রবিবার, ১১ মে ২০২৫, ০৪:১৮ পূর্বাহ্ন
মোহাম্মদ শাহ আলম,হবিগঞ্জ: বেশি বেতন ও ভালো চাকরির প্রলোভনে দালালের মাধ্যমে সৌদি আরব গিয়ে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন হবিগঞ্জের এক নারী। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে দালালকে বারবার অনুরোধ জানালেও ওই দালাল তাকে ফিরিয়ে আনছে না। উল্টো তাকে হত্যা করা হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন তিনি।
মাসকুরা আক্তার নামে ওই নারী সদর উপজেলার লুকড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ বামকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। স্বামী পরিত্যাক্তা এই নারী তিনি তিন সন্তানের জননী। বামকান্দি গ্রামে তিনি নানার বাড়িতে থাকেন।
তার আত্মিয় স্বজনরা জানান, স্বামীর সাথে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর থেকে তিন সন্তানকে নিয়ে বিপাকে পড়েন মাসকুরা। এক পর্যায়ে উত্তর বামকান্দি গ্রামের আশরাফ উদ্দিনের ছেলে জসিম উদ্দিন তাকে সৌদিআরব যাওয়ার প্রলোভন দেখান। ভাগ্য বদলের আসায় জসিমের প্রলোভনে পড়ে সৌদি আরব যেতে রাজি হন মাসকুরা। গত এক মাস আগে তিনি সৌদি আরব যান।
ভিডিও কলে মাসকুরা তার পরিবারকে জানায়- সৌদি আরব যাওয়ার দুইদিন পরই এক ব্যক্তি তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে ওই ব্যক্তি তাকে মারপিট করে। এভাবে বেশ কয়েকদিন চলে তার উপর শারীরিক নির্যাতন। এক পর্যায়ে ওই ব্যক্তি তাকে ট্রাভেলস অফিসে রেখে যান।
ট্রাভেলস কর্মকর্তারা তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে অন্য একটি বাসায় চাকরি দেন। কিন্তু নির্মম নির্যাতনের কারণে অসুস্থ থাকায় তিনি সেই বাসায় ঠিকভাবে কাজ করতে পারছেন না। যে কারণে ওই বাসার মালিকরাও তাকে রাখতে চাচ্ছেন না।
এ অবস্থায় মাসকুরা দেশে আসার জন্য ট্রাভেলসকে জানালে তারা তাকে দেশে ফেরত পাঠাতে রাজি হচ্ছে না। এক পর্যায়ে তাকে দেশে ফেরত আনতে দালাল জসিমকে অনুরোধ করে। কিন্তু জসিম তাকে দেশে আনবে না বলে জানিয়ে দেয়। উল্টো দালাল জসিম মাসকুরাকে খুন করার হুমকি দেয় বলেও তিনি জানান।
এ ব্যাপারে মাসকুরার মা অজুফা বেগম জানান- তিনটা শিশু সন্তানকে রেখে মাসকুরা দালাল জসিমের প্রলোভনে দেড়মাস আগে সৌদি আরব যায়। সেখানে যাওয়ার পরই মাসকুরার উপর চলে নির্মম নির্যাতন। আমি আমার মেয়েকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য গ্রামের ময়মুরুব্বিদের নিয়ে দালাল জসিমকে বারবার অনুরোধ করলেও সে পাত্তা দিচ্ছে না। উল্টো সে আমাদের খারাপ ভাষায় গালিগালাজ করে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জসিম উদ্দিনের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে মুসকুরাকে সৌদি আরবে পাঠানোর কথা স্বীকার করেন। তবে এর বেশি তিনি কিছু বলতে চান না।