শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ০২:৫৬ অপরাহ্ন
করাঙ্গীনিউজ: প্রাথমিক শিক্ষার মাঠ প্রশাসনে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে । একই অফিসে অফিস প্রধান হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় আরেক জন কর্মকর্তাকে আত্মীকরণ করে পদায়ন করা হয়েছে ।
নিয়োগ বিধি ছাড়া কোন পদে পদায়ন করার কোন বিধি না থাকলেও সম্পূর্ণ বিধি বহির্ভূতভাবে উপজেলা রিসোর্স সেন্টার এ ইন্সট্রাক্টর হিসেবে ১৯জন সাবেক উপবৃত্তি মনিটরিং অফিসারদের ২২ ডিসেম্বর , ২০২২ তারিখে সহকারী পরিচালক ফয়জুন্নাহার স্বাক্ষরিত নিয়োগ আদেশ জারি করা হয় যাতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের অনুমোদন রয়েছে।
উপজেলা রিসোর্স সেন্টারে ইন্সট্রাক্টর পদে দীর্ঘ ছয় বছর যাবত দায়িত্ব পালন করা অবস্থায় কর্মকর্তা থাকা সত্ত্বেও আত্মীকরণকৃত কর্মকর্তাদের উক্ত পদে পদায়ন করা হলো । এতে করে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষার মাঠ পর্যায়ের এ অফিসটিতে ।
উচ্চ আদালতের আদেশে উপবৃত্তি মনিটরিং অফিসারদের প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের নবম গ্রেডে পদায়নের কথা বলা হলেও নির্দিষ্ট করে উপজেলা রিসোর্স সেন্টারেই পদায়ন করতে হবে তা বলা হয়নি।
উল্লেখ্য মনিটরিং অফিসার গণ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে কর্মরত থেকে প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রকল্পের অধীনে উপবৃত্তি কার্যক্রম তদারকি করে আনসছিলেন । প্রকল্প শেষে তাদের চাকুরী অবসান হলে তারা আদালতে মামলা করে প্রাথমিক শিক্ষায় নবম গ্রেডে পদায়নের আদেশ পায়।
প্রাথমিক শিক্ষার অন্যান্য অফিসে নবম গ্রেডের পদ খালি থাকলেও শূন্যপদ না থাকা সত্ত্বেও উক্ত কর্মকর্তাদের উপজেলা রিসোর্স সেন্টার (ইউআরসি) তে পদায়ন করা হলো ।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরাধীন উপজেলা শিক্ষা অফিসে প্রায় ২ শতাধিক নবম গ্রেডের উপজেলা শিক্ষা অফিসারের পদ শূন্য রয়েছে । প্রাইমারী টিচার্স ট্রেনিং ইন্সটিটিউটে প্রায় ৪ শতাধিক নবম গ্রেডের ইন্সট্রাক্টর এর পদ শূন্য থাকা সত্ত্বেও পদ ফাঁকা না থাকা সত্ত্বেও কর্মরত কর্মকর্তার মাথার উপরে একই পদে উপজেলা রিসোর্স সেন্টারেই কর্তৃপক্ষ তাদের পদায়ন করেছে। অথচ দীর্ঘ দিন যাবত পিটিআই ইন্সট্রাক্টর ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার এর শূন্যপদ পূরণের অপেক্ষায় রয়েছে ।
অথচ ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাস থেকে বিভিন্ন সময়ে উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর পদে চলতিদায়িত্ব পাওয়া ১৫২ জন কর্মকর্তার প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে মামলা করে স্টে ওর্ডার নিয়ে রাখলেও কর্তৃপক্ষ আদালতের আদেশ না মেনে অনেকটা গায়ের জোরের এবং মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষার নস্যাৎ করার লক্ষ্যে একাজ করেছেন কি না তা মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন। এতে ইউআরসি ইন্সট্রাক্টর পদে কর্মরত চলতিদায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ সম্মানহানির আশঙ্কা করছেন এত তারা চাকরী করার ক্ষেত্রে মানসিক ভাবে শক্তি হারাচ্ছেন ।
এতে প্রায় ছয় বছর যাবত কর্মরত থাকা কর্মকর্তাগণের সামাজিক ভাবে সম্মানহানি হচ্ছে । এতে মাঠপর্যায়ে বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরী হয়েছে ।
অথচ বিধি মোতাবেক কোন ধরণের কারণ ছাড়াই কোন কর্মকর্তার চলতি দায়িত্ব বাতিল করার এখতিয়া কর্তৃপক্ষের নাই । এমনকি যে নিয়োগবিধি দোহাই দিয়ে এসব কর্মকর্তাদের পদোন্নতি আটকে রাখা হয়েছে সেখানে নিয়োগ বিধি ছাড়া কোন ধরনের নিয়োগ আদেশ জারি করার কোন এখতিয়ার কোন কর্তৃপক্ষের না থাকলেও সাবেক মনিটরিং অফিসার দের উক্ত পদে নিয়োগ আদেশ জারী করা হয় । এতে আইনের শাসন যেমন বিঘ্নিত হচ্ছে তেমনি অনিয়ম প্রাতিষ্ঠানিক রূপ ধারণ করছে বলে এ আদেশের আলামত পাওয়া যায় ।
অথচ সম্পূর্ণ বেআইনি বিধি বহির্ভূতভাবে মনিটরিং অফিসারদের আদেশ জারী করা হয়েছে , যেখানে একই পদে অন্য আরেক জন কর্মকর্তা কর্মরত আছেন । এই নিয়োগ আদেশ জারী করায় মাঠ পর্যায়ে উপজেলা রিসোর্স সেন্টারে কর্মরত ইন্সট্রাক্টরগণ মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন এবং তারা তাদের সম্মান হানির জন্য কতিপয় চক্রান্তকারী কর্মকর্তাদের দায়ি করছেন বলে নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে একজন কর্মকর্তা জানান ।
উক্ত ১৯ জন সাবেক মনিটরিং অফিসার কে উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের পরিবর্তে পিটিআই এর ইন্সট্রাক্টর শূন্য পদে অথবা উপজেলা শিক্ষা অফিসারের শূন্যপদে পদায় করলে এ বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টির হাত থেকে প্রাথমিক শিক্ষার মাঠ প্রশাসন মুক্তি পাবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন ।