শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ০৮:২৫ অপরাহ্ন
দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি : আসন্ন তৃতীয় দফা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে দোয়ারাবাজার উপজেলার ৯ ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ আজ শনিবার। তৃণমূল ভোটারদের ভোটে কে হচ্ছেন জনগণের কাণ্ডারী।
প্রশাসনের সব প্রস্তুতি শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল জানিয়েছেন- নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবেই অনুষ্ঠিত হবে। কোনো কেন্দ্রে কেউ কোনোভাবেই প্রভাব খাটাতে পারবেনা বলেও তিনি দাবি করেছেন। প্রার্থীরাও শুক্রবার সকলের কাছে ভোট প্রার্থনা করেছেন। প্রচণ্ড বৈরী আবহাওয়া আর বৃষ্টি উপেক্ষা করে শেষ বারের মতো সবাই নীরবে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে দেখা গেছে।
ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে উপজেলার ৯ ইউনিয়নে চূড়ান্ত প্রতিদ্বনদ্বিতায় ছিলেন ৬১ জন প্রার্থী। তন্মধ্যে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে ৯ জন, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ১৭ জন। বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে ৯ জন, বিএনপির বিদ্রোহী ১৩ জন, জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে ৬ জন, বিদ্রোহী ১ জন এবং স্বতন্ত্র ৭ জন প্রার্থী ভোট যুদ্ধে ছিলেন। অস্তিত্বের লড়াইয়ের মুখোমুখি হয়েছেন ৭ বর্তমান চেয়ারম্যান।
যাদের মধ্যে ৬ জনই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে চেয়ারম্যান পদে লড়েছেন। আর একমাত্র সুরমা ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান শাহজাহান মাস্টার বিএনপির মনোনীত হয়ে ধানের শীষ প্রতিক নিয়ে ভোট যুদ্ধে ছিলেন। ৭ জনের মধ্যে আজ জনগণের রায়ে যে কেউ পরাজিত হলে আগামী দিনে রাজনীতির মাঠেও তারা অস্তিত্ব সংকটে পড়তে পারেন বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।
প্রতিক বরাদ্দের পর থেকেই তারা ভোটের মাঠে ছিলেন কোমর বেঁধে। ৯ ইউনিয়নের মধ্যে দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে শুধু উপজেলার মান্নারগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যানমোহাম্মদ আলী খাঁন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেও বাকি ৮ ইউনিয়নের মধ্যে পান্ডারগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহিদ পেয়েছিলেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন। অন্য ৭ জনই দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে অস্তিত্বের মুখোমুখি হয়েছেন। আজ তারা কি তাদের চেয়ার ফেরত পাচ্ছেন। এখন দেখার জন্য অপেক্ষার পালা।
উল্লেখ্য, চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন- নরসিংপুরে বিএনপির সামছুল হক নমু, জাপার আবুল কালাম মো. সদরনূর, স্বতন্ত্র কামরুজ্জামান ভূঁইয়া, আজিজুর রহমান ও প্রবাসী আব্দুল আলী, আওয়ামী লীগের আব্দুর রশিদ তালুকদার, বিদ্রোহী বর্তমান চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, একেএম আইয়ূবুর রহমান রহমানী, নূরুল আমিন ও শাখাওয়াৎ হোসেন চৌধুরী।
বাংলাবাজারে আওয়ামী লীগের এম আবুল হোসেন, বিদ্রোহী বর্তমান চেয়ারম্যান জসিম আহমদ রানা, বিএনপির আব্দুর রহিম, বিদ্রোহী মুর্শেদ আলম, জাপা’র বিদ্রোহী আবু ছালেহ।
সুরমায় বিএনপির শাহজাহান মাস্টার (বর্তমান চেয়ারম্যান), বিদ্রোহী হারুন অর রশিদ, জাপার ইকবাল হোসেন বুলু, আওয়াম লীগের খন্দকার মামুনুর রশিদ, বিদ্রোহী হুমায়ূন রশিদ, স্বতন্ত্র আব্দুল বাখির।
বগুলাবাজারে আওয়ামী লীগের মিলন খান, বিদ্রোহী বর্তমান চেয়ারম্যান আহাম্মদ আলী আপন, বিএনপির আরিফুল ইসলাম জুয়েল, বিদ্রোহী জামাল উদ্দিন, জাপার ডা. গিয়াস উদ্দিন।
ল²ীপুরে আওয়ামী লীগের জহিরুল ইসলাম, বিদ্রোহী বর্তমান চেয়ারম্যান আমিরুল হক, বিএনপির আতাউর রহমান স্বপন, বিদ্রোহী খলিলুর রহমান ও হারুনুর রশিদ, জাপা’র জালাল আহমদ, স্বতন্ত্র রইছ মিয়া।
পান্ডারগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের আব্দুল ওয়াহিদ (বর্তমান চেয়ারম্যান), বিদ্রোহী আমজাদ আলী, মোহাম্মদ আলী ও প্রবাসী হুমায়ুন কবীর চৌধুরী, বিএনপির আব্দুস শহিদ বাপন, বিদ্রোহী সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ, স্বতন্ত্র ধন মিয়া।
দোহালিয়ায় জাপা’র লিপিয়া বেগম, আওয়ামী লীগের আনোয়ার মিয়া আনু, বিদ্রোহী বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল, শামীমুল ইসলাম শামীম, এমরাজ তালুকদার ও রাশেন্দ্র দাস, বিএনপির ফখর উদ্দিন, বিদ্রোহী দেওয়ান হুমায়ূন চৌধুরী, মিজানুর রহমান ও কাজী মাহবুবুল ইসলাম।
মান্নারগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের বরুণ চন্দ্র দাস, বিদ্রোহী সামছুদ্দিন আহমদ, বিএনপির আবু হেনা আজিজ, বিদ্রোহী আইন উদ্দিন, ইজ্জত আলী ও কৃষ্ণ মোহন রায়, জাপা’র সিরাজ মিয়া।
দোয়ারা সদরে আওয়ামী লীগের আব্দুল হামিদ, বিদ্রোহী বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক, বিএনপির আব্দুল বারী ও বিদ্রোহী নূরুল আমিন।
এছাড়া উপজেলার ৯ ইউনিয়নের ৮১টি ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে ৩৮৪ জন এবং ২৭টি সংরক্ষিত আসনে ৯৯ জন সদস্যা প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
উল্লেখ্য, আগামী ২৩ এপ্রিল দোয়ারাবাজার উপজেলায় ৯ ইউনিয়নে ৮১টি কেন্দ্রে একযোগে ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।