নিতেশ দেব, লাখাই ( হবিগঞ্জ): ভারি বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে দুঃখ খ্যাত খোয়াই নদী গত শনিবারে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার লোকড়া ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের সম্মুখ স্থান দিয়ে নদীর বাঁধ ভেঙে যায়।
স্থানীয়রা জানান, খোয়াই নদীর পানি পার্শ্ববর্তী লাখাই উপজেলায় প্রবেশ করছে। লাখাই উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। এতে করে সবকটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। প্রতিদিনই ব্যাপক ভাবে বন্যার পানি বেড়েই চলছে।এদিকে পানি বেশে গেছে অনেক মৎস্য খামারে। এছাড়াও পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভিন্ন স্থানে রাস্তা ঘাট, বাড়ি-ঘরে পানি প্রবেশ করায় জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ভেঙে গেছে ব্রিজ। বন্যায় কবলিত এসব মানুষ আশ্রয় নিয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র ও অন্যের বাড়িতে। এর মধ্যে লাখাই সদর,বামৈ ও বুল্লা ইউনিয়নের গ্রাম গুলি বেশী প্লাবিত হয়েছে। তাদের চলাচলের একমাত্র বাহন নৌকা।
বন্যায় কবলিত যারা দিনমজুর তাদের কষ্টের শেষ নেই। তিন বেলা দু মুঠো খাবার যোগাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ওইসব পরিবারের। অনেকেই রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। বন্যায় প্লাবিত হওয়া এলাকার শিশু-কিশোরদের নিয়েও অনেক কষ্টে রয়েছে তাদের পরিবার। মানুষ মাচা, টং ও নৌকায় দিন কাটাচ্ছে। এতে রান্না-বান্না সহ নানা সমস্যায় চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন তারা। বৃষ্টি আসলে পানিতে ভিজতে হয়। গরু-ছাগল সহ গৃহপালিত পশুপাখি নিয়ে ও রয়েছে তারা মহাবিপদে।
উপজেলা কৃষি অফিসার শাকিল খন্দকার জানান, লাখাই উপজেলায় এবারের বন্যায় এ পর্যন্ত ১৬শত ৫০ হেক্টর আউশ ধানের জমিন পানির নিচে নিমজ্জিত এবং ১৭শ হেক্টর বোনা আমন ধান আবাদ করে ছিল সবই বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এব্যাপারে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো নির্নয় করা সম্ভব হচ্ছে না।
লাখাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শরীফ উদ্দিন বলেছেন, ইতোপূর্বে পানিবন্দি মানুষের জন্য ১৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছেন। এর মধ্যে ৮০টিরও বেশী পরিবার ও ৩৭২ জন পুরুষ,মহিলা ও শিশু বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আছে তবে এর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। পানি বাড়ার আশস্কায় আরও আশ্রয়কেন্দ্র খোলার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রেখেছেন। পানিবন্দি মানুষের মাঝে ত্রাণ ও শুকনো খাবার বিতরণ করেছি। একই সাথে পানি বিশুদ্ধ করণ ট্যাবলেটও বিতরণ করা হচ্ছে। আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পানিবন্দি মানুষের সহায়তায় সার্বক্ষণিক কাজ করতে প্রস্তুত আছি।