শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:০৪ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ: বাজার ব্যবস্থায় শৃংখলা রক্ষায় প্রথমবারের মতো কাজ শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন। আর এ প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারপারসন হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে সাবেক সচিব ও বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ ইকবাল খান চৌধুরীকে।
মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এর আগে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত সার্চ কমিটি তার নাম প্রস্তাব করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর জারি করা প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, মোঃ ইকবাল খান চৌধুরী প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপারসন পদে অধিষ্ঠিত থাকাকালীন তার পদমর্যাদা, পারিশ্রমিক, ভাতা ও অন্যান্য আনুষাঙ্গিক সুবিধাদি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হবে।
মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ কথা জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোঃ হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে তাকে ওই পদে নিয়োগ দেয় সরকার।
উল্লেখ্য, মোঃ ইকবাল খান চৌধুরী ৮২ স্পেশাল ব্যাচে সহকারি কমিশনার হিসেবে চাকুরিতে যোগদান করেন। পরবর্তিতে তিনি পূর্ত মন্ত্রাণালয়, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন, কৃষি, যোগাযোগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুগ্ম ও অতিরিক্ত সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান (বিটিসি) ভারপ্রাপ্ত সচিব, সব শেষে ২০১৪ সালে সচিব পদে পদোন্নতি পেয়ে অবসরউত্তর ছুটিতে যান।
চাকুরীকালীন সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি বানিয়াচং উপজেলার সুনামধন্য বিদ্যাপিঠ হানিফ খান দ্বী-মূখি উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
মোঃ ইকবাল খান চৌধুরী হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার সুজাতপুর ইউনিয়নের শতমূখা চৌধুরী বাড়ির মরহুম মোঃ কাইয়ুম খান চৌধুরীর বড় পুত্র। তিনি ১৯৫৫ সালের ১ অক্টোবর তার নিজ গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন।
১৯৭১ সালে হানিফ দ্বি-মূখি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি, ১৯৭৩ সালে ঢাকার নটরডেম কলেজ থেকে এইচ.এস.সি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে অনার্স মাস্টার্স শেষ করে চাকুরিতে যোগদান করেন।
জানা গেছে, কমিশনের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হবে সুষ্ঠু পরিচালনার মাধ্যমে বাজার ব্যবস্থায় শৃংখলা ফিরিয়ে আনা। বাজারে প্রবেশ করা নতুন ও ছোট কোম্পানিগুলোকে বড় কোম্পানির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকিয়ে রাখার মাধ্যমে কার্যকর ও ভারসাম্যমূলক বাজার পরিস্থিতি তৈরি করা। যেখানে উৎপাদক, ব্যবসায়ী ও ভোক্তা সবারই এ বাজার ব্যবস্থার প্রতি সন্তুষ্টি বজায় থাকে।
২০১২ সালে প্রতিযোগিতা আইন পাস হয়। এরপর প্রায় দীর্ঘ চার বছর পর কমিশনের কার্যক্রম দৃশ্যমান হতে যাচ্ছে। যদিও কাগজে-কলমে ২০১৩ সালের ১৭ ডিসেম্বরে প্রতিযোগিতা কমিশন গঠন করা হয়। বিশ্বের অনেক দেশে অনেক আগেই প্রতিযোগী আইন ও কমিশন রয়েছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ উন্নত বিশ্বের অনেক দেশ এ আইনের অধীনে কমিশন গঠনের মাধ্যমে অসৎ ব্যবসায়ীদের জেল ও জরিমানা করেছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপারসন নিয়োগের মধ্য দিয়ে সরকার দেশবাসীকে রমজানের আগাম উপহার দিল। আগামী রোববার থেকেই কমিশনের চেয়ারপারসনের কর্মদিবস শুরু হবে। এর আগেই একজন সচিবও নিয়োগ দেয়া হয়েছে এবং চেয়ারপারসনের কাজে সহায়তা দিতে আরও দু’জন সদস্য নিয়োগ প্রক্রিয়া খুব শিগগিরই শেষ হবে।
তিনি বলেন, প্রতিযোগিতা কমিশনের কাজ শুরু হলে দেশের উৎপাদক, ব্যবসায়ী ও ভোক্তা সবার স্বার্থ সংরক্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হবে।