করাঙ্গী নিউজ
স্বাগতম করাঙ্গী নিউজ নিউজপোর্টালে। ১৫ বছর ধরে সফলতার সাথে নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশন করে আসছে করাঙ্গী নিউজ। দেশ বিদেশের সব খবর পেতে সাথে থাকুন আমাদের। বিজ্ঞাপন দেয়ার জন‌্য যোগাযোগ করুন ০১৮৫৫৫০৭২৩৪ নাম্বারে।

রোজার বাজার থেকে কিনে নেই ক্ষমার সদাই

  • সংবাদ প্রকাশের সময়: শনিবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৩

ইসলাম ডেস্ক: মাহে রমজানের অর্ধেক শেষ হয়েছে। যারা সিয়াম সাধনায় এ পনেরোটি দিন কাজে লাগিয়েছেন, চোখ বন্ধ করে বলা যায়, এ মুহূর্তে পৃথিবীতে তাদের চেয়ে সৌভাগ্যবান আর কেউ নেই। তাদের চেয়ে ধনী, তাদের চেয়ে জ্ঞানী দ্বিতীয় কাউকে পাওয়া যাবে না। একইভাবে যারা এ পনেরোটি দিন অবহেলা-অলসতায় কাটিয়ে দিয়েছেন, শুরুর কয়েক দিন মসজিদে আসা-যাওয়া করে এখন মসজিদ-কুরআন ভুলে গেছে, তাদের চেয়ে হতভাগ্য-পোড়া কপাল আল্লাহর দুনিয়ায় কেউ নেই।

সহি ইবনে হিব্বানের বর্ণনায় এসেছে, একদিন নবিজি (সা.) মিম্বরের সিঁড়িতে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলেন আমিন। পরের সিঁড়িতেও পা রেখে বললেন, আমিন। আমিন বললেন, তৃতীয় সিঁড়িতে পা রেখেও। বলা নেই, কওয়া নেই, হঠাৎ এমন করুণ সুরে ব্যথাভরা মনে আমিন আমিন বলার রহস্য কী-সাহাবিরা জানতে চাইলেন। মলিন মুখে নবিজি (সা.) বললেন, আমার প্রিয় সাহাবিরা, একটু আগেই জিবরাইল (আ.) এসেছিল আমার কাছে। বড় বেদনার কথা বলে গেল সে। আমি যখন প্রথম সিঁড়িতে পা রাখি, জিবরাইল বলল, বৃদ্ধ বাবা-মাকে পেয়েও যে জান্নাত অর্জন করতে পারল না, তার জন্য ধ্বংস। আমি বললাম, আমিন। দ্বিতীয় সিঁড়িতে যখন পা রাখি, জিবরাইল বলল, যে আপনার নাম শুনবে কিন্তু দরুদ শরিফ পড়বে না, তার জন্য ধ্বংস। আর যে রমজান মাস পাবে, কিন্তু নিজের গোনাহ মাফ করিয়ে নিজেকে জান্নাত উপযোগী মানুষ বানাতে পারবে না, তার জন্যও ধ্বংস। তৃতীয় সিঁড়িতে পা রাখার সময় এ দোয়া করে জিবরাইল। আমি বললাম, আমিন। (হাদিস নম্বর ৪১০।)
Advertisement

আমরা যখন টাকা-পায়সা হারাই, ঋণে জর্জরিত হই, প্রিয়জন কাউকে চিরতরে বিদায় দিই, মামলা-মোকদ্দমায় পড়ে নিজের সর্বস্ব হারিয়ে ফেলি, ব্যবসা-বাণিজ্যে লোকসান হয়, চাকরি চলে যায়, তখন আমাদের মানসিকতা কেমন হয়? কেমন লাগে আমাদের ভেতরে? এমন কত দেখেছি টাকার শোকে, জমির শোকে স্ট্রোক পর্যন্ত করে মানুষ। কেউ মরে যায়, কেউ প্যারালাইজড হয়ে বিছানায় পড়ে থাকে বছরের পর বছর। দুনিয়ায় যত বড় ক্ষতিই হোক না কেন তা পূরণ হয়, পূরণ করা যায়, পূরণ না হলেও খুব বেশি অসুবিধা নেই। কারণ এ দুনিয়া চিরস্থায়ী নয়। একদিন দুনিয়া ও দুনিয়ার সবকিছু ছেড়ে চলে যেতে হবে আমাকে। ঘটনাক্রমে সম্পদ-স্বজন একটু আগেই না হয় আমার হাতছাড়া হয়েছে। এতটুকুই।

কিন্তু বন্ধু, যে পনেরোটি দিন আমাদের জীবন থেকে চলে গেল, আখেরাতের চিরস্থায়ী জীবনকে সুন্দর-সুশোভিত করার সুবর্ণ সুযোগ যাদের হাতছাড়া হয়েছে, তা কি কোনোভাবেই পূরণ করা সম্ভব? যে মানুষটি আজ সকালে মারা গেছে, যে তরুণ বন্ধুটির হায়াত আজকালের মধ্যে শেষ হবে, তারাও তো ভেবেছিল আরও কয়টা দিন যাক, তারপর পাপ ছেড়ে দেব। প্রভুর কদমে সেজদায় লুটিয়ে পড়ব। প্রভু আমাদের মাফ করে দেবেন। প্রভু তো মাফ করবেনই। কিন্তু আমরা যে মাফ চাইতে পারব সে নিশ্চয়তা কোথায়! আর এভাবেই যদি মাফ না নিয়ে কবরে চলে যাই, তখন কী হবে আমাদের? কীভাবে সহ্য করব কবরের কঠিন আজাব।

আশার কথা হলো, চৌদ্দ বা পনেরোটি শুভ দিন এখনো বাকি আছে। হে আমার ভাই, হে আমার বন্ধু, শয়তানের সব মনভোলানো রঙিন আশা উড়িয়ে গা ঝেড়ে দাঁড়ান। আসুন, সামনের দিনগুলোর প্রতিটি মুহূর্ত আল্লাহকে রাজিখুশি করানোর সাধনায় কাটিয়ে দিই। মনে রাখবেন, যে সুযোগ চলে যায়, তা আর ফিরে আসে না। করছি, করব, ভালো হচ্ছি, হব-এসব কথা আসলে শয়তানের ধোঁকা ছাড়া কিছুই নয়। আল্লাহতায়ালা আমাদের সবাইকে আখেরাতের ভালোটুকু বোঝার তওফিক দিন। দুনিয়ার প্রতারণা থেকে আমাদের সবাইকে হেফাজত করুন। আমিন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ