শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ০৯:০০ অপরাহ্ন
বড়লেখা (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় প্রেমঘটিত কারণে প্রেমিক জুমেল আহমদ পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সহযোগীদের নিয়ে নির্মমভাবে খুন করেছে ফরিদা বেগমকে।
এ হত্যার ঘটনায় পুলিশ এ পর্যন্ত প্রেমিক জুমেলসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
গত ১৩ জুন উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের ইসলামপুর এলাকার জমি থেকে ফরিদার লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে ফরিদার মা অজ্ঞাতনামা আসামী করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ এ ঘটনার তদন্ত করে উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের ইটাউরি কান্দিগ্রামের সাইন উদ্দিনের ছেলে জুমেল আহমদ ওরফে জুবেলকে (২৫) গ্রেপ্তার করে। পরে রিমান্ডে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে হত্যার সাথে জড়িত আরো দুই সহযোগির নাম প্রকাশ করে।
তার দেয়া তথ্যে পুলিশ নিজবাহাদুরপুর ইউপির ইটাউরি কান্দিগ্রামের মখলিছ উদ্দিনের ছেলে প্রাইমারি স্কুলের দফতরি জাকির আহমদকে (২৫) গ্রেপ্তার করে।
হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার জুমেল আহমদ ওরফে জুবেল বৃহস্পতিবার (১২ জুলাই) বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাসান জামানের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ওয়াহেদ গাজী।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ জুন উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের ইসলামপুর এলাকার জমি থেকে ফরিদা বেগমের লাশ উদ্ধার করা হয়। ফরিদা ইসলামপুর গ্রামের খলকু মিয়ার মেয়ে। প্রায় ছয় বছর আগে ফরিদা বেগমের সাথে সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলার পাথারিপাড়া গ্রামের গৌছ উদ্দিনের বিয়ে হয়। তিন বছর আগে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর থেকে ফরিদা বেগম বাবার বাড়িতে থাকতেন।
এদিকে বাবার বাড়ি থাকাকালীন উত্তর শাহবাজপুর ইউপির ইটাউরি কান্দিগ্রামের সাইন উদ্দিনের ছেলে জুমেল আহমদ ওরফে জুবেলের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। ঘটনার রাতে (১২ জুন) জুমেল কয়েকজন সহযোগী নিয়ে ফরিদার বাড়িতে গিয়ে তাকে ঘর থেকে বের করে আনে। এরপর সহযোগীদের নিয়ে শ্বাসরোধ করে ফরিদাকে হত্যার পর লাশ পাশের ক্ষেতের কাদা-পানিতে উপুড় অবস্থায় ফেলে যায়।
এ ঘটনায় মামলা হলে পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় মো. জুমেল আহমদের সম্পৃক্তার প্রমাণ পায়। এরপর উত্তর শাহবাজপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইন-চার্জ মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে গত ২ জুলাই চান্দগ্রাম এলাকা থেকে গ্রেফতার করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ওয়াহেদ গাজী। হত্যার রহস্য উদঘাটনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড চান তদন্ত কর্মকর্তা। গত সোমবার (০৯ জুলাই) আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। জিজ্ঞাসাবাদে সে পুলিশের কাছে হত্যার বিষয়ে প্রাথমিক স্বীকারোক্তি ও সহযোগিদের নাম প্রকাশ করে।
তার দেয়া তথ্যে পুলিশ নিজবাহাদুরপুর ইউপির ইটাউরি কান্দিগ্রামের মখলিছ উদ্দিনের ছেলে প্রাইমারী স্কুলের দফতরি জাকির আহমদকে (২৫) গ্রেপ্তার করে।
রিমান্ড শেষে বৃহস্পতিবার (১২ জুলাই) দুপুরে বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাসান জামানের আদালতে জুমেল আহমদ ওরফে জুবেলকে হাজির করলে সে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক এ জবানবন্দি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওয়াহেদ গাজী বলেন, ‘তিনজনে মিলে হত্যা করে ফরিদাকে। প্রেমঘটিত বিষয়ে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকান্ড ঘটনানো হয়। জুমেল আদালতে তার নিজের নামসহ তিনজনের নাম বলেছে। এ পর্যন্ত দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পলাতক অন্য আসামীকে গ্রেপ্তার চেষ্টা অব্যাহত আছে। ’