েন্ট ডোনার টেকনিক্যাল অ্যাসিসটেন্স ফান্ড (JDTAF) এ কাজকে আরো বেগবান করার জন্য ৩ জন সার্ভিলেন্স মেডিকেল অফিসার পদায়নের ব্যবস্থা করেছে। তবে ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সার্বিক সাফল্যের জন্য আরো ব্যাপক অর্থায়ন প্রয়োজন বলে মনে করেণ বিশ্লেষকরা।

সেজন্যই ২০১৩ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত একই প্রতিবাদ্য বিষয় নিয়ে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ম্যালেরিয়া আক্রান্ত দেশ ও অঞ্চলে দিনটি পালিত হয়ে আসছিল। কারণ দেখা গেছে যদিও বিগত বছরগুলোতে ম্যালেরিয়া রোগ প্রতিরোধ, নির্ণয় ও চিকিৎসায় একটা গুরুত্বপূর্ণ গতি এসেছে, কিন্তু বার্ষিক ৩.৬ বিলিয়ন ইউএস ডলারের অর্থাভাব কার্যক্রমের গতিকে নিম্নমুখি করার ঝুঁকি তৈরি করেছে। যদি বিশ্ব অর্থায়নের এ শূন্যতা পূরণ করার উপায় খুঁজে না পায় এবং ম্যালেরিয়া উপদ্রæত দেশগুলো ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ ও কারিগরী সহায়তা না পায়, তবে ম্যালেরিয়ার পুনরার্বিভাব হয়ে আরো অনেক মূল্যবান জীবন কেড়ে নেবে।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন- বাংলাদেশের ভারত সীমান্ত ও মিয়ানমারের বিশাল পার্বত্যাঞ্চল রয়েছে। দুই দেশের পার্বত্যাঞ্চল থেকে ম্যালেরিয়া জীবাণুবাহী মশা ধীরে ধীরে চলে আসে আমাদের লোকালয়ে। এভাবে নির্মূলের পর্যায়ে থাকা সত্তে¡ও দ্রুত বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ে ম্যালেরিয়া।

সিলেট স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়- ‘দ্রুত রোগ নির্ণয় ও কার্যকর চিকিৎসার কারণে সর্বত্র ম্যালেরিয়ায় মৃত্যু সংখ্যা কমে যাচ্ছে। বাংলাদেশে ২০০৮ সালে প্রতি লাখে ৭৭৬ জন ম্যালেরিয়া আক্রান্ত রোগী পাওয়া যেতো। এর ওপর ভিত্তি করে সরকার ২০১৫ সালের মধ্যে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা প্রতি লাখে গড়ে ৩১০-এ নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করে। কিন্তু সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে রোগটি নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেয়ায় ২০১৩ সালেই প্রতি লাখে আক্রান্তের সংখ্যা ২০২-এ নামিয়ে আনতে আমরা সক্ষম হওয়ায়। অনেকটা সফল এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য পরির্বতন করা হয়েছে “সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য ম্যালেরিয়া শেষ করুন” (End malaria for good)।

পরীক্ষায় ম্যালেরিয়া ধরা পড়লে প্রাথমিক পর্যায়ে মাত্র ৩ দিন পূর্ণ মাত্রায় ঔষধ সেবন করলে ম্যালেরিয়া সম্পূর্ণ ভাল হয়। ওয়ান স্টপ সার্ভিস হিসেবে যেখানে বিনামূল্যে রক্ত পরীক্ষ ম্যালেরিয়া নির্মূলে বর্তমানে কার্যকর ও সহজ ওষুধ আবিষ্কারের পাশাপাশি সহজে নির্ণয়ের পদ্ধতিও আবিষ্কৃত হয়েছে। বর্তমানে যেখানেই ম্যালেরিয়া সেখানেই টেস্টের ব্যবস্থা এবং সেখান থেকেই চিকিৎসা শুরুর ব্যবস্থা হয়েছে।

ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা সিলেটে মাঠপর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীরাও দিতে পারছেন। রক্ত পরীক্ষার জন্য এখন আর ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে হয় না। ডায়াগনস্টিক করতে মাইক্রোবায়োলজিস্টও লাগে না, প্রয়োজন নেই মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টও। স্বাস্থ্যকর্মীরা টেস্টকিট দিয়ে ১৫ মিনিটেই জানিয়ে দিতে পারছেন ম্যালেরিয়া হয়েছে কি না। এছাড়াও সিলেটের এনজিওসমূহের ল্যাবরেটরি, কমিউনিটি ক্লিনিক, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, এলাকার সরকারি/বেসরকারী স্বাস্থ্যকর্মী, জেলা সদর হাসপাতাল এবং মেডিকেল কলেজ হাসপতালে এ উভয় প্রকারের পরীক্ষার ব্যবস্থা আছে।

সেখানেই বিনামূল্যে ঔষধও প্রদান করা হয় এবং রোগ ভাল হলো কি-না কিংবা রোগী ঠিকমত ঔষধ খাচ্ছে কি-না, তা এনজিও কর্মীরা রোগীর বাড়ি গিয়ে ফলো-আপ করেন। ম্যালেরিয়া মশার আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য গ্লোবাল ফান্ডের সহায়তায় সরকার ম্যালেরিয়া প্রবণ সিলেট বিভাগে ২০১৫ইং সনে দু’পর্যায়ে মোট ৬ লক্ষ ৫৯ হাজার ৫০০টি কীটনাশকযুক্ত (এলএলআইএন) মশারি বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে, যা শতকরা ৩৫ ভাগ জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দিয়েছে। মধ্য ও উঁ”ু ঝুুঁকিপূর্ণ ৪টি জেলার শতকরা ১০০ভাগ জনগোষ্ঠী এই মশারী সুরক্ষার আওতায় এসেছেন।

চলতি ও আগামী বছর আরো কয়েক লাখ মশারি বিনামূল্যে বিতরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সিলেটের সীমান্তবর্তী চার জেলা। চিকিৎসকদের মতে, ম্যালেরিয়া জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে শনাক্ত হলে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসা শুরু করতে পারলে এবং পূর্ণমাত্রায় ওষুধ সেবন করানো হলে মৃত্যুঝুঁকি থাকে না। তারা বলেন- বাংলাদেশে ব্যবহৃত ম্যালেরিয়ার ওষুধ (কোয়ার্টেম) শতভাগ কার্যকর।

সিলেট বিভাগীয় সার্ভিলেন্স মেডিকেল অফিসার-ম্যালেরিয়া, ডা. ওমর ফারুক উত্তরপূর্বকে বলেন-  ম্যালেরিয়া জীবানুর বাহক নিয়ন্ত্রণ কমিউনিটি পর্যায়ে রোগটি প্রতিরোধের প্রধান উপায় হল- ব্যক্তি পর্যায়ে মশার কামড় থেকে নিজেকে সুরক্ষা করা। এজন্য সিলেট বিভাগে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ইং সনে তিন লক্ষ পঁচিশ হাজার পাঁচশতটি বিতরণকৃত দীর্ঘস্থায়ী কীটনাশকযুক্ত মশারী প্রতিদিন সন্ধ্যা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টানানো। রাতের বেলা বিশেষ করে ঘরের বাইরে গেলে হাত-পা ঢাকা থাকে, এমন কাপড় পরিধান করা।

সম্ভব হলে শরীরের অনাবৃত অংশ মশা বিতাড়ক ক্রিম বা লোশন এবং ঘরের দরজা জানালায় নেট বা জাল ব্যবহার করা। মশা তাড়াবার ধোয়া যেমন-মশার কয়েল ইত্যাদি ব্যবহার করা। মশা ডিম পাড়ে ও বংশ বিস্তার ঘটায়, এমন অপ্রয়োজনীয় ডোবা, গর্ত, নর্দমা ভরাট করে ফেলা।

স্থায়ী আবদ্ধ জলাশয়ে শূককীটখেকো মাছ যেমন- তেলাপিয়া, গাপ্পি, নাইলোটিকা ইত্যাদি কার্প জাতীয় মাছ চাষ করা।
সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদেরকে তাদের পরিবার ও আশ-পাশের বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার জন্য ৩টি বার্তা শেখানো-১. জ্বর হলে ম্যালেরিয়া হতে পারে। ২. ম্যালেরিয়া সনাক্ত করার জন্য বিনামূল্যে রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা আছে। ৩. পরীক্ষায় ম্যালেরিয়া ধরা পড়লে বিনামূল্যে ঔষধ পাওয়া যায়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ