• Youtube
  • English Version
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৪৯ অপরাহ্ন

করাঙ্গী নিউজ
স্বাগতম করাঙ্গী নিউজ নিউজপোর্টালে। ১৫ বছর ধরে সফলতার সাথে নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশন করে আসছে করাঙ্গী নিউজ। দেশ বিদেশের সব খবর পেতে সাথে থাকুন আমাদের। বিজ্ঞাপন দেয়ার জন‌্য যোগাযোগ করুন ০১৮৫৫৫০৭২৩৪ নাম্বারে।

বিশ্বনাথে দাফনের ২৮ দিন পর নারীর লাশ উত্তোলন

  • সংবাদ প্রকাশের সময়: সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

বিশ্বনাথ (সিলেট) প্রতিনিধি: দাফনের ২৮ দিন পর সিলেটের বিশ্বনাথে কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে ৪ সন্তানের জননী আয়ফুল বেগম (৫৫)’র লাশ।

সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আদালতের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাতেমা-তুজ-জোহরার উপস্থিতিতে উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের দোহাল গ্রামস্থ মরহুমার পারিবারিক কবরস্থান থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়।

আয়ফুল বেগম দোহাল গ্রামের মৃত ফজর আলীর স্ত্রী এবং ২ কন্যা ও ২ পুত্র সন্তানের জননী।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ আগস্ট দিবাগত রাতে নিজ বসতঘরে মারা যান আয়ফুল বেগম। পরদিন তাকে দাফনও করা হয়। লাশ দাফনের পর ঘরে রক্ষিত ১ লাখ টাকা খুঁজে না পাওয়ায় আয়ফুল বেগমের বড় মেয়ে নাসিমা বেগমের সন্দেহ হয় যে ওই টাকার জন্য তার মাকে হত্যা করা হয়েছে। আর তাই মাকে (আয়ফুলল বেগম) হত্যা করার অভিযোগ এনে গত ৭ আগস্ট থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন নাসিমা বেগম।

নাসিমার অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই দিনই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একই গ্রামের মনু মিয়ার ছেলে (আয়ফুল বেগমের ভাইয়ের মেয়ের জামাই) নূর উদ্দিন (৩৫)’কে আটক করে থানা পুলিশ।

প্রাথমিক বিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে নূর উদ্দিন স্বীকার করে সে আয়ফুল বেগমের ওই ১ লাখ টাকা চুরি করার জন্যই ঘুমের ঔষধ খাইয়ে আয়ফুল বেগমকে হত্যা করেছে। এঘটনায় ৮ আগস্ট নূর উদ্দিনকে একমাত্র অভিযুক্ত করে বিশ্বনাথ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন খুন হওয়া আয়ফুল বেগমের বড় মেয়ে নাসিমা বেগম।

এদিকে ঘটনার সুষ্ট তদন্তের স্বার্থে ও মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয় করতে নিহত আয়ফুল বেগমের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য অনুমতি প্রার্থনা করে আদালতে আবেদন জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিশ্বনাথ থানার এসআই দেবাশীষ শর্ম্মা।

ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাতেমা-তুজ-জোহরার উপস্থিতিতে সোমবার কবর থেকে আয়ফুল বেগমের লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্তের মর্গে প্রেরণ করা হয়।

‘মায়ের হত্যাকারী নূর উদ্দিনের ফাঁসি’ দাবি করে আয়ফুল বেগমের মেয়ে নাসিমা বেগম স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, আমার মা (আয়ফুল বেগম) গত ২৮ জুলাই নূর উদ্দিনকে সাথে নিয়ে ঘর নির্মাণের জন্যে একটি এনজিও সংস্থা থেকে এক লাখ টাকা ঋণ উত্তোলন করেন। এরপর থেকে এই টাকা আত্মসাৎ করতে সে (নূর উদ্দিন) আমার মাকে কৌশলে ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে আসছিল। একইভাবে গত ৩ আগস্ট রাতেও তাকে (আয়ফুল) ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে ওই রাতেই কোনো এক সময়ে নিজের শয়ন কক্ষে তাকে (আয়ফুল) হত্যা করে নূর উদ্দিন।

পরদিন সকালে সবার আগে রহস্যজনকভাবে চা নিয়ে এসে আমার মাকে ডাকাডাকি শুরু করে ঘাতক নূর। আমার মা দরজা না খুলায় পরবর্তিতে এলাকার লোকজন দরজা খুলে মাকে উদ্ধার করেন। এ সময় তার মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছিল এবং তার বুক ফুলা ছিল। কক্ষের কার্পেটের নীচে ছিল ঘুমের ট্যাবলেটের খোসা। মাকে উদ্ধার করা হলেও তার পুরো শয়ন কক্ষ খুঁজেও ঋন হিসেবে এনজিও থেকে উত্তোলন করা ওই ১ লাখ টাকার কোনো হদিস মেলেনি। টাকার বিষয়ে কিছু জানো কিনা-এমন প্রশ্ন করলে নূর উদ্দিন সন্দেহজনক কথাবার্তা বলে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিশ্বনাথ থানার এসআই দেবাশীষ শর্ম্মা বলেন, আদালতের নির্দেশে আয়ফুল বেগমের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয় এবং মূল রহস্য উদঘাটন হবে।

আয়ফুল বেগমের লাশ আদালতের নির্দেশে দাফনেরর ২৮ দিন পর উত্তোলন করার সত্যতা স্বীকার করেছেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাতেমা-তুজ-জোহরা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ