• Youtube
  • English Version
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫৮ অপরাহ্ন

করাঙ্গী নিউজ
স্বাগতম করাঙ্গী নিউজ নিউজপোর্টালে। ১৫ বছর ধরে সফলতার সাথে নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশন করে আসছে করাঙ্গী নিউজ। দেশ বিদেশের সব খবর পেতে সাথে থাকুন আমাদের। বিজ্ঞাপন দেয়ার জন‌্য যোগাযোগ করুন ০১৮৫৫৫০৭২৩৪ নাম্বারে।

বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানো ইমানি দায়িত্ব

  • সংবাদ প্রকাশের সময়: সোমবার, ২০ জুন, ২০২২

ইসলাম ডেস্ক:
স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যাকবলিত জনপদ হজরত শাহজালাল ও শাহপরান (রহ.)-এর পুণ্যভূমি সিলেট। রাস্তাঘাট ভেঙে গেছে, ব্রিজ তলিয়ে গেছে। দোকানপাট বন্ধ। বাজার সদাইয়ের ব্যবস্থা নেই। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ। সুপেয় পানিরও মারাত্মক সংকট। শিশু ও বৃদ্ধদের দুর্ভোগ চরমে। সিলেটবাসী বলছেন, তাদের জীবনে এমন ভয়াবহ বন্যা তারা দেখেননি। বাংলাদেশ প্রতিদিনের খবরে বলা হয়েছে গত ১২২ বছরের ইতিহাসে এমন বন্যা হয়নি সিলেট বিভাগে।

পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যার দুর্ভোগ থেকে সহসায় মুক্তি মিললেও দীর্ঘ জলাবদ্ধতার শঙ্কা জানিয়েছেন স্থানীয়রা। পাশাপাশি রাস্তাঘাট-বাড়িঘরের সীমাহীন ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতেও বেশ বেগ পেতে হবে ভুক্তভোগীদের। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন সেবা সংস্থা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সিলেটী ভাইদের পাশে ত্রাণ নিয়ে এগিয়ে আসার বিচ্ছিন্ন এক-দুটো খবর জানতে পেরেছি। কিন্তু যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, ত্রাণের পরিমাণ তার তুলনায় সামান্যই। আগে একটা সময় ছিল যখন দেশের কোথাও দুর্যোগ যেমন বন্যা, ভূমিকম্প, অগ্নি দুর্ঘটনায় মানুষের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে শোনার সঙ্গে সঙ্গেই মানব দরদিরা কালবিলম্ব না করে ছুটে আসতেন।

গত কয়েক বছরে দেখছি ভিন্ন চিত্র। দেশের এক প্রান্তে দুর্যোগকবলিত মানুষ কষ্টে দিনাতিপাত করছে অন্য প্রান্তের মানুষ দিব্যি হেসে খেলে বেড়াচ্ছে। সম্ভবত আমাদের বিবেক ভোঁতা হয়ে গেছে। এ জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অবদান (!) অবশ্য কম নয়। আমরা যখন নেট ব্রাউজ করি কিংবা সামাজিক সাইটগুলো স্ক্রল করতে থাকি তখন আমাদের সামনে হাজারো রকম দৃশ্য আসতে থাকে। কেউ কাঁদছে, কেউ হাসছে। কারও স্বজন মারা গেছেন, আবার কেউ বরযাত্রার আনন্দমাখা ছবি পোস্ট করছেন। কেউ বন্যায় কষ্ট পাচ্ছেন, কেউবা বন্ধুদের সঙ্গে সমুদ্র সৈকতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, পাশাপাশি হাসিকান্নার দৃশ্য থাকলে আমাদের মন হাসিটিকেই বেশি গ্রহণ করে নেয়। ফলে ব্যথিত মানুষের ব্যথা বোঝার বোধ আমরা হারিয়ে ফেলি। অথচ দুনিয়ার কোনো প্রান্তে একজন মুমিনও যদি কষ্ট পেয়ে থাকেন তাহলে পৃথিবীর সব মুমিনকে এ জন্য ব্যথিত হওয়ার কথা বলেছেন রসুল (সা.)। সিলেটীরা আমাদের ভাই। তাদের দুর্যোগে আমাদের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে পাশে দাঁড়ানো ইমানি দায়িত্ব। টাকা-পয়সা, খাদ্য, বস্ত্র, পানি, ওষুধসহ যার যা কিছু আছে, তা নিয়েই স্বতঃস্ফূর্তভাবে বন্যাদুর্গতদের সাহায্যে এগিয়ে আসতে হবে। অন্যের বিপদে সাহায্যের হাত বাড়ানোর প্রতিদান সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, ‘যারা নিজেদের ধন-সম্পদ আল্লাহর পথে ব্যয় করে তাদের দানের দৃষ্টান্ত হলো- যেমন একটি শস্য বীজ বপন করা হলো এবং তা থেকে সাতটি শীষ উৎপন্ন হয়েছে আর প্রত্যেক শীষে রয়েছে একশটি শস্য কণা। এমনিভাবে আল্লাহ যাকে চান তাকে প্রাচুর্য দান করেন।

তিনি মুক্ত হস্ত ও সর্বজ্ঞ। (সুরা বাকারাহ, আয়াত ২৬১)। সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘বান্দা যতক্ষণ তার ভাইকে সাহায্য করবে, আল্লাহ ততক্ষণ তাকে সাহায্য করতে থাকবেন।’ (মুসলিম) এ হাদিসের ব্যাখ্যায় বিশেষজ্ঞরা বলেন, বান্দা যেভাবে ভাইয়ের বিপদের সাহায্যকারী হয়েছে, মহান আল্লাহও তার বিপদে উত্তম সাহায্যকারী হবেন। সাধ্যমতো মানব সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করা ধর্ম ও মানবিকতার দৃষ্টিতে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ কাজ। হজরত ইবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মানব সেবায় তার ভাইয়ের সঙ্গে চলে, ওই কাজ না করা পর্যন্ত আল্লাহ ৭৫ হাজার ফেরেশতা দিয়ে তাকে ছায়া দান করেন। তারা তার জন্য রহমত ও মাগফিরাতের দোয়া করতে থাকে। তার প্রত্যেক কদমে একটি গোনাহ মাফ হয় এবং একটি মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। (আত তারগিব)।

অন্য একটি হাদিসে হজরত আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলছেন, ‘তোমরা পৃথিবীবাসীর প্রতি দয়া কর। আকাশের মালিক আল্লাহ তোমাদের প্রতি দয়া করবেন। (মুসতাদরাক আলাস সহিহাইন) হজরত উসামা ইবনে জায়েদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই! আল্লাহ তার প্রতি দয়া করেন, যে তার বান্দাদের প্রতি দয়া করে।’ (বুখারি ও মুসলিম) হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘মানুষের সেবা ও উপকারের জন্য আল্লাহ কিছু নিবেদিতপ্রাণ সৃষ্টি করেছেন। মানুষ বিপদে পড়লে তাদের শরণাপন্ন হয়। এসব রহম দিল ব্যক্তি আল্লাহর শাস্তি থেকে নিরাপদ থাকবে।’ (আত-তারগিব)।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ