রবিবার, ১১ মে ২০২৫, ০৪:০৩ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জে গ্রাম্য আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করে যুবক লিটন মিয়ার (১৩) লাশ পরিবারের জিম্মায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকালে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে তার লাশ পরিবারের জিম্মায় হস্তান্তর করা হয়।
এদিকে আটক রিংকু মিয়া (২০) কে কোর্টের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। সে ওই গ্রামের মৃত আব্দুস সহিদের পুত্র। গত বৃহস্পতিবার রাতে সদর উপজেলার উচাইল চারিনাও গ্রামের তাউছ মিয়ার পুত্র লিটন মিয়া (১৩) প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হয়। তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উচাইল চারিনাও গ্রামের বাসিন্দা উচাইল আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জহুর আলী এবং সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলী আকবর চৌধুরী শাহীনের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছিল। আর এ নিয়ে তাদের মাঝে একাধিকবার হামলা সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। গত ৯ ফেব্রুয়ারি উভয়পক্ষের মাঝে সংঘর্ষ হয়। এতে জহুর আলী নিহত হন।
এ ব্যাপারে নিহত জহুর আলীর পুত্র ইউপি সদস্য আব্দুল আওয়াল বাদী হয়ে ৯৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর গ্রেফতার আতঙ্কে শাহীনের পক্ষের ৬১টি পরিবার বসতবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। এ সুযোগে আসামিদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। এ মামলার আসামি করা হয় তাউছ মিয়ার ১৩ বছর বয়সী পুত্র লিটন মিয়াকেও।
সম্প্রতি লিটনসহ মামলার বেশ কয়েকজন আসামি আদালত থেকে জামিন নেয়। এরই মধ্যে বাদীপক্ষের লোকজনের বাড়িতে আগুন দেয়ার অভিযোগে ২১ এপ্রিল সদর থানায় তাদের বিরুদ্ধে আরো একটি মামলা দায়ের করা হয়। চলতি মৌসুমে জমির ধান কাটতে বাড়িতে যায় আসামিপক্ষের লোকজন। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাদী আব্দুল আওয়াল ও তার ভাই জামিল মিয়া পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেন।
বিকেলে সদর থানার এসআই সুমন হাজরার নেতৃত্বে পুলিশ সেখানে গিয়ে কিশোর লিটন মিয়াকে মুমুর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। এরপর রাত ১০টার দিকে সে মারা যায়।
ঘটনার পর রাতেই সদর থানার ওসি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ও শায়েস্তাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইয়াছিনুল হকের নেতৃত্বে পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে হত্যর সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে রিংকু মিয়াকে গ্রেফতার করে।
শুক্রবার রাত ১০ টায় এ রিপোর্ট লেখাকালে সদর থানা ওসি জানান, রিংকুকে ৫৪ ধারায় আদালতে প্রেরণ করা হয়। এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি।