রবিবার, ১১ মে ২০২৫, ০৩:৪১ পূর্বাহ্ন
কামরুল হাসান: নৃবিজ্ঞানী মার্গারেট মিড বলেছেন- “শিশুদের শিক্ষা দেয়া উচিত যে তারা কীভাবে চিন্তা করবে, কী চিন্তা করবে সেটা নয়’। তেমনি শিশুদের জন্য এক চিন্তা মাথায় ঢুকিয়েছেন তাজুল ইসলাম মোতালিব নামে এক যুবক। তিনি পেশায় শিক্ষক ও টমটম চালক। একটি মহিলা মাদরাসার (কওমি) মোহতামিমের দায়িত্ব পালন করছে। মাদরাসা ছুটির পর যতটুকু সময় পান অতিরিক্ত আয়ের জন্য শহরের টমটম চালান।
তিনি শিশুদের জন্য তার মতো করে তৈরি করেছেন আদর্শিক বই। এর আগে বাজার থেকে আমরা শিশুদের জন্য যেবই কিনে সন্তানদের পড়তে দেই সেগুলো ছোট্টদের জন্য আদর্শিক বই নয় বলে মনে করেন তিনি।
যেমন- অ-তে অজগর। “অজগরটি আসছে তেড়ে, আমটি আমি খাব পেরে” ইত্যাদি বাক্য দিয়ে বর্ণমালা সাজানো।
আর মোতালিব তার বইটিতে লিখেছেন। ন-তে নৌকা। “নৌকা চলে-নদীর জলে, মুমিন চলে ঈমানের বলে”। নবীর আশিক চিনার উপায়-এক মুষ্টি দাড়ি থুতায়” ইত্যাদি। তিনি বই প্রকাশ করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিশুদের বিনামূল্য উপহার দিচ্ছেন। শিশুরা বই পেয়ে অনেক খুশি।
তাজুল ইসলাম মোতালিব হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভাধীন ১নং ওয়ার্ডের শ্যামপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার বাড়ী পাশে বড় ভাই আব্দুন নুর প্রতিষ্ঠিত ‘রাহবায়ে জান্নাত’ মহিলা মাদরাসার (কওমি) দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। শিক্ষকতার পাশাপাশি লেখালিখি করেন নিয়মিত। তার অনেক ছড়া কবিতা রয়েছে।
সম্প্রতি তিনি যে বইটি প্রকাশ করেছেন বাংলা বর্ণমালা দিয়ে “ছন্দে ছন্দে আকিদা শিক্ষা”। এই বইটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিশুদের হাতে তুলে দিচ্ছেন বিনামূল্যে। প্রায় শতাধিক বই বিতরণ করেছেন।
তাজুল ইসলাম মোতালিবের মতে শিশু সদ্য ফুটা ফুল। কুলস মুক্ত হৃদয়ের আঙিনা। যা শ্রবণ করে তাই তার স্মৃতিপটে সংরক্ষিত হয়। ক্রমান্বয়ে তা জীবনা চরিত্রে বিকশিত হতে থাকে। শিশুকাল, শিক্ষা অর্জনের পাঠশালা। যা শিখে তা জীবন ভর মনে থাকে। কথিত আছে“ ছোট্ট বয়সের জ্ঞানার্জন পাথরের অন্ধনের সমতুল্য”। তাই শিশুকে আদর্শিক শিক্ষা দিতে হবে। কিন্তু সমাজে ছোট্টদের আদর্শিক বই পাওয়া দুষ্কর। যে বই পাওয়া যায়, তাতে শিশুর শিক্ষার অভাব থেকে যায়। আশাকরি এই বইটি পড়ে শিশুরা উপকৃত হবে। তাই গ্রামে গ্রামে ঘুরে শিশুদেরকে বিনামূল্যে বই বিতরণ করছেন মোতলিব। তারমতে প্রতিটি শিশু আদর্শিক শিক্ষার আলোতে বিকশিত হয়ে দেশ, সমাজ ও ইসলামের সেবায় নিজের জীবনকে উৎসর্গিত করতে পারে।