শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ০৮:৪৬ অপরাহ্ন
জামালগঞ্জ (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার ফেনারবাঁক ইউনিয়নের পাকনা হাওরে ইরি, বোরো ধান কাটা শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। অতিবৃষ্টিতে পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় শ্রমিকগণ অন্যত্রে চলে যাওয়ায় ওই সংকট দেখা দিয়েছে বলে জানান স্থানীয় ভুক্তভোগীরা।
প্রতি বছরেই দল বেঁধে বিভিন্ন জেলা থেকে ধান কাটার শ্রমিক আসে পাকনার হাওরে। এ বছর অন্যান্য জেলা থেকে ধান কাটার শ্রমিক না আসায় শ্রমিক সংকটের কারণে শিশু শ্রম বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই কারণে ভাটি এলাকার কৃষকগণ পড়েছেন বিপাকে।
বোরো জমি কাটার জন্য তাদের নিজ নিজ গ্রামের লোকজন দল বেঁধে হাওরে ধান কাটা শুরু করেছেন। বিশাল পাকনার হাওরে এলাকার স্থানীয় শ্রমিকরা নিজ নিজ জমিতে ধান কাটবে নাকি অন্যদের জমিতে ধান কাটবে এ নিয়ে তাদের মনে কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীরা দল বেঁধে ধান কাটা জন্য হাওরে পাড়ি জমাচ্ছে।
সরজমিনে জানা যায়- গতকাল সোমবার সকালে পাকনা হাওরে কথা হয় শিশু জমির উদ্দিন (১২) বলেন- আমরা এক ফসলি বোরো জমি চাষ করি এই ফসল দিয়ে বার মাস চলতে হয় যদি ফসল ঘরে না তুলতে পারি তাহলে খাব কি?
লক্ষ্মীপুর গ্রামের স্কুল শিক্ষার্থী আরমান (১৩) জানান- আমার বাবা ২ কেয়ার জমি চাষ করেন এ দিয়ে কোন ভাবে সংসার চলে, যদি জমির ফসল না তুলতে পারি তাহলে পরিবারের ৫ জন না খেয়ে দিনযাপন করতে হবে।
কামারগাঁও গ্রামের রতিষ দাস (১১) বলেন- ভাই ১ একর জমি করতে প্রায় ৬ হাজার টাকা খরচ করে জমি চাষ করা হয়েছে। এই টাকা এনজিও অফিস থেকে ঋণ এনে জমি চাষ করা হয়েছে। যদি ধান না কাটা যায় তাহলে কি ভাবে ঋণ পরিশোধ করব, না হয় উপোষ থেকে মরে যাব।
এই নিয়ে কথা হয় লক্ষ্মীপুর গ্রামের শিশু শ্রমিক সাহিদুল ইসলামস (১৫) জানান- আমরা গরীব মানুষের সন্তান, দিন আনি দিন খাই। তাই আমরা ৭ জন মিলে প্রতি কেয়ার জমি ধান কাটার জন্য ১৫ শত টাকা পাই। দিনে ১ কেয়ার কাটতে পাড়ি। এতে করে প্রতি জনে দিন ২১৪ টাকা পাই। পরিবারকে সাহায্য করি বাবা-মাসহ সবাই খুশি। আমরা ধান কাটার সুযোগ পাইতাম না, যদি অন্য জায়গা থেকে বেপারী আসত।