সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ১২:১০ পূর্বাহ্ন
করাঙ্গীনিউজ ডেস্ক: মালয়েশিয়ায় এক বাংলাদেশিকে অপহরণের অভিযোগে অপর ৩ বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, গত ২ নভেম্বর আনুমানিক সময় রাত ৮টা ৩০ মিনিটে চারজন লোক একটি সাদা গাড়িতে করে অ্যাপার্টমেন্ট পাংসাপুরি প্রেমাই-সেকশন-৩, jalan Tropicana selatan PJU, এর সামনে এসে দাঁড়ায়।
গাড়িতে থাকা ৪ বাংলাদেশি গাড়ি থেকে নেমে আলী আরশাদ নামের একজন বাংলাদেশি শ্রমিককে প্রথমে কাজের কথা বলে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করে। আরশাদ গাড়িতে যেতে না চাইলে তাকে জোর করে গাড়িতে তুলে নিয়ে পার্শ্ববর্তী নার্সারিতে জঙ্গলের ভেতরে একটা ঘরে নিয়ে তাকে আটকে রাখে।
আরশাদকে অপহরণকারীরা মোটা রশি দিয়ে বেঁধে ফেলে। তারপর লোহার শিকল দিয়ে পা বেঁধে শুরু করে পাশবিক নির্যাতন।
নির্যাতনের সময় আলী আরশাদের পেন্টের পকেট থেকে মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে ইমু অ্যাপসের মাধ্যমে ভিডিও কল দিয়ে নির্যাতনের দৃশ্য দেখিয়ে পরিবারের কাছে ৩০ হাজার রিঙ্গিত যা বাংলাদেশি টাকায় ৬ লাখ টাকা সমপরিমাণ মুক্তিপণ দাবি করে।
পরিবারের পক্ষ থেকে মুক্তিপণ দিতে অস্বীকৃতি জানালে নির্যাতন বাড়িয়ে দিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেয় অপহরণকারীরা। সন্তানের নির্যাতনের দৃশ্য দেখে অসহায়ত্ব প্রকাশ করে পরিবারের পক্ষ থেকে ২ দিনের সময় চাওয়া হয় অপহরণকারীদের কাছে।
এদিকে ওই রাতেই আলী আরশাদের কিডন্যাপের খবর পেয়ে যান মালয়েশিয়ায় থাকা বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ইমাম হাজারী। খবর পাওয়ার কিছুক্ষণ পর ব্যবসায়ী ইমাম হাজারীর হোয়াটসঅ্যাপে কিডন্যাপ হওয়া আলী আরশাদের ছবি পাঠিয়ে একজন সহযোগিতা চান।
পরদিন সকালে দামানছারা থানায় (বালাই) ইমাম হাজারী একটি মামলা দায়ের করেন। হাজারীর করা মামলার সূত্র ধরে ৩ নভেম্বর বিকাল ৫টায় কিডন্যাপ হওয়া আলী আরশাদকে উদ্ধার করা হয় এবং স্বদেশি তিন বাংলাদেশিকে পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে- ফারুক (কুমিল্লা), নুরুন্নবী (কুমিল্লা), বিপ্লব কুমার (যশোর)।
দামানছারা থানার পুলিশ ইন্সপেক্টর অ্যাডাম বলেন, এর সঙ্গে জড়িত বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে এবং তাদেরও দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।
এ বিষয়ে ইমাম হাজারীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছু সংঘবদ্ধচক্র কিডন্যাপিংয়ে জড়িত। কিডনাপাররা মূলত টার্গেট করে অসহায় প্রবাসীদের এবং তাদের কাজের কথা বলে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়ে আটকে রেখে তাদের ওপর অত্যাচার করে ভিডিও ফুটেজ অথবা ছবি তার বাংলাদেশের পরিবারের কাছে পাঠায় এবং তাদের পরিবারের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আদায় করে।
হাজারী এই প্রতিবেদককে বলেন, এ কিডন্যাপিং চক্রের কারণে মালয়েশিয়াতে বাংলাদেশের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। শুধু যে মালয়েশিয়াতেই বাংলাদেশিদের মান সম্মান ক্ষুণ্ন হচ্ছে তা নয়, সারা পৃথিবীতে ক্ষুণ্ন হচ্ছে। যার যার অবস্থান থেকে এ কিডন্যাপারদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার আহ্বান জানান তিনি।