• Youtube
  • English Version
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১১:১১ অপরাহ্ন

করাঙ্গী নিউজ
স্বাগতম করাঙ্গী নিউজ নিউজপোর্টালে। ১৫ বছর ধরে সফলতার সাথে নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশন করে আসছে করাঙ্গী নিউজ। দেশ বিদেশের সব খবর পেতে সাথে থাকুন আমাদের। বিজ্ঞাপন দেয়ার জন‌্য যোগাযোগ করুন ০১৮৫৫৫০৭২৩৪ নাম্বারে।

হবিগঞ্জে ধান ও বীজের আশানুরূপ ফলন

  • সংবাদ প্রকাশের সময়: মঙ্গলবার, ৩ মে, ২০১৬

নিজস্ব প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ : প্রতি বছরই বোরো মৌসুমে উচ্চমূল্যে বাজার থেকে ধানের বীজ ক্রয় করতে হয় কৃষকদেরকে। আবার ধান আবাদে সেচের জন্য ব্যয় হয় প্রচুর অর্থ। অথচ চাইলে কৃষকরা নিজেরাই ভাল মানের বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ করতে পারে। এমনকি কম সেচের মাধ্যমে ফসলও ফলানো যেতে পারে।

হবিগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের একটি প্রদর্শনী কৃষকদেরকে নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে। চলতি বোরে মৌসুমে ‘খামার পর্যায়ে উন্নত পানি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রিচি গ্রামের মরাবাতাই লংলা পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি ৫ একর জমিতে ব্রি-২৯ ধানের আবাদ করে। এতে হেক্টর প্রতি ফলন হয় ৫.৮ মেট্রিক টন। উৎপাদিত ফসল বীজ হিসাবে সংরক্ষণ করে কৃষক পর্যায়ে বিক্রয় করা হবে। এক প্রদর্শনীর মাঠ দিবসে কৃষকদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ পরিলক্ষিত হয়েছে।

মাঠ দিবসে উপস্থিত ছিলেন- জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মজুমদার মো. ইলিয়াছ, হবিগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. কায়কোবাদ, প্রেসক্লাব সভাপতি ফজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক শাহ ফখরুজ্জামান, সমিতির সভাপতি আরব আলী, সাধারণ সম্পাদক ডা. জিতু মিয়া, কৃষকলীগ সভাপতি আরব আলী, আহসান উল্লাহ, আব্দুর রহিম ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সন্তোষ চন্দ্র কর।

এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. শাহ আলম বলেন- হবিগঞ্জের ছয় উপজেলায় অতিবৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টিতে তিন দফায় তিন হাজার ২৫০ হেক্টর বোরো জমির ফসল নষ্ট হয়ে প্রায় ১৭ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এরপরও চার লাখ ২৯ হাজার ৪৪৬ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের সম্ভাবনায় আশাবাদী কৃষি বিভাগ। এদিকে রোবো ধান বীজেরও ভাল ফলন হয়েছে।

তিনি জানান- ধান রোপণের পর থেকে পাকার আগ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রকৃতির উপর কারো হাত নেই। তাই অতিবৃষ্টিতে ফসলি জমি নিমজ্জিত হয়ে ও শিলাবৃষ্টিতে ধান কাটা শুরুর মুহূর্ত থেকে তিন দফা ক্ষতির সম্মুখিন হন কৃষকরা। এরপরও উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে আশাবাদী তারা।

তিনি জানান- এ বছর এক লাখ ১৩ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে চার লাখ ২৯ হাজার ৪৪৬ মেট্রিক টন। তিন দফায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে তিন হাজার ২৫০ হেক্টর বোরো জমির ফসল নষ্ট হয়ে সম্ভাব্য পাঁচ হাজার ৫২৮ মেট্রিক টন চাল উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন কৃষক। যার বাজার মূল্য ১৬ কোটি ৮২ লাখ টাকা।

তিনি আরও জানান- ইতোমধ্যে হবিগঞ্জের সব অঞ্চলের বেশিরভাগ জমির ধান পেকে গেছে। মে মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে বোরো ধান কাটা শেষ হওয়ার ব্যাপারে তিনি আশাবাদী।

ইতোপূর্বে হবিগঞ্জ জেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান তিন দফায় হবিগঞ্জে বোরো ধানের ক্ষতির একটি বিবরণ দেন।

এতে জানা যায়- প্রথম দফায় ৩ এপ্রিল হবিগঞ্জ সদর, বাহুবল, নবীগঞ্জ, বানিয়াচং, মাধবপুর ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় ৭৩৫ হেক্টর বোরো জমি অতি বৃষ্টিতে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে ৬৫৩ হেক্টর জমি সম্পূর্ণ তলিয়ে সাত কোটি ৬৫ লাখ টাকা মূল্যের দুই হাজার ৪৬৮ মেট্রিকটন চালের ক্ষতি হয়। ফলে তিন হাজার ৩৩৫ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হন।

দ্বিতীয় দফায় ১৫ এপ্রিল অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে ৪৫৫ হেক্টর বোরো জমি আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে ৪০০ হেক্টর জমি সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়। ফলে এক হাজার ৫২০ মেট্রিকটন চাল বিনষ্ট হয়ে চার কোটি ৭১ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হন দুই হাজার ৭৫৬ জন কৃষক।

তৃতীয় দফায় ১৯ এপ্রিল নবীগঞ্জ ও বানিয়াচং উপজেলায় শিলাবৃষ্টিতে দুই হাজার ৭০ হেক্টর বোরো জমি আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে ৩৬০ হেক্টর জমি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়। ফলে এক হাজার ৪৪০ মেট্রিক টন চাল বিনষ্ট হয়, যার বাজার মূল্য চার কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এতে ক্ষতির শিকার হন নয় হাজার ৯০ জন কৃষক।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ