• Youtube
  • English Version
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৭:১০ অপরাহ্ন

করাঙ্গী নিউজ
স্বাগতম করাঙ্গী নিউজ নিউজপোর্টালে। ১৫ বছর ধরে সফলতার সাথে নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশন করে আসছে করাঙ্গী নিউজ। দেশ বিদেশের সব খবর পেতে সাথে থাকুন আমাদের। বিজ্ঞাপন দেয়ার জন‌্য যোগাযোগ করুন ০১৮৫৫৫০৭২৩৪ নাম্বারে।

বাহুবলের মিরপুর ইউপি চেয়ারম্যানকে মুচলেকা দিয়ে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ

  • সংবাদ প্রকাশের সময়: বুধবার, ১৫ জুলাই, ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ
করোনার জন্য সরকার থেকে গরীবের জন্য বরাদ্দ করা ত্রাণ উচ্চবিত্তদের দেয়া এবং ত্রাণ গ্রহনকারীর নামের তালিকায় ঘষামাজার অপরাধে অভিযুক্ত হওয়া বাহুবলের ৬ নম্বর মিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো.সাইফুদ্দিন লিয়াকতকে ক্ষমা করে দেয়ার পাশাপাশি কঠোরভাবে সতর্ক করে দিয়ে আদেশ জারি করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি এমন কাজ আর করবেন না বলে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কাছে গিয়ে মুচলেকা দিতে হবে চেয়ারম্যানকে।

মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়, ‘কর্তব্যকাজে অবহেলা ও গাফিলতির  কারণে চেয়ারম্যান মো. সাইফুদ্দিন লিয়াকতকে কঠোরভাবে সতর্ক করা হলো। আদেশে এও বলা হয়, ভবিষ্যতে এ ধরণের কর্মকান্ড আর করবেন না মর্মে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কাছে গিয়ে আগামী সাতদিনের মুচলেকা দেয়া শর্তে প্রথমবারের মত ক্ষমা করা হল।’

এরআগে এ ঘটনায় চেয়ারম্যান মো. সাইফুদ্দিন লিয়াকতের বিরুদ্ধে দু’দফায় তদন্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, গত মে মাসে গরিবের জন্য বরাদ্দ করা চাল মিরপুরের চেয়ারম্যান উচ্চবিত্তদের মধ্যে বিতরণসহ ত্রাণের তালিকায় ঘষামাঝার পর বাহুবল উপজেলার প্রশাসন তদন্ত করেছিল। সেই তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মিরপুরের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ‘ব্যবস্থা’ নেয়ার সুপারিশ করে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসন নথিটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদনটি যাওয়ার পর তদন্ত প্রতিবেদনে বেশ কিছু অসঙ্গতি ধরা পড়ে। ত্রুটিপূর্ণ প্রতিবেদনটির ভিত্তিতে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যায়নি। এরপরই নতুন করে তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং একইসঙ্গে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তদন্ত করার জন্য তিন সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটির প্রধান ছিলেন সিলেট বিভাগের স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক। কমিটির অন্য দুই সদস্য হবিগঞ্জের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও হবিগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা। গত ২১ জুন দ্বিতীয়দফায় তদন্ত প্রতিবেদনটি মন্ত্রণালয়ে পাঠায় কমিটি।
গত মে মাসে চেয়ারম্যান সাইফুদ্দিনের বিরুদ্ধে গরিবের চাল বিতরণ বিষয়ে অভিযোগ ওঠে। এরপর উপজেলা প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করে। গণমাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়। এর বিপরীতে চাল চুরির অপবাদ থেকে বাঁচতে নিজ ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে চেয়ারম্যান প্রতিবাদ সভা করেছিলেন। ওই সভায় সাংবাদিকদের জামায়াত-শিবির বানিয়ে বক্তৃতাও দিয়েছিলেন চেয়ারম্যান। তিনি এও বলেছিলেন, ত্রাণের চাল বিতরণে কোনো অনিয়ম করেননি। কিন্তু প্রতিবেদনে ঘষামাঝার প্রমান পাওয়া যায়।

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে কর্মহীন নি¤œ আয়ের মানুষের মাঝে দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। কিন্তু হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার ৬ নম্বর মিরপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সাইফুদ্দিন লিয়াকত এর ত্রাণ বিতরণে ব্যাপক অনিয়মও আত্মসাতের ফলে এলাকার শত শত অসহায়, দরিদ্র্য ও কর্মহীন মানুষ প্রধানমন্ত্রীর উপহার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। ত্রাণের তালিকায় রয়েছে চেয়ারম্যান এর শশুড়, শাশুড়ী, শ্যালক, শ্যালকপুত্র, সমন্ধিকের বউ, তার তৃতীয় স্ত্রীর বড়বোনসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন। অনেকেই আবার একাধিকবার ত্রাণ পেয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া মিরপুর বাজারের কয়েকজন বিশিষ্ট কোটিপতিসহ ১৮ জন ব্যবসায়ী রয়েছে। এমনকী ত্রাণ আত্মসাতের উদ্দেশে গায়েবি তালিকা করা হয়েছে এবং পিতা/স্বামীর নামেও রয়েছে ব্যাপক অনিয়ম ও গড়মিল। আবার অনেকের নাম তালিকায় থাকলেও ত্রাণ না দিয়ে তাদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ত্রাণ উত্তোলনের অভিযোগ রয়েছে। তালিকায় রয়েছে ঘষামাঝারও অভিযোগ।

এরপরই গত ১১ মে ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম ও আত্মসাতকারী ৬নম্বর মিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুদ্দিন এর বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেন এলকাবাসী। এতে মিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুদ্দিনের পদত্যাগ চাই, প্রধানমন্ত্রীর উপহার ভেস্তে যেতে দেব না, বঙ্গবন্ধুর বাংলায় চাল চোরের ঠাঁই নাই, চাল চোর ও চাল আত্মসাতকারী চেয়ারম্যান সাইফুদ্দিন এর বিচারের দাবীসহ বিভিন্ন লেখাযুক্ত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে ভুক্তভোগী মানুষ শ্লোগান দেন।

 

এসময় ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেছিলেন, ত্রাণের তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রীর উপহার আমাদের হাতে না দিয়ে স্বাক্ষর ও টিপসই জাল করে আত্মসাৎ করেন চেয়ারম্যান। তারা আরও বলেন, অন্য ইউনিয়নের একই পরিবারের তিন জনের নাম তালিকায় অন্তর্ভূক্তিসহ শতাধিক ভুয়া নাম তালিকায় অন্তর্ভূক্তি করে ত্রাণ সামগ্রী আত্মসাৎ করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ