রবিবার, ১১ মে ২০২৫, ১২:৪৪ পূর্বাহ্ন
লাখাই (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি : হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলার মনতৈল গ্রামে বড় বোনের বাড়িতে বিলকিছ আক্তার সুইটি নামে ১০ম শ্রেণীর এক ছাত্রীর বিষপান করে মৃত্যু হয়েছে।
সে ওই উপজেলার তেঘরিয়া গ্রামের শাহজাহান মিয়ার কন্যা। সে স্থানীয় তেঘরিয়া এসই এস ডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণীর ছাত্রী।
অনুসন্ধ্যান করে জানা যায়, নিহত ছাত্রীর সাথে তেঘরিয়া গ্রামের তাছকির মিয়ার পুত্র লুৎফর মিয়ার দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল।
গত ৭ই এপ্রিল রবিবার সুইট ইংরেজি ২য় পত্র পরীক্ষা দেয়ার জন্য স্কুলে যায়। পরীক্ষা শেষে সুইটি তার প্রেমিক লুৎফরের সাথে স্কুলের পাশে ঘনিষ্ঠভাবে কথাবার্তা বলছিলেন।
ওই সময় স্কুলের অন্যান্য ছাত্রছাত্রীরা তাদেরকে এ অবস্থায় দেখে আটক করে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে নিয়ে যায়। প্রধান শিক্ষক তাদের দুই পরিবারের অভিভাবকদের খবর দিয়ে স্কুলে নিয়ে আসে।
পরে প্রধান শিক্ষক তাদের অভিভাবকদের সামনেই প্রেমিক লুৎফরকে কানে ধরিয়ে উঠবস করায়। আর সুইটিকে ভবিষ্যতে এ ধরণের কাজ না করার জন্য সতর্ক করে দেয়।
পরে সুইটি বিকাল ৪টার দিকে পাশ্ববর্তী মনতৈল গ্রামে তার বড় বোনের বাড়িতে চলে গিয়ে সকলের অগোচরে বিষপান করে।
বিষাক্রান্ত অবস্থায় ছটফট করতে থাকলে তার বড় বোন দেখতে পেয়ে তার পরিবারের কাছে খবর দেয়। খবর পেয়ে সুইটির মা ও তার চাচী ছুটে আসে।
তবে রহস্যজনক কারণে বোনের বাড়ি থেকে হাসপাতাল না নিয়ে তাদের নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয়।
কিন্তু সিএনজিতে উঠানোর পূর্ব মূহুর্তেই সুইটির মৃত্যু হয়। উপস্থিত সকলের অনুরোধের পরও রহস্যজনক কারণে সুইটি কে হাসপাতালে না নিয়ে অথবা কোন ডাক্তার কে না দেখিয়ে তেঘরিয়া গ্রামে তাদের নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন সকাল ১১টায় কাউকে না জানিয়ে লাশটি দাফন করা হয়।
স্থানীয়রা মৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে পেটব্যথা জনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে বলে জানায় তার পরিবার।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, লুৎফরের পরিবার ওই ঘটনার পর থেকে বাড়ি ছাড়া। এদিকে, স্থানীয় লোকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা মৃত্যুর বিষয়ে সঠিক কারণ এখনও জানেনা।
সুইটির স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম আলমের সাথে কথা বললে, তিনি স্কুলের বিচারের ঘটনাটির সত্যতা স্বীকার করেন।
তিনি আরও জানান, ওইদিন সন্ধ্যার পর সুইটির মৃত্যুর খবর পেয়ে তিনিসহ আরও কয়েকজন শিক্ষক নিহতের লাশ দেখার জন্য তার বাড়িতে যায়।
তবে মৃত্যুটি স্বাভাবিক নাকি অস্বাভাবিক সে বিষয়ে তিনি কিছু জানতে পারেনি। তবে এলাকাবাসীর মতে সুইটির মৃত্যুটি ছিল অস্বাভাবিক।
খবর পেয়ে হবিগঞ্জ মানবাধিকার সংস্থা এইচ আর এইচ এফ বিষয়টি হাতে নিয়ে জোর তদন্তে মাঠে নেমেছে বলে জানা যায়।