শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ১০:১৭ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি: সৌদি থেকে খালি হাতে ফিরেছেন হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার মিরপুর এলাকার মমতা খাতুন ( ছদ্মনাম)। তার সাথে ফিরেছেন সুনামগঞ্জের এক নারী।
পুরুষদেরকে সৌদি সরকার ফেরত পাঠালেও নারী কর্মীরা নির্যাতন, বিক্রি ও বেতন না দেওয়ার কারণে ফিরছেন স্বেচ্ছায়।
রোববার দেশে ফিরেছেন হবিগঞ্জের এক নারীসহ সিলেটর ২ নারী কর্মী।
সাত মাস আগে সুনামগঞ্জ জেলার নরুত্তমপুর গ্রামের সুরাইয়া (৩০) (ছদ্মনাম) গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে সৌদি আরব গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে নিয়োগকর্তা কর্তৃক শারীরিক নির্যাতনে শিকার হয়ে শূন্য হাতে দেশে ফিরতে বাধ্য হন সুরাইয়া। তিনি বলেন, সৌদি যাবার পর থেকে আমাকে প্রায় ১৮/২০ ঘণ্টা কাজ করতে হতো। কাজ শেষে ঘুমাতে গেলে মালিক বিরক্ত করতো। কাজ করলেও বেতন দিতেন না। বেতন চাইলে বলতেন আমাকে বিক্রি করা হয়েছে তাই তারা বেতন দিবে না।
দেশে ফেরা আরেক নারী গৃহকর্মী হবিগঞ্জের মিরপুর এলাকার মমতা (২৭)। আট মাস পূর্বে সৌদি গিয়েছিলেন তিনি। তার গল্পও প্রায় সুরাইয়ার মত। কিন্তু হাসিনান উপর নির্যাতনের মাত্রা বেশি হয়েছিল। তাই তিনি বিমানবন্দরে দাঁড়াতেই পারছিলেন না। হাসিনা বলেন, ‘মালিক ভালা না, খালি মারে আর খারাপ খারাপ কথা কয়। তাদের কথা না শুনলে অনেক মারে।’
এ ব্যাপারে ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান বলেন, গতবছর ২০১৯ সালে সৌদি আরব থেকে ২৪ হাজার ২৮১ জন বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। নতুন বছরের শুরুর পাঁচ দিনে ফিরলেন ৪৫৪ জন। এইভাবে ব্যর্থ হয়ে যারা ফিরছেন তাদের পাশে সবার দাঁড়ানো উচিত। পাশাপাশি এভাবে যেন কাউকে প্রতারিত না হতে হয়, যে কাজে গিয়েছেন সেই কাজই যেন পান এবং খরচের টাকাটা তুলে ভাগ্য ফেরাতে পারেন সেটা নিশ্চিত তরতে হবে রাষ্ট্র ও দূতাবাসকে। এক্ষেত্রে রিক্রুটিং এজেন্সিকেই সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব নিতে হবে। আর সরকারের নেয়া সাম্প্রতিক ১২ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়িত হলে নারী কর্মীদের নিপীড়ন কমে আসবে বলে আমরা মনে করি।
তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করছি নিঃস্ব হয়ে ফিরে আসা এই মানুষদের সাহায্য করতে। ফেরত আসাদের বিমানবন্দরে খাবার, পানিসহ নিরাপদে বাড়ী পৌঁছানোর জন্য জরুরী সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়াও বিদেশ থেকে ফেরা মানুষদের কাউন্সিলিং ও আর্থিকভাবে সহায়তার কর্মসূচি নিয়েছে ব্র্যাক।