শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ০৪:৩৭ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি, সিলেট: সিলেটে ১০ বছর বয়সী শিশুকে ২ মাস ধরে ধর্ষণের দায়ে শিশুটির সৎ বাবাকে আটক করেছে পুলিশ। ভিকটিক শিশুটি সিলেট নগরীর একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী।
শনিবার (১৪ জুলাই) রাতে নগরীর রায়নগর দর্জিপাড়া এলাকা থেকে শিশুটির সৎ বাবাকে আটক করা হয়।
জানা যায়, শিশুটির মা সিলেটের গোলাপগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি সৌদি আরবে কর্মরত আছেন। শিশুটির মা প্রথমে বরিশালের এক ব্যক্তি বিয়ে করেন। সেই স্বামীর ঘরেই জন্ম নেন শিশুটি। শিশুটির জন্মের পর ছাড়াছাড়ি হয় এই দম্পতির। পরবর্তীতে শিশুটির মা পুনরায় বগুড়া জেলার গাবতলি থানার সরধনকুঠি গ্রামের অলি মন্ডলের ছেলে পিটু মিয়া (২৮) কে বিয়ে করেন।
২০১৭ সালে এই সৎ বাবার কাছে রেখে সৌদি আরবে যান তার মা। সেসময় মেয়েকে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েরও ভর্তি করিয়ে দিন তিনি। এরপর থেকে সিলেট নগরীর দর্জিপাড়া এলাকায় এই শিশু কন্যাকে নিয়েই বসবাস করে সৎ বাবা পিটু মিয়া।
কিন্তু বিগত দুই মাস পূর্ব থেকে ঐ শিশুকে জোর পূর্বক প্রতিদিন রাত্রে ধর্ষণ করে পাষণ্ড সৎ বাবা। মেয়েটি এসকল ঘটনা কাউকে বলতে চাইলে তাকে প্রতিনিয়তই মারপিট করতো তার সৎ বাবা। শুক্রবার রাতেও মেয়েটিকে কয়েকবার ধর্ষণ করে পিটু। সকালে শিশুটিকে মারপিট করে গোসল করায় তার পাষণ্ড পিতা। সেই সাথে ঘটনাটি কাউকে না বলার জন্য হত্যার হুমকিও দেয়।
মারপিটের ভয়ে শিশুটি তার এক বান্ধবীর বাসায় আশ্রয় নিয়ে বান্ধবীর মাকে সব কিছু খুলে বলে। পরবর্তীতে এক সাংবাদিকের সাহায্যে শিশুটির বান্ধবীর মা সিলেট কোতোয়ালি থানায় শিশুটিকে নিয়ে যান।
শিশুটির বক্তব্য শুনে সিলেট কোতোয়ালি থানা পুলিশ তার সৎ বাবাকে আটকের ব্যবস্থা করেন। শনিবার রাতে এই সৎ বাবাকে আটক করে পুলিশ।
এ ব্যাপারে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন জানান, শিশু ধর্ষণের খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তার সৎ বাবাকে গ্রেপ্তার করে নিয়মিত মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করেছেন।
ভিকটিম শিশুটি বর্তমানে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ (সিওমেক) হাসপাতালে আছে। সোমবার (১৬ জুলাই) তাঁকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠানো হবে।
এ ঘটনায় শিশুটির মা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানান, তার মেয়ে তাকে পূর্বে কয়েকবার বলেছিল। তিনি মধ্যখানে একবার দেশে এসে তার স্বামীকে স্থানীয় জামাল কামাল মাজারের সামনে নিয়ে শপথ করান। এতে তিনি তার স্বামী পিটুকে বলেন সৎ মেয়ে হলেও সে তোমার মেয়ে। একে মেয়ের চোখে দেখো।
তিনি তার মেয়ের ধর্ষণের কথা শুনে অবাক হয়ে বলেন, যদি তার স্বামী সত্যি এমন কাজ করে থাকে তাহলে তার শাস্তি হওয়া দরকার।