শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ১০:১৩ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি: দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় সমাবর্তন আজ বুধবার অনুষ্ঠিত হবে। সমাবর্তনকে ঘিরে উৎসাহ-উদ্দীপনা আমেজের কমতি নেই শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সমাবর্তন প্রত্যাশীদের মাঝে। সমাবর্তনকে কেন্দ্র করে গ্র্যাজুয়েটদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠছে পুরো ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাসে আগেভাগেই বইছে উৎসবের হাওয়া। ইতোমধ্যে সমাবর্তনের কস্টিউম সংগ্রহ করেছেন গ্র্যাজুয়েটরা। এ নিয়ে শুরু হয়েছে সেলফি ও উচ্ছ্বাস।
আজ বুধবার (০৮ জানুয়ারি) বিকেল ৩টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে সমাবর্তন অনুষ্ঠান শুরু হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. আবদুল হামিদ। এছাড়া সমাবর্তন বক্তা হিসেবে থাকবেন কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।
তবে মূল অনুষ্ঠানের আগেই ক্যাম্পাসজুড়ে স্নাতক ডিগ্রিধারীরা সমাবর্তনের গাউন ও ক্যাপ পরিধান করে দলবেঁধে, পরিবার-পরিজন নিয়ে মনের আনন্দে ক্যাম্পাসে বিচরণ করছেন। সব জায়গায় উড়ছে কালো ক্যাপ। গাউন পেয়েই মুহূর্তগুলো স্মরণীয় করে রাখতে ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন তারা।
সমাজকর্ম বিভাগ ২০০৩- ০৪ সেশনের শিক্ষার্থী মাহমুদা সুলতানা নিশি বর্তমানে তিনি সিলেট কৃষি ব্যাংকে কর্মরত। তিনি বলেন, অনেক বছর পরে সমাবর্তন হলেও এটি আমাদের জন্য অনেক আবেগের বিষয়। অনেক বন্ধু-বান্ধব দেশে-বিদেশে থাকে। সমাবর্তন উপলক্ষে সবার সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
একই বিভাগের ২০০৪-০৫ সেশনের শিক্ষার্থী দীপঙ্কর দাশ বর্তমানে সিলেটের জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষকতা করছেন। তিনি বলেন, জীবনের প্রথম সমাবর্তন এটি। রাষ্ট্রপতি আসবেন। ক্যাম্পাসের সিনিয়র -জুনিয়র সবার সঙ্গে দেখা হবে ভাবতেই আনন্দ লাগছে।
রাস্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের ২০০৯-১০ সেশনের শিক্ষার্থী হবিগঞ্জ সরকারী বৃন্দাবন সরকারী কলেজের প্রভাষক বাহুবলের কৃতি সন্তান বলেন, আমি সমাবর্তন অনুষ্ঠানেই এসেই আমার প্রিয় বিদ্যাপিট শাবি, প্রিয় রাস্ট্র বিজ্ঞান বিভাগে যেয়ে যেখানে বসে ক্লাস করতাম সেই রুমটিকে স্মৃতি হিসাবে ধরে রাখতে ছবি তুলি। সিনিয়ার জুনিযার ভাই, বন্ধুদের সাথে সেলফি তুলে রাতটা পার করেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ক্লাসে স্যারা যাতে আমাকে না দেখে সেজন্য তিনি মধ্যে টেবিলের এক কোনে বসে ক্লাস করতেন বলেই হেসে ফেলেন তিনি।
মা-বাবা ও স্বামীকে নিয়ে ক্যাম্পাসে এসেছেন বাংলা বিভাগের ২০০৭-০৮ শিক্ষাবর্ষের শর্মিলা দাশ। তিনি বলেন, শিক্ষা জীবন শেষে সব শিক্ষার্থীদের একটা স্বপ্ন থাকে সমাবর্তন পাওয়ার জন্য। এই অসাধারণ মুহূর্তে পরিবারের মা-বাবা ও স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে এসেছি। সবার মতো আমিও এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে চাই।
এবার সমাবর্তনে মোট ছয় হাজার ৭৫০ গ্র্যাজুয়েট অংশ নেবেন। অনুষ্ঠানে স্নাতকে চার হাজার ৬১৭ জন, স্নাতকোত্তরে এক হাজার ১২৭ জন, পিএইচডি দুজন, এমবিবিএস ৮৭৮ জন, এমএস ও এমডি ডিগ্রিধারী ছয়জন এবং নার্সিংয়ের ১২০ জন শিক্ষার্থী গ্র্যাজুয়েট হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন।
এছাড়া স্নাতকে সর্বোচ্চ ফলাফলধারী ১২ শিক্ষার্থী ও স্নাতকোত্তরে আট শিক্ষার্থীকে স্বর্ণপদক দেবেন রাষ্ট্রপতি। অনুষদে প্রথম হওয়া মোট ৮৯ জন শিক্ষার্থীকে ‘ভাইস চ্যান্সেলর’ অ্যাওয়ার্ড দেয়া হবে।
উল্লেখ্য, সমাবর্তন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টার ও ক্যাফেটেরিয়া খোলা থাকবে। অংশগ্রহণকারী গ্র্যাজুয়েটদেরকে আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে ১টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে সমাবর্তনস্থলে আসন গ্রহণ করতে হবে। এ
ছাড়া আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দদেরকে বিকেল আড়াইটার মধ্যে অবশ্যই সমাবর্তনস্থলে আসন গ্রহণ করতে হবে। দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটে শোভাযাত্রার মাধ্যমে সমাবর্তনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। মূল অনুষ্ঠান হবে বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত। সমাবর্তনে অবশ্যই নির্ধারিত আমন্ত্রণপত্র সঙ্গে আনতে হবে।
মোবাইল ফোন, হাত ব্যাগ, ব্রিফকেস, ছাতা ও পানির বোতল, ক্যামেরা বা অন্য কোন ইলেকট্রনিক ডিভাইস সঙ্গে নিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করা যাবে না। গ্র্যাজুয়েটরা সমাবর্তনের দিন অতিথি নিয়ে আসতে পারবেন। তবে অতিথিদেরকে সমাবর্তনের মূল অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে একাডেমিক ভবন ‘ই’ ও ‘আইআইসিটি’ ভবনে অবস্থান করতে হবে। সমাবর্তনের দিন সন্ধ্যায় এবং পর দিন বৃহস্পতিবার মূল সনদপত্র বিতরণ করা হবে।