শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ০৬:৫৩ অপরাহ্ন
চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার আমুরোড হাই স্কুল এন্ড কলেজের নবম শ্রেণীর ছাত্রী (১৪) কে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
নির্যাতিতার মা হাজেরা খাতুন (৮ নভেম্বর ) রবিবার বাদী হয়ে চুনারুঘাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, কিছুদিন পূর্বে উপজেলার বাসুল্লা কবিলাসপুর গ্রামের কনই মিয়ার পুত্র বিয়ের ঘটক আইয়ূব আলী (৩৫) উপজেলার মিরাশি ইউনিয়নের আইতন ( বটতলা) গ্রামের আতর আলীর পুত্র বখতিয়ার (৪০) কে নিয়ে তাদের বাড়িতে তার মেয়ের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসেন। এসময় তারা জানান তার মেয়ে আমুরোড হাই স্কুল এন্ড কলেজের নবম শ্রেণীর একজন মেধাবী ছাত্রী। এখনো তার বিয়ের বয়স হয়নি। অপারগতা প্রকাশ করে তাদের কে ফিরিয়ে দেন।
বখতিয়ার তাদের দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়ায়। সে দুইদিন পর এক বান্ডিল টিন নিয়ে ফের তাদের বাড়িতে আসে। তারা এগুলোর মানে জিজ্ঞেস করলে সে বলে তার অনেক সম্পদ এবং গরিব দুঃখিদের সব সময় সাহায্য করে থাকে। এর পর কয়েকদিন তাদের বাড়িতে ভদ্রবেশে যাওয়া আসা করে। কিছুদিন পর সে অনধিকার চর্চা করে তার স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে তাদের বাড়িতে আসে। এবং পরিবারের সবাইকে নিয়ে ছবি তুলে। তাদেরকে সরকারি অনুদান পাইয়ে দেয়ার আশ্বাসে (এন আই ডি ) জাতীয় পরিচয় পত্র নিয়ে যায়।
কয়েকদিন পর সে ওই ছাত্রী কে বিয়ে করেছে দাবী করে তাকে ঘরের মধ্যে জাপটে ধরে। শুধু তাই নয় শরিরের বিভিন্ন অংগে র্স্পশ করে যৌন নির্যাতন করে। এসময় ওই ছাত্রী চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। পরপর কয়েকদিন বখতিয়ার এরকম যৌন নির্যাতন করলে তার ভয়ে তারা মেয়েকে নিয়ে অন্যের বাড়িতে রাত্রি যাপন করেন। প্রায় তিন মাস তারা এভাবে অন্যের বাড়িতে থাকেন । বখতিয়ার ওই স্কুল ছাত্রীর ছবি তার ছবির সাথে জোড়া লাগিয়ে এডিটিং করে ভুয়া বিবাহ স্মরণিকা বানিয়ে প্রচার করতে শুরু করে। বিষয়টি তাদের নজরে আসলে স্কুল ছাত্রী কয়েকবার আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে। নির্যাতিতার মা ও স্বজনরা তাকে শান্তনা দেন।
তারা স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার সফিকুর রহমান সাপু ও চেয়ারম্যান সন্জু চেীধুরীর দারস্ত হন। তারা বখাটে বখতিয়ার কে খবর দেন এবং তার মুরুব্বি নিয়ে আসতে বলেন। আহম্মদাবাদ ইউনিয়ন কার্যালয়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ূব আলী ও হুসাইন আলী রাজন সহ শালিস বৈঠক করেন। বৈঠকে নির্যাতন প্রমান হয়ে বখতিয়ার কে পুনরায় ওই পরিবার কে ডিস্টাব না করার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু কে শুনে কার কথা, ফের ওই মেয়েকে বিভিন্ন হুমকি ও মেসেজ দিতে থাকে সে । উপজেলা পর্যায়ে দুইজন সরকার দলীয় নেতার আত্মীয় পরিচয় দিয়ে তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে এসব অপকর্ম করছে বখতিয়ার।
আমুরোড হাই স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো: আলা উদ্দিন দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, মেয়েটি তার স্কুলে নবম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী। এধরনের যৌন নির্যাতন ছাত্রীদের বিদ্যালয়ে আসতে বাধা সৃষ্টি করে। তিনি সুষ্ঠ বিচার দাবী করেন। এদিকে করোনার কারনে স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় ছাত্রছাত্রীদের মাঝে বিষয়টি নিয়ে তেমন জানাজানি হয়নি। জানা জানি হলে বড় ধরনের আন্দোলনের ডাক দেয়ার হুমকি দিয়েছেন কয়েকজন কলেজ ছাত্র।
চুনারুঘাট থানার ওসি আলী আশরাফ জানান, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।