• Youtube
  • English Version
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:২৩ অপরাহ্ন

করাঙ্গী নিউজ
স্বাগতম করাঙ্গী নিউজ নিউজপোর্টালে। ১৫ বছর ধরে সফলতার সাথে নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশন করে আসছে করাঙ্গী নিউজ। দেশ বিদেশের সব খবর পেতে সাথে থাকুন আমাদের। বিজ্ঞাপন দেয়ার জন‌্য যোগাযোগ করুন ০১৮৫৫৫০৭২৩৪ নাম্বারে।

বিশ্বনাথে ৩ নেতার মর্যাদার লড়াই

  • সংবাদ প্রকাশের সময়: বৃহস্পতিবার, ৫ মে, ২০১৬

বিশ্বনাথ (সিলেট) প্রতিনিধি: ইউপি নির্বাচন নিয়ে নানা নাটকীয়তা বিশ্বনাথে। সেখানে ক্ষণে-ক্ষণে বদলাচ্ছে দৃশ্যপট। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মুখোমুখি হয়েছেন সিলেটের রাজনীতির তিন শক্তিশালী নেতা। অন্যদিকে গতকাল থেকে পুলিশ ধরপাকড় শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। এটি হলো বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতা ইলিয়াসের শহর বিশ্বনাথ। সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরীর বাড়িও বিশ্বনাথেও। এবার বিশ্বনাথের রাজনীতিতে নতুন করে যোগ হয়েছেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আনোরুজ্জামান চৌধুরী। ফলে এই তিন নেতার রাজনীতির বাকযুদ্ধ চলছে বিশ্বনাথের ভোটে।

৭ই মে অনুষ্টিত হতে যাচ্ছে এই উপজেলার ৬ ইউনিয়নের নির্বাচন। নির্বাচনী প্রচারণাকালেই হাইকোর্টের স্থগিতাদের কারণে দেওকলস ইউনিয়নের নির্বাচন হচ্ছে না। দশঘর ইউনিয়নের নির্বাচন আগেই স্থগিত হয়ে গেছে। এ কারণে ৬ ইউনিয়নে রয়েছেন তিন ঘরানার প্রার্থী। বিশ্বনাথের বিএনপি’র প্রার্থী বাছাই করেছেন নিখোঁজ ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদী লুনা। ইউনিয়ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঘন-ঘন তিনি আসছেন বিশ্বনাথে। টানা এক সপ্তাহ নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে অসুস্থতাজনিত কারণে রোববার ঢাকায় ফিরে গেছেন তিনি।

আর বিশ্বনাথ আওয়ামী লীগের সভাপতি পংকি খান, সাধারণ সম্পাদক বাবুল আখতারকে নিয়ে ভোটের মাঠে সরব রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী।

তবে, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মজম্মিল আলীসহ পুরাতন গ্রুপের নেতারা ৬ ইউনিয়নেই আনোয়ারুজ্জামানের প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া, বিএনপি’র পক্ষে উপজেলা চেয়ারম্যান সোহেল আহমদ চৌধুরী, বিশ্বনাথ যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক ও লন্ডনপ্রবাসী সিরাজুল ইসলামের ভোট প্রচারণায় ভিন্নমাত্রা যোগ করেছেন। ৬ ইউনিয়নের মধ্যে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়ন।

পৌরসভা হচ্ছে, হবে বলে বলে এটি এখনও পৌরসভা হয়নি। তবে, ইউনিয়ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শক্তি, সমর্থনের বাকযুদ্ধ শুরু হয়েছে। সদরে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দলের নেতাদের কাছে তেমন পরিচিত না। এরপরও আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুল জলিল জালালের পক্ষে শফিকুর রহমান চৌধুরী ভোট প্রচারণায় নামায় তিনি আলোচনায় এসেছেন। কিন্তু জালালকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে আওয়ামী লীগের অপর বলয় থেকে এখানে প্রার্থী হয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান ছয়ফুল হক। তার পক্ষে আওয়ামী লীগের তৃণমূল একাট্টা হয়েছে বলে ভোটাররা জানিয়েছেন।

কিন্তু এক্ষেত্রে সুসংহত অবস্থানে রয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি জালাল উদ্দিন। শনিবার তাহসিনা রুশদীর লুনা জালালের পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছেন। রামপাশা ইউনিয়ন নিয়ে বিএনপি’র ও আওয়ামী লীগের ভেতরে চলছে নতুন মেরুকরণ। এই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী আলমগীর হোসেন। চমক দেখাতে এই ইউনিয়নে বিএনপি’র নতুন মুখ জয়নাল আবেদীন। জয়নালের পক্ষে ভোটের মাঠে উপজেলা চেয়ারম্যান সোহেল আহমদ চৌধুরী ও লন্ডন প্রবাসী বিএনপি নেতা সিরাজুল ইসলাম মাঠে সক্রিয় রয়েছেন।

ইতিমধ্যে ওই ইউনিয়নে প্রচারণা চালিয়েছেন তাহসিনা রুশদীর লুনাও। তবে, এই ইউনিয়নে আনোয়ারুজ্জামানের বলয় থেকে হেভিওয়েট প্রার্থী দেয়া হয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র নেতা আজিজুর রহমানকে প্রার্থী দিয়েছে বিদ্রোহীরা। ভোটাররা জানিয়েছেন আজিজের পক্ষে তৃণমূল কাজ করছে ।

অলংকারী ইউনিয়ন হচ্ছে- ইলিয়াস আলীর ইউনিয়ন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ইলিয়াসের ইউনিয়নে বিএনপি বিদ্রোহ থামাতে পারেনি। এই ইউনিয়নে বিএনপি’র প্রার্থী আবদুল হক। তার পক্ষে ৭টি গণসংযোগ চালিয়েছেন লুনা। তবে, পিছু ছাড়ছে না বিএনপি’র বিদ্রোহী প্রার্থী নাজমুল ইসলাম রুহেল। ইলিয়াসপত্নীকে চ্যালেঞ্জ করে নাজমুল ইসলাম রুহেল ইতিমধ্যে ভোটের মাঠে সুসংহত অবস্থান নিয়েছেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন লন্ডন প্রবাসী রফিক মিয়া। তার পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছেন শফিকুর রহমান চৌধুরী।

দৌলতপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আমির আলীর ঘুম হারাম করে দিয়েছেন বিদ্রোহী প্রার্থী আছাব উদ্দিন। লন্ডনে অবস্থান করলেও আছাবের পক্ষে ভোট প্রচারণা চালাচ্ছেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। শেষ মূহূর্তে বিএনপি আছাব ও বিএনপি’র আরব খানের মধ্যে লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। খাজাঞ্চি ইউনিয়নে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান নিজাম সিদ্দকীকে ছাড় দেয়নি বিএনপি। এই ইউনিয়নে বিএনপি’র পক্ষ থেকে শক্তিশালী প্রার্থী গিয়াস উদ্দিনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামানো হয়েছে। আর আওয়ামী লীগ প্রার্থী করেছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা শংকর দাসকে।

ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা এই ইউনিয়নে। লামাকাজীতে মূল প্রচারণায় রয়েছেন বিএনপি’র থানা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান কবির হোসেন ধলা মিয়া ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী ডা. শানুর আলী মামুন।

এদিকে, গতকাল প্রচারণাকালে বিশ্বনাথে গ্রেপ্তার হয়েছেন ইলিয়াসমুক্তি ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল কাইয়ূম। তিনি সদর ইউনিয়নে বিএনপি’র প্রার্থীর পক্ষে ভোট প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। নেতাকর্মীদের ধরপাকড় শুরু হওয়ায় বিএনপি’র ভেতরে অস্বস্তি নেমে এসেছে।

বিএনপি অভিযোগ করেছে, নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে ধরপাকড় শুরু হয়েছে। এই অবস্থা বিরাজ থাকলে একপেশে নির্বাচন হবে বলে দাবি করেন উপজেলা বিএনপি’র কয়েকজন সিনিয়র নেতা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ