শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ০৪:৪৬ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি, সুনামগঞ্জ: একে একে তলিয়ে যাচ্ছে সুনামগঞ্জের দিরাই ও শাল্লা উপজেলার সবক’টি হাওর। বাঁধ বাণিজ্যের নায়করা মুচকি হাসলেও ফসল হারানোর ব্যথায় কৃষকদের বুক ফাটা আর্তনাদে ভারি হয়ে উঠছে হাওড়ের বাতাস ।
বুধবার রাত থেকে গত ২ দিনের ব্যবধানে, তুফানকাড়ি, বৈশাখী বাধ ভেঙ্গে ও চাতল-কলিয়ার কাপন আপার বাঁধ উপচে চাপতি হাওরের ৪ হাজার হেক্টর জমির ধান, মাছুয়ারা কারার পাড় বাঁধ ভেঙ্গে তলিয়ে গেছে উদগল হাওরের ৫ শত হেক্টর, ফাটা কাওরির বাধ ভেঙ্গে তলিয়ে গেছে ভরাম হাওরের ভাঙ্গাডহর গ্রামের বাকি অংশটুকুও। উপজেলার কালিয়াকোটা হাওর তলিয়ে যাওয়ার আশংকায় কৃষককুল।
এদিকে শাল্লা উপজেলার জোয়ারিয়া বাঁধ ভেঙ্গে শ্রীহাইল, হোসেনপুর, গোবিন্দপুর, ইছাকপুর ও শংকর পুর সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের ফসল তলিয়ে গেছে।
তলিয়ে যাওয়ার আশংকায় শাল্লার বৃহৎ ছায়ার হাওরের ফসলও। শাল্লা উপজেলায় ২২ হাজার হেক্টর বোরো জমির মধ্যে ৩০ ভাগ ফসল কাটা হয়েছে বলে কৃষি অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে।
ফলে স্বপ্ন ভাঙ্গার বেদনায় বিবর্ন হাওর পাড়ের কৃষককুল। হাওর পাড়ের কৃষক বিজেন্দ্র দাস,জহরলাল, নুরুল হকসহ অনেকেই জানান, পাকা-আধপাকা ধান কেটেও রেহাই পাওয়া যাচ্ছেনা পানির কবল থেকে। শুধু হাওর নয়, অসময়ে পানির চাপে মাঠ ঘাট সবই তলিয়ে যাচ্ছে। ফলে কৃষক-কৃষানী কাটা ধান নিরাপদ স্থানে নেয়ার চেষ্টা করছেন।
কৃষকদের অভিযোগ, আমরা বাঁধে মাটি কাটলেও শেষ সময়ে এসেও বাঁধ বানিজ্যের নায়করা বাঁধ রক্ষার নামে হাতিয়ে নিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। সরেজমিন হাওর এলাকা ঘুড়ে দেখা যায়, কালনী-দাড়াইন-কুশিয়ারা পানি বিপদসীমা অতিক্রম করার আগেই ঝুকিপূর্ন হয়ে উঠে দিরাই ও শাল্লা উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্মিত সবকটি বাধ।
কৃষির সাথে সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করে বলছেন, সরকার হাওর এলাকার বাঁধ নির্মানের জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও সে টাকা সাধারণ কৃষকের কোন কাজেই আসেনি। তা পকেটস্থ হয়েগেছে পাউবো’র কর্মকর্তা, ঠিকাদার, প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য ও স্থানীয় সরকারদলীয় নেতাদের।
জানা গেছে, বাঁধ বাণিজ্যের নায়েকরা বাঁধ রক্ষায় কাগজে-কলমে হাজার হাজার বস্তা, হাজার হাজার বাঁশ ও শত শত শ্রমিক লাগানোর হিসেব দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেও কোথাও এর অস্তিত্ব খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।