রবিবার, ১১ মে ২০২৫, ০৩:৪৮ পূর্বাহ্ন
স্পোর্টস ডেস্ক : বলা হয় একক নৈপুণ্যে আর্জেন্টিনাকে ১৯৮৬ বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন দিয়েগো ম্যারাডোনা। পরের আসরেও আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে তুলেছিলেন ফুটবলের রাজপুত্র। তবে ম্যারাডোনার সঙ্গে দুজন পার্শ্বনায়ক না থাকলে হয়তো আর্জেন্টাইন রূপকথার জন্ম হতো না। ১৯৮৬ বিশ্বকাপে চার গোল করে ম্যারাডোনাকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছিলেন হোর্হে ভালদানো।
১৯৯০ বিশ্বকাপে মহানায়কের চেয়েও উজ্জ্বল ছিলেন সহনায়ক ক্লদিও ক্যানিজিয়া। সেবার হার দিয়ে আসর শুরুর পর ম্যারাডোনা-ক্যানিজিয়া যুগলে ফাইনালে জায়গা করে নেয় আর্জেন্টিনা।
এবারের কাতার বিশ্বকাপে ৩২ বছর আগের সেই স্মৃতিই যেন ফিরিয়ে এনেছে মেসির আর্জেন্টিনা। প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে অভাবনীয় হারের পর টানা পাঁচ ম্যাচ জিতে ফাইনালে পা রেখেছে দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। পাঁচ গোল করে ও তিনটি করিয়ে যথারীতি আলোচনার কেন্দ্রে অধিনায়ক লিওনেল মেসি।
তবে মহানায়কের পাশে ভালদানো বা ক্যানিজিয়ার ভূমিকায় আলো ছড়াচ্ছেন হুলিয়ান আলভারেজ। আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে তুলতে ২২ বছর বয়সি এই তরুণ ফরোয়ার্ডের অবদানও কম নয়। নিজের প্রথম বিশ্বকাপে এরইমধ্যে চার গোল করে আলভারেজ বুঝিয়ে দিয়েছেন, ‘মেসির কাছ থেকে ব্যাটন বুঝে নিতে প্রস্তুত আর্জেন্টিনার নতুন প্রজন্ম।
গত জুলাইয়ে রিভারপ্লেট থেকে ম্যানসিটিতে যোগ দেওয়া আলভারেজ বিশ্বকাপের আগে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘শৈশব থেকেই মেসি আমার আদর্শ। মেসির সঙ্গে জাতীয় দলে খেলাই ছিল আমার স্বপ্ন।’ সেই স্বপ্ন পূরণ হলেও বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার শুরুর একাদশে প্রথম পছন্দ ছিলেন না আলভারেজ। লাওতারো মার্তিনেজের ব্যর্থতা ও আনহেল দি মারিয়ার চোটে গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে তিনি প্রথম সুযোগ পান শুরুর একাদশে।
পোল্যান্ডের বিপক্ষে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে দুর্দান্ত এক গোলে নিজের আগমনী বার্তা দেন আলভারেজ। পরে শেষ ষোলোয় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে করেন জয়সূচক গোল। মঙ্গলবার ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে জেতা মেসিফাইনালে জোড়া গোল করে আলভারেজ জানান দিলেন, তিনি লম্বা রেসের ঘোড়া। ‘দ্য স্পাইডার’ নামে পরিচিত আলভারেজের জোড়া গোলের প্রথমটি ১৯৮৬ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যারাডোনার সেই শতাব্দীসেরা গোলের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে ফুটবলপ্রেমীদের। দুই গোলের পাশাপাশি মেসির গোলের উৎস পেনালটিও তার আদায় করা।
আলভারেজের খেলায় মুগ্ধ স্বয়ং মেসিও। ক্রোটদের বিপক্ষে তিনি নিজে ম্যাচসেরা হলেও আর্জেন্টিনা অধিনায়কের মতে, পুরস্কারটা আলভারেজেরই প্রাপ্য, ‘দল হিসাবে খেলাই আমাদের শক্তি। আমি আমার যেকোনো সতীর্থকে পুরস্কারটি দেব, কিন্তু আজ এটা হুলিয়ানের প্রাপ্য। সে দুর্দান্ত খেলেছে। মাঠে সবার চেয়ে বেশি দৌড়েছে, অনেক গোলের সুযোগ তৈরি এবং দুটি গোল করেছে। এই ম্যাচের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় ছিল সে। বিশ্বকাপজুড়েই তার পারফরম্যান্স অসাধারণ।’