শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ০৪:৫৩ অপরাহ্ন
বানিয়াচঙ্গ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি: হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচঙ্গ উপজেলার ১৫টির মধ্যে ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে বিছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৩ এপ্রিল শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ চলে। এ নির্বাচনে ১৩ টি ইউনিয়নের মধ্যে ৮ টি আওয়ামীলীগ ও বিএনপি ৩টি এবং ২টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়লাভ করেছেন।
তারা হলেন-১নং সদর উত্তর-পূর্ব ইউনিয়নে গিয়াস উদ্দিন (ধানের শীষ), ২নং সদর উত্তর-পশ্চিম ইউনিয়নে ওয়ারিশ উদ্দিন খান (ধানের শীষ), ৩নং সদর দক্ষিণ-পূর্ব ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুর রহমান (আনারস), ৪নং দৌলতপুর ইউনিয়নে লুৎফুর রহমান (নৌকা), ৫নং কাগাপাশা ইউনিয়নে মোঃ এরশাদ আলী (নৌকা), ৬নং বড়ইউড়ি ইউনিয়নে হাবিবুর রহমান (নৌকা), ৭নং খাগাউড়া ইউনিয়নে শাহ শওকত আরেফীন সেলিম (নৌকা), ৮নং পুকড়া ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ার হোসেন (মোটর সাইকেল), ৯নং সুবিদপুর ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কাশেম চৌধুরী (নৌকা), ১০নং মক্রমপুর ইউনিয়নে মোঃ আহাদ মিয়া (নৌকা), ১১নং মন্দরী ইউনিয়নে শেখ সামছুল হক (নৌকা), ১২নং মুরাদপুর ইউনিয়নে মোঃ মধু মিয়া (ধানের শীষ), ১৩নং পৈলারকান্দি ইউনিয়নে ফজলুর রহমান খান (নৌকা)।
যদিও প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে এ নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক দল, প্রার্থী, ভোটার সবার মধ্যে বাড়তি আগ্রহ দেখা গেছে। নির্বাচনকে জনপ্রিয়তার লড়াই বলে মনে করছে প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। এদিকে অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট গ্রহণে প্রশাসন ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
সবকটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা নৌকা ও বিএনপির প্রার্থীরা ধানের শীষ প্রতীকে ভোটে অংশ নিয়েছেন। আওয়ামী লীগ ১৪ ও বিএনপির ৬ বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন। জাতীয় পার্টির লাঙ্গল মার্কায় ৪ জন, খেলাফত মজলিসের দেওয়াল ঘড়ি ২, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের খেজুর গাছ প্রতীকে ২ ও স্বতন্ত্র ২১ প্রার্থীসহ চেয়ারম্যান পদে মোট ৭২ প্রার্থী ভোটযুদ্ধে লড়াই করেন। এছাড়া সাধারণ সদস্য পদে ৫৩৮ ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১৭১ নারী প্রার্থী প্রতিদ্বদ্বিতা করেছেন।
১৩টি ইউনিয়নে মোট ভোটার ১ লাখ ৯০ হাজার ৭৬৫ জন। নারী ভোটার ৯৫ হাজার ৮৬২ ও পুরুষ ভোটার ৯৪ হাজার ৯০৩ জন। মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১২১টি। এর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ভোট কেন্দ্র ৮৩টি।
হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহিদুল ইসলাম জানান, নির্বাচনী মাঠে ছিলেন ৮শ’ পুলিশ সদস্য। প্রতি ভোট কেন্দ্রে ৩ জন পুলিশ সদস্য ও ১ জন অফিসারসহ ১৫ থেকে ২০ জন আনসার সদস্য নিরাপত্তায় ছিলেন। পুলিশের ৩টি মোবাইল ও ১টি স্ট্রাইকিং ফোর্স কাজ করেছে। প্রতি ইউনিয়নে ১ প্লাটুন বিজিবি স্ট্রাইকিং ফোর্স ও র্যাবের ২টি মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স ছিল। একই সঙ্গে ৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ১ জন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তদারকিতে মাঠে ছিলেন।
ইউএনও মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম বলেছেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণের সব ব্যবস্থা করা হয়। ভোটের পরিবেশ নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই। পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ভোটারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে এসে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিন।
উপজেলা বিএনপি সভাপতি অ্যাডভোকেট মনজুর উদ্দিন আহমেদ শাহীনের কাছে নির্বাচন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত পরিবেশ সুন্দর রয়েছে। গুরুতর কোনো অভিযোগ নেই। তবে উপজেলা সদরের ১টি ইউনিয়নসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলের কয়েকটি ইউনিয়নে বিএনপি কর্মী-সমর্থককে হালকা হুমকি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কিছু কর্মী-সমর্থক। লিখিত নয়, বিএনপি কর্মী-সমর্থকরা তার কাছে মৌখিকভাবে এ অভিযোগ জানিয়েছেন। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ ছিল, তারা যেন নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন খান বলেছেন, আওয়ামী লীগ চায় এ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হোক। জনগণ তাদের পছন্দেরপ্রার্থীকে ভোট প্রদান করুক। হুমকির বিষয়টি বিএনপি মিথ্যাচার করেছে।