শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:১৮ অপরাহ্ন
করাঙ্গীনিউজ: ইউক্রেনে রকেট হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশি জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধিতে থাকা মাদারীপুরের রাজৈরের ক্যাডেট ফারজানা ইসলাম মৌ বর্তমানে নিরাপদে রয়েছেন বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া। তারপর থেকেই উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছিলেন মৌয়ের পরিবারের লোকজন।
গত বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) রাতে মৌ নিরাপদে আছেন এমন সংবাদে তাদের পরিবারে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
মৌ মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলা সদরের ফকরুল ইসলামের মেয়ে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ফারজানা ইসলাম মৌ ২০১৫ সালে রাজৈর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকার একটি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমিতে ৫৪ তম ব্যাচে ভর্তি হন। লেখাপড়া শেষ করে ইন্টার্নি করার জন্য ১ বছর আগে বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে বিভিন্ন দেশে অবস্থান করেন। সর্বশেষ তুরস্ক থেকে রওনা হয়ে ২২ ফেব্রুয়ারির জাহাজটি ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দরে পৌঁছায়।
যুদ্ধ শুরু হওয়ায় জাহাজটি বন্দর ত্যাগ করতে পারেনি।
এ অবস্থায় ২ মার্চ বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে রকেট হামলা চালানো হয়। হামলায় বরগুনার বেতাগী উপজেলার নাবিক হাদিসুর নিহত হন। জাহাজে বাংলাদেশি আরও ২৮ জন ছিলেন।
এরপর ৩ মার্চ সকালে মৌ নিজের ফেসবুক আইডিতে লাইভে এসে বিপদের কথা জানিয়ে নিজেদের নিরাপদে নিয়ে যাওয়ার আকুতি জানান।
লাইভে তিনি বলেন, ‘আমি ইঞ্জিন ক্যাডেট মৌ। বাংলার সমৃদ্ধি থেকে বলছি। আমাদের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার স্যার মারা গেছেন। আমাদের শিপে বম্বিং হয়েছে।
আমরা এখনো শিপের মধ্যে আছি। আমরা সবাই চাচ্ছি এখান থেকে বের হতে। আপনারা প্লিজ আমাদের জন্য কোনো একটি উপায় বের করুন। আমরা এখানে থাকতে চাচ্ছি না। ’
তারপর ওইদিন রাতে একটি বোটে করে তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়।
মৌয়ের বড় ভাই ফাহাদ মাহামুদ লিমন জানান, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই আতঙ্কে ছিলাম। ঠিকমতো ছোট বোনের সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারিনি। বৃহস্পতিবার রাতে ছোট বোনের সঙ্গে কথা হয়েছে। সে নিরাপদে আছে। তবে কোথায় আছে, তা জানি না।
মৌয়ের মা মাহমুদা বিউটি বলেন, ‘ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে মেয়ের চিন্তায় ঠিকমতো গোসল করতে পারিনি, খেতে পারিনি। রাতে ঘুমাতে পর্যন্ত পারিনি। বৃহস্পতিবার রাতে মৌয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। সে নিরাপদে আছে। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, আমার মৌ যেন নিরাপদে দেশে ফিরে আসতে পারে। ’করে রাশিয়া। তারপর থেকেই উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছিলেন মৌয়ের পরিবারের লোকজন।